শিরোনাম

South east bank ad

আক্রোশের শিকার মোটর মেকানিকের পরিবার

 প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :

বগুড়া দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আলীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কোন কারণ ছাড়াই নুর আলম নামে এক মোটর মেকানিককে থানায় নিয়ে গিয়ে মারধর করার পর ৫০ হাজার টাকা নেবার পর আরও ২০ হাজার টাকা দেয়ার শর্তে ছেড়ে দেয়া হয়। নুর আলম বগুড়ার দুপচাচিয়া সদরের চকসুখানগাড়ী এলাকার মুনসুর আলীর ছেলে।

এ অভিযোগ দেয়ায় ওসি ক্ষিপ্ত হয়ে দুটি মামলা দায়ের করিয়েছেন নুর আলম ও তার ভাইসহ চাচার বিরুদ্ধে। এর একটি ভাঙচুর ও লুটপাটের, অপরটি ধর্ষণের।

ধর্ষণ মামলায় আসামী করা হয়েছে একই পরিবারের তিন সহোদর ভাই ও বাবা-ছেলেকে। ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায়ও আসামী করা হয়েছে তাদেরকেই। আর এই মামলায় তিন ভাই জেল হাজতে আছেন অপররা পালিয়ে বেড়চ্ছেন।

সোমবার দুপুরে নুর আলমের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা তার ২ শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী নুর আলম একজন দরিদ্র মোটর মেকানিক। দুঁপচাচিয়া সদরে বাসস্ট্যান্ডে বসে কাজ করেন। তার সামান্য আয় দিয়ে সংসার চলে। গত ২৯ আগস্ট দুপচাঁচিয়া থানার মোসাদ্দেক নামে এক এসআই এসে নুর আলমকে থানায় ওসির কাছে নিয়ে যান। সেখানে নুর আলমকে কোন কারণ ছাড়াই ওসি হাসান আলী গালিগালাজ ও মারধর করে এবং ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন।

নির্যাতন সইতে না পেরে নুর আলম তার ভাই ফরিদের মাধ্যমে ওসিকে ৫০ হাজার টাকা দেন এবং আরও ২০ হাজার টাকা কয়েকদিন পরে দেয়ার শর্তে ছেড়ে দেন। কয়েকদিন পর ওসি তার এসআইদের মাধ্যমে বাকী ২০ হাজার টাকা দিতে তাগাদা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে পুলিশের এমন ঘটনায় অতিষ্ট হয়ে প্রতিকার চেয়ে নুর আলম ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশের আইজি, ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

এ খবর পেয়ে ওসি নুর আলমকে অভিযোগ তুলে নিতে বলেন, অন্যথায় মাদকসহ নানা ধরনের মামলা দিয়ে জীবন শেষ করে দিবেন বলে হুমকি দেন। নুর আলম অভিযোগ তুলে না নেয়ায় প্রথমে ১১ অক্টোবর দুপচাঁচিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিনি ট্রাক মালিক সমিতির অফিস ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর এবং লুটপাটের একটি মামলা দায়ের করান নুর আলম ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে। মামলার বাদী করা হয় মিনি ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলুকে। মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করা করে অজ্ঞাতসহ ১৬ জনকে আসামী করা হয়।

এই মামলায় ১৯ অক্টোবর জামিন নিতে গেলে আদালত নুর আলম ও তার অপর ২ভাই ফরিদ উদ্দিন, নুরুল ইসলাম বাবুসহ ৫ জনের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠান। এদিকে একই দিন ১৯ অক্টোবর ওসি আরেকটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করান নুর আলমদের বিরুদ্ধে। এই মামলার বাদী করা হয় দুঁপচাচিয়ার সালমা বেগম নামে এক মহিলাকে। ধর্ষণ মামলায় আসামী করা হয় নুর আলম, তার দুই ভাই ফরিদ উদ্দিন ও নুরুল ইসলাম বাবু এবং নুর আলমের চাচা বেলাল হোসেন ও বেলাল হোসেনের ছেলে রুবেলসহ ৮ জনকে। ঘটনাস্থল দেখানো হয় বগুড়া সদরের চারমাথা এলাকায় একটি হোটেল কক্ষে। এই মামলায় গ্রেফতারের ভয়ে অন্য ৫ আসামী বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ১৯ অক্টোবর আমার স্বামী ও ২ দেবর এবং ভাসুর জামিন নিতে আদালতে যান। তাদের জামিন বাতিল হওয়ায় জেল হাজতে থাকাবস্থায় ওইদিনেই কিভাবে ধর্ষণ করলো তা বোধগম্য নয়। এতেই বোঝা যাচ্ছে ওসির আক্রোশের শিকার হয়েছি আমরা।

অভিযোগ সর্ম্পকে জানতে দুপচাঁচিয়া থানার ওসি হাসান আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, এরা কি কারণে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে তা আমার জানা নেই।

এদিকে ওসিসহ তিন এসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় দুপচাচিয়া-আদমদীঘি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো: নাজরান রউফকে। তিনি বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: