শিরোনাম

South east bank ad

রংপুরে শহীদ কাদিরের জন্মভিটায় নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে নাশকতার চেষ্টা

 প্রকাশ: ০১ জানুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

সীমান্ত সাথী, (রংপুর):

রংপুরের বদরগঞ্জে বীর সেনা শহীদ লে. কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদিরের জন্ম ভিটায় নবনির্মিত স্মৃতি স্তম্ভ উদ্বোধনের আট দিন আগে ভাংচুর চালানো হয়েছে।

শুক্রবার মধ্যরাতের দুবৃর্ত্তরা নবনির্মিত ওই স্মৃতি স্তম্ভের সৌন্দর্য বর্ধনের অত্যাধুনিক চারটি বৈদ্যুতিক বাতি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় পুলিশের একটি দল আজ শনিবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য শহীদ লে. কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদিরের নামে নাটোরে ‘কাদিরাবাদ সেনানিবাসের নামকরণ করা হয়ছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের চিকলী নদীর তীরে ওই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন, আব্দুল কাদিরের পুত্র বিশিষ্ট সাংবাদিক নাদীম কাদির। আগামী ৮ জানুয়ারি এটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। কিন্তু এরমধ্যে দুবৃর্ত্তরা রাতের অন্ধকারে ভেতরে প্রবেশ করে স্মৃতিস্তম্ভের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য স্থাপন করা চারটি অত্যাধুনিক বাতি ভেঙ্গে নিয়ে যায়।

স্থানীয় ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দাবি শহীদ লে. কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদিরের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত ওই স্থাপনাটি নস্যাত করতে নাশকতা চালানো হয়েছে। স্মৃতিস্তম্ভটির পাহারাদার আব্দুস সাত্তার বলেন, “আমি দিনের বেলা ডিউটি করে সন্ধ্যায় বাসায় চলে আসি। বর্তমানে রাতে কেউ পাহারায় থাকেনা। এখন কে বা কারা চারটি লাইট ভেঙে নিয়ে গেছে।”

ওইদিন দুপুরে বদরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) প্রনয় কুমার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ প্রতিবেদককে বলেন, সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত থাকতে পারে তা জানার চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামের আবুল হোসেন মিয়ার সন্তান ছিলেন শহীদ লেফট্যানেন্ট কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদির। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তার নামেই নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসের নামকরণ করা হয়।

১৯২৯ সালের ২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন কর্নেল কাদির। ১৯৪৯ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি চট্রগ্রামের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ৭০ নম্বর সরকারি বাড়িতে পরিবারসহ বসবাস করতেন। পাকিস্তানি সেনারা জানতে পেরে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় তাঁকে। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন কর্নেল কাদির।

৩৬ বছর পর ২০০৭ সালে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে বাবার কবর খুঁজে পায় পুত্র সাংবাদিক নাদীম কাদির। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১১ সালে দেহাবশেষ তাঁর নামে করা নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুনরায় সমাহিত করা হয়।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর দেশের গর্বিত এই বীর সেনার জন্মভিটা বদরগঞ্জে তার নামে স্মৃতি কমপ্লেক্স ও চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন সাংবাদিক নাদীম কাদির।

বিশিষ্ট সাংবাদিক নাদীম কাদির বলেন, “আগামী ৮ জানুয়ারি আমার বাবার নামে এই স্মৃতি সৌধটি উদ্বোধনের তারিখ ঘোষনা করা হয়। কিন্তুর এর মধ্যেই নাশকতা চালাতে একটি মৌলবাদি চক্র এটি ভাঙচুর করে। এই চক্রটি উদ্দেশ্য নিয়েই অনেকগুলো বৈদ্যুতিক বাতি ভেঙে নিয়ে গেছে বলে আমার ধারণা।”

বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, “বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করতে একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় নেওয়া হবে।”

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: