জলাবদ্ধতা ও শিষ পোকার আক্রমণে ফসলে ক্ষতির শঙ্কা : কৃষি কর্মকর্তা
এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা)
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বরগুনা উপকূলে তিন দিনের টনাবর্ষনে আমন ধান ও খেসারি ডাল ক্ষেতে পোকার আক্রমণ বাড়ছে। এ কারনে কৃষি বিভাগের নির্ধারিত লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। অপরদিকে জাওয়াদের দমকা বাতাসে আমন ক্ষেতের ধান গাছগুলো হেলে পড়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলার আমন ও খেসারি ডালের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষককূল।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে- উপকূলীয় এ জেলায় চলতি বছরে ৯৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এদিকে ১৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে খেসারি ডালের আবাদ হয়েছে। তবে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন আমন ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়লেও তেমন কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে ডালের আবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের গ্রাম ঘুরে দেখা যায় তিন দিনের টানা ভারী বর্ষন ও দমকা বাতাসে আমন ধানগাছগুলো মাটিতে লুটে পড়েছে। নিচে লুটে পড়া গাছগুলোর নিচেই বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে পঁচন ধরতে শুরু করছে।
বদরখালী গ্রামের কৃষক মোশাররফ খান বলেন- বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়ার কারনে ক্ষেতের অনেক ধানগাছ পড়ে গেছে। আমার অর্ধেক ধান নষ্ট হয়ে যাবে। এমনিতেই আমরা কৃষি কাজ করে লোকসানে আছি। তবে এবার আমনের ছড়া দেখে লোকসানের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু আবার ঝড়-বৃষ্টির কারণে চাষাবাদের খরচের ধারদেনা কাটিয়ে উঠতে পারব না।
সদর উপজেলার খাজুরতলা গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন- তিনি দুই একর জমিতে আমন আবাদ করেন। এবার আমনের ফলন ভালো হওয়ার আশা ছিল। তবে বৃষ্টির কারণে তাঁর খেতে পানি জমায় সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
বরগুনা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান- ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে যে ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমন ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। তবে এ আবহাওয়ায় আমন ক্ষেতে শিষ পোকাড় আক্রমণ দেখা দিতে পারে। বৃষ্টির চেয়ে এ পোকার আক্রমণে আরও বেশি ক্ষতি হতে পারে।
এ বিষয়ে বরগুনা কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) এস এম বদরুল আলম বলেন- যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে আমন ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। তবে তিন দিনের বৃষ্টিতে খেসারি ডালের ক্ষেতগুলোতে পানি জমেছে, এ জলাবদ্ধতার কারনে ডালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।