শিরোনাম

South east bank ad

টাঙ্গাইলে বন উজার করে ৩৯ হাজার একর বনভূমি বেদখলে

 প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মো.আবু জুবায়ের উজ্জল, টাঙ্গাইল:

টাঙ্গাইলে মধুপুর গড়সহ সখীপুর ও ঘাটাইল ও অন্যান্য রেঞ্জের অধীন প্রায় ৩৯ হাজার বনভূমি বেদখল হয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব ভূমি বেদখলে থাকলেও ভূমি উদ্ধার তৎপর নয় জেলা বনবিভাগ। অভিযোগ আছে, স্থানীয়রা বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে বন উজার করে সেখানে সামাজিক বনায়নের নামে কৃষিকাজ, স্থায়ী আধা-পাকা স্থাপনা, লেয়ার ফার্মসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। এক্ষেত্রে দায়সারাভাবে বনবিভাগ ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা অনেকেই রয়েছেন ধরাছোয়ার বাইরে। ফলে দিনদিন বনভূমির আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া গোপনে বন থেকে গজারী ও শাল গাছ কেটে নেয়া হচ্ছে। জেলা বনবিভাগের দাবী, অবৈধভাবে জবর দখলকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলাসহ আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

জেলা বন বিভাগ সুত্রে জানা যায়, জেলায় ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৬ একর বনভূমি রয়েছে। এরমধ্যে মির্জাপুর উপজেলায় ৭ হাজার ৫৭৬, কালিহাতী উপজেলায় ৬৫৯, ঘাটাইলে ২১ হাজার ৮৫৫, সখীপুরে ৪৭ হাজার ২২০ ও মধুপুর গড়ে ৪৫ হাজার ৫৬৫ একর বন ভূমির জায়গা রয়েছে। এসব বনভূমি দেখভালে রয়েছে ৯টি রেঞ্জে অফিস। তবে এসব বনবিভাগের জায়গা থেকে ৩৮ হাজার ৬৬৬ একর জায়গা বেদখল হয়ে আছে। ফলে এসব বেদখল জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়া দোখলা রেঞ্জের অধীন গত দুই বছরে ৯৩৩ একর বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে।

সরেজমিনে জানা যায়, সখীপুর উপজেলায় চারটি রেঞ্জের ১৪ টি বিটের আওতাধীন সংরক্ষিত শাল গজারি বনের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে স্থায়ী বসবাস করছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ ।
এছাড়া ও বহেড়াতৈল রেঞ্জের ডিবি গজারিয়া বিটের দেওবাড়ী মৌজায় বনের ভিতর অবৈধভাবে গড়ে তোলা বাড়ীর মালিক ইয়ার মাহমুদ জানান,আমার মত আর ও অনেকেই এভাবে বসতভিটা নির্মান করেছে ।

এদিকে হাতিবান্ধা ইউনিয়নে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মো.দুলাল হোসেন জানান কাজিপাড়া গাবলের বাজারে শুধু আমার চারটি টিনের ঘর দেখলেন আর মানুষের ঘর দেখলেন না । এখানে প্রায় ৯০ ভাগ মানুষের ঘরবাড়ী সহ দোকান পাট গড়ে তুলেছে । আমি মেম্বার বলে আগে আমার কথা আসে ।

মধুপুর গড়ের আদিবাসী শ্যামল মানখিন বলেন, আদিবাসীরা বিট্রিশ আমল থেকে এই বনভূমিতে বসবাসের পাশাপাশি বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। ফলে সেই আমল থেকে আদিবাসীদের জায়গার উপর রাজা জমিদারদের পত্তন দিতেন। তাদের জায়গা এসএ খতিয়ানসহ আরএস খতিয়ান থাকার পর ও খাজনা খারিজ হচ্ছে না। বনবিভাগের সীমানার মধ্যে পড়ার কারনে বন কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে উচ্ছেদ করার জন্য আসে।

দোখলা রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ বলেন, দোখলা রেঞ্জে ১৮ হাজার ৮৩৪ একর বনভূমির মধ্য ৬ হাজার ৯৫৭ একর বহু বছর আগে দখল হয়ে গেছে । বেহাত বনভূমি উদ্ধারে উচ্ছেদ মোকদ্দমার প্রস্তাব দায়ের করা হয়েছে । দোখলা রেঞ্জে শুধুমাত্র ১০ জন ব্যক্তির দখলেই এক হাজার একরের বেশি বনভূমি । মধুপুর বনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে জবর দখল উচ্ছেদ করে বনায়নের বিকল্প নেই । বনভূমি উদ্ধার করে বাগান সৃজন কার্যক্রম চলছে । বনভূমিতে হরেক প্রজাতির চারাগাছ রোপনের পাশাপাশি বন্য পশুপাখির খাদ্য প্রাকৃতিকভাবে যোগান দিতে পশুখাদ্য বাগান সৃজিত হয়েছে।

টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক জানান, বনভূমির জমি উদ্ধারের জন্য সম্প্রতি ২ হাজারের বেশী উচ্ছেদ মামলা করা হয়েছে । এছাড়াও বন কর্মকর্তারা দখলকারীদের চিহ্নিত করে তালিকা প্রনয়ন করছে । তিনি আরও জানান গারো সম্প্রদায়ের লোক সেখানে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলায় তারা এখন তাদের বাসস্থানের দাবী করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে তারা আরও মজবুতভাবে বসতে চায় । এদের উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাব চলে গেলে উচ্ছেদ কাজ শুরু করা হবে ।

এবিষয় টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ড.মো.আতাউল গনি বলেন করোনাকালীন সময়ে উচ্ছেদ অভিযান কিছুটা ভাটা পড়েছিল তবে আমাদের উচ্ছেদ অভিযান নিয়মিত চলমান আছে । করোনার প্রাদুভাব শেষ হলে কঠোরভাবে উচ্ছেদ অভিযান চলবে ।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: