ধানের সাথে বিষ মিশ্রিত করে নানা প্রজাতির পাখি হত্যা
নুর উদ্দিন সুমন, (হবিগঞ্জ) :
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে ধানের সাথে বিষ মিশ্রিত করে নানা প্রজাতির অর্ধশতাধিক পাখি হত্যা করেছে দৃস্কৃতিকারীরা।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার এলাকার প্রাইমারী স্কুল ও আবুল হোসেনর বাড়ির মধ্যবর্তী রাস্তায় বিষ মিশ্রিত ধান ফেলে রাখে দুষ্কৃতিকারীরা। এসব ধান খেয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মৃত্যু হয়। বিকেল সাড়ে ৫ টায় ওই এলাকায় মৃত পাখিগুলো দেখতে পান স্থানীয়রা। মৃত পাখি গুলো অনেকেই কুড়িয়ে কুড়িয়ে নিয়ে যায়। তবে কিছু মৃত পাখি উদ্ধার করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, প্রচণ্ড শীত থেকে বাচতে ও খাদ্যের সন্ধানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসব পাখি আসে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এসব পাখির অনেকগুলো আর ফিরে যেতে পারে না। নিষ্ঠুর দুষ্কৃতিকারীর হাতে মারা পড়ে। কিন্তু এসবের প্রতিরোধে কেউ এগিয়ে আসছে না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গভীর রাতে কিছু শিকারি পাখি নিধনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ও বিলের কাছে একধরনের কীটনাশক ছিটিয়ে দেন। ভোরে পাখি খাবারের খোঁজে বিলে নামে। তখন কীটনাশক খেয়ে তারা মারা যায়। পরে শিকারিরা সেগুলো কুড়িয়ে গলা কেটে বস্তায় ভরে স্থানীয় বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও লোকজনের কাছে বিক্রি করেন। যে পাখিরা শুধু জীবন ও খাদ্যের সন্ধানে আমাদের আঞ্চলে আসে, লোভের বশবর্তী হয়ে কিছু লোক সেই পাখিদেরই হত্যা করছে। পাখির প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। একশ্রেণির মানুষের রসনার তৃপ্তির জন্য পাখিদের এভাবে নিধন করা বর্বরতারই নামান্তর। আর এভাবে বিষ দিয়ে মারা পাখি কি আসলেই খাওয়ার উপযোগী? যাঁরা খাচ্ছেন, তাঁরা নিশ্চিতভাবেই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।
স্থানীয়রা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিককে জানান। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হন। তিনি বলেন- পাখিগুলো কীভাবে মারা গেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয়রা বলেন, যাঁরা পাখি নিধন করছেন, তাঁদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। দিতে হবে কঠোর শাস্তি। আমরা চাই পাখি হত্যা বন্ধ করতে বন বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রশাসন ভূমিকা পালন করবে।