বগুড়ায় বন্যায় ৪৮৪ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :
গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা ও বাঙ্গালী নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৬৪ সে: মি: উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার ৪৮৪ হেক্টর ফসলী জমি বন্যাঢ তলিতে গেছে।
এদিকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ইঁদুরের গর্ত দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে পানি বের হচ্ছে। পানির চাপ আরো বাড়লে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ভয়ের কিছু নেই। আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে।
ধুনটের ভান্ডার বাড়ি, সারিয়াকান্দির কামালপুর, কুতুবপুর, চন্দনবাইশা এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঘুরে দেখা যায়, কামালপুর এবং চন্দনবাইশা এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নিচ দিয়ে পানি চুইছে। সেখানে বাঁধের পশ্চিম পার্শ্বে বালির বস্তা দিয়ে পানি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বড় ধরনের ধস ঠেকানোর জন্য বাঁধের ওপর রাখা হয়েছে সারি সারি বালির বস্তা।
ইতিমধ্যে জেলার পাঁচ উপজেলা বন্যার পানিতে ৪৮৪ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। তবে দ্রুত পানি নেমে গেলে ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছেন বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দুলাল হোসেন। এই পাঁচ উপজেলা হলো সারিয়াকান্দি, ধুনট, সোনাতলা, গাবতলী ও শাজাহানপুর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দুলাল হোসেন বলেন, জেলায় মোট ৪৩০ হেক্টর রোপা আমন, ২২ হেক্টর শাকসবজি, ৩ হেক্টর পাট, ১৫ হেক্টর বীজতলা (রোপা-আমন), ১০ হেক্টর মাসকালাই ও ৪ হেক্টর আখ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, বন্যায় উপজেলার ৬৮টি গ্রামের ১২ হাজার ৭শ পরিবারের ৫০ হাজার ৮শ মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে জিআরের ৫২ মে: টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে ১৩৫ হেক্টর রোপা আমান, ১২ হেক্টর বীজতলা, ১০ হেক্টর সবজি ২০ হেক্টর জমির মাসকালাইসহ সর্বমোট ১৭৭ হেক্টর ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম কবির জানান, ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায় , ২টি উচ্চ বিদ্যালয় ১টি মাদ্রাসায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও বন্যায় ৪৪টি পুকুরের ১০ মে; টন মাছ বন্যায় ভেসে গেছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, যমুনার পানি বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হলেও ভয়ের কিছু নেই। বাঁধে বসতি থাকায় কিছু জায়গায় ইদুরের গর্ত থাকে। সেই গর্ত দিয়ে পানি চুইয়ে পশ্চিম পাড়ে আসলেও সমস্যা নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল প্রস্তুতি আছে।