ময়লার স্তুুপ সরিয়ে ৩৫ দোকানীর মুখে হাসি ফুটেছে
মোঃ জামাল হোসেন, (বেনাপোল) :
যশোরের নাভারন বাজার। বাজারের মধ্যে ছিল ময়লা ফেলার ভাগাড়। ময়লার স্তুুপ সরিয়ে সেখানে ফুটপাতের ৩৫ জন দোকানীর জন্য তৈরি করে দেওয়া হলো ৩৫টি দোকান ঘর। এই ৩৫টি দোকান বরাদ্দ পেয়েছে ফুটপাতের ৩৫ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। কোন দোকান ভাড়া লাগে না। মাত্র ১০ টাকা খাজনায় তারা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তারা দোকান পেয়ে খুব খুশি। ৩৫ জন ব্যবসায়ীর পরিবারের সকলের মুখে হাসি ফুটেছে। দোকানীদের পূর্নবাসন করায় পাল্টে গেছে তাদের জীবন চিত্র। আর এই সুযোগটি তৈরি করে দিয়েছেন যশোরের শার্শা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন।
নাভারন রেলবাজারের রুহুল আমীন (৫৫) বলেন, ফুটপাতে ছিলাম, এখন ঘর পাইছি। এই ব্যবসা থেকে ৮ জনের সংসার চলে। প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার টাকা বেচাকেনা হয়।
ত্রিমোহিনী শ্যামলাগাছি গ্রামের কামাল হোসেন (৩৮) বলেন, আমি আগে ফুটপাতে দোকানদারি করতাম। তখন অনেক ঝুটঝামেলা হতো। হাইওয়ে পুলিশ এসে আমাদের দোকান তুলে দিত। এখন ভাল আছি। কেউ ঝামেলা করে না।
ঝিকরগাছার কৃষ্ণনগর গ্রামের নুর ইসলাম (৫৮) বলেন, তিন বছর এখানে দোকানদারি করছি। চেয়ারম্যান ময়লার ভাগাড় পরিস্কার করে আমাদের বসার জায়গা তৈরি করে দিয়েছেন। ঘরভাড়া লাগেনা। ১০ টাকা খাজনা দেই। বেচাবিক্রি মোটামুটি ভাল। এক ছেলে, এক মেয়ে আর বউ নিয়ে ৪ জনের সংসার। খুবই ভাল আছি। ছেলেটার লেখাপড়া হলো না। মেয়েটা কৃষি ডিপ্লোমা পড়ছে।
নাভারন বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা মুরাদ হোসেন বলেন, নাভারন বাজারটি শার্শা উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। মনোরম ভাবে সাজানোর জন্য আমরা সবসময় কাজ করে যাচ্ছি। স্থানীয় এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের পরিকল্পনা ও উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জুর সার্বিক সহায়তায় আমরা কাজ গুলো বাস্তবায়ন করছি। ফুটপাত হকার মুক্ত করে তাদের ব্যবসায়ীক ভাবে পূর্নবাসন করা হয়েছে।
নাভারন চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সম্পাদক সালেহ আহম্মেদ মিন্টু বলেন, নাভারন বাজারের মাঝ দিয়ে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক চলে গেছে। এই সড়কের দুই ধারের ফুটপাত সব সময় থাকতো হকারদের দখলে। তাদেরকে মহাসড়কের পাশ থেকে সরিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে নেওয়ার কারনে আজ যানজট মুক্ত হয়েছে নাভারন বাজার। স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের সহায়তায় মাছ মাংশ ও কাঁচা বাজারে ড্রেন ও চলাচলের রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
শার্শা সদর ইউপির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, নাভারন বাজারের ইজারাদারসহ ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপেক্ষিতে বাজারের ময়লার ভাগাড় পরিস্কার করে সেখানে তাদের দোকান তৈরি করে দিয়েছি। স্থানীয় এমপি, উপজেলা পরিষদ ও আমার ব্যক্তিগত অনুদান থেকেই কাজটি করেছি। তাদের কাছ থেকে কোন ভাড়া পর্যন্ত আদায় করা হয় না। তারা দোকান পেয়ে খুব খুশি। ৩৫জন ব্যবসায়ীর পরিবারের সকলের মুখে হাসি ফুটেছে।