শিরোনাম

South east bank ad

হল বন্ধ রেখে ভর্তি পরীক্ষা, রাবির ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের আশঙ্কা

 প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হল বন্ধ রেখেই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ¯œাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কতৃপক্ষ। পরীক্ষার দিন যত ঘনিয়ে আসছে আবাসন সংকটের বিষয় ততই প্রকট আকার ধারণ করছে। একই সঙ্গে অভিভাবকদের মাঝে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। এমন সিদ্ধান্ত ভর্তি পরীক্ষার সামগ্রীক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষণœ হতে পারে বলে মনে করছেন জৈষ্ঠ অধ্যাপকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা বলছেন, ভর্তি পরীক্ষার সময় যে পরিমাণ মানুষের সমাগম হয় সেই তুলনায় রাজশাহীতে আবাসন ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বন্ধ রেখে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হলে আবাসন ব্যবস্থায় চরম মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রিক যে ভাবমূর্তি ছিল তা ক্ষুণœ হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন অন্তত ২৫ হাজার ভর্তিচ্ছুর আবাসনের ব্যবস্থা করা যাবে নগরের মেসগুলোতে। কিন্তু প্রতিদিন শুধু ভর্তিচ্ছু আছেন ৪৫ হাজারের মতো। সেইসঙ্গে রয়েছেন তাদের অভিভাবকরা। ফলে আবাসনের বড় একটা সংকট আগে থেকেই দেখা যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবার ৪ অক্টোবর ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্যদিয়ে শুরু হবে ভর্তিযুদ্ধ। প্রতিদিন তিন শিফটে ১৫ হাজার করে মোট ৪৫ হাজার ভর্তিচ্ছু পরীক্ষায় বসবে। ভর্তিচ্ছুদের সঙ্গে আসেন অনেক অভিভাবক। মেসগুলোর বাইরেও ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকদের রাখতে বিচ্ছিন্ন কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসন। তবে সেসব পদক্ষেপের ফলে আসলেই কতটা সংকট সমাধান হবে তা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইসতিয়াক আহমেদ। এবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে তার চাচাত বোন ও চাচা ঢাকা থেকে আসবেন। তাদের থাকার জন্য কয়েকদিন শহরের বিভিন্ন হোটেল খুঁজেও কোন রুম পাননি তিনি। এ বিষয়ে ইসতিয়াক বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে থাকি। হল খোলা থাকলে চাচা আমার সঙ্গে থাকতে পারত। আর বোনকে বান্ধবীর হলে রাখতে পারতাম কিন্তু এখন সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না। তাদের থাকায় জায়গা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

এ বিষয়ে মহানগর মেস মালিক সমিতির সভাপতি এনায়েতুর রহমান বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন ছাত্রাবাসে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। ছাত্রাবাসে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে সম্পূর্ণ ফ্রি রাখা হবে। তবে অভিভাবকদের থাকার জন্য অতিরিক্ত ফি প্রদান করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূর বলেন, রাজশাহী মহানগরীর হোটেলগুলোতে পাঁচ হাজারের মতো শিক্ষার্থী ও অবিভাবকের থাকার ব্যবস্থা করা যাবে। এর বাইরে শহরের স্কুল বা কলেজের হোস্টেলগুলো ব্যবহার করতে কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ বলেন, এবারের ভর্তি পরীক্ষার আয়োজনে শিক্ষার্থীদের আবাসনের ক্ষেত্রে একটি মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছি। ভর্তিচ্ছুদের জন্য রাজশাহী শহরে পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা নেই। এর আগে দেখেছি যে, বেশিরভাগ ভর্তিচ্ছু হলে থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সেখানে এবার সব হল বন্ধ। ফলে গাছতলায় ও রেলস্টেশনে হয়ত তাদের রাত্রীযাপন করতে দেখা যাবে। দেশের এত বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ভর্তিচ্ছুদের প্রতি সহমর্মীতা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে প্রশাসন। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাজনক।

ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক চৌধুরী মো.সরওয়ার জাহান বলেন, রাজশাহীর আবাসন ব্যবস্থা ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকদের জন্য অপর্যাপ্ত। এবার আবাসিক হল বন্ধ রেখে পরীক্ষার যে আয়োজন করা হয়েছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রিক যে ভাবমূর্তি ছিল সেটি ক্ষুণœ হবে। এটি ভর্তিচ্ছুদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল আচরণের পরিপন্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে শিক্ষার্থীরা যাতে মেসগুলোতে ফ্রি থাকতে পারে সেই ব্যবস্থা হয়েছে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: