আজও খোলেনি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা) :
সারা দেশের ন্যায় বরগুনার কোমলমতি শিশুরা মেতে উঠেছে নানা ধরনের অনলাইন গেমস ও ব্যবসায়। যে শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আজ সেই শিক্ষার মেরুদণ্ডহীনতায় ভুগছে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী। একটি মাত্র রোগ বিশ্ববাসীকে দমিয়ে রেখেছে। দমিয়ে রেখেছে ১৭ মাস ধরে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
মহামান্য হাইকোর্ট থেকে বাংলাদেশে চলমান অনলাইনে পাবজি ও ফ্রী ফায়ার গেমস্ সহ নানাবিধ ধ্বংসের কারণ এমন সকল গেমস ও ব্যবসা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে আগামী তিন মাসের জন্য। তবুও কোমলমতি শিশুরা যেন এমন মারাত্মক মেধাশূন্য গেমসটিকে ভুলতে নারাজ।
নিরবে নিস্তব্ধ গেমস খেলার জন্য বিভিন্ন পার্ক ব্যবহার করছে। খোয়াচ্ছে নিজের সবটুকু মেধা ও মননকে। ফলে ভুগছে মেরুদণ্ডহীন শিক্ষা নিয়ে ও নানা ধরনের জটিল রোগে। এসব মারাত্মক গেমস্ এর কারণে খুন হতে হয়েছে বন্ধুর হাতে বন্ধুকে।
বরগুনার পুলিশ সুপার মুহম্মদ জাহাঙ্গির মল্লিক বিষয়টি নিজেই দেখছেন এবং বিভিন্ন পার্ক ও আড্ডাখানায় গিয়ে শিশুদের হাতের মোবাইল ফোনটি চেক করে অভিভাবককে ডেকে মোবাইল ব্যবহার না করা শর্তে ছেড়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন- বিষয়টি কেবল পুলিশ নয় বরং প্রতিটি পরিবারের খেয়াল রাখা উচিত। তার কোমলমতি শিশুটি কি করছে কোথায় যাচ্ছে এবং কোন বন্ধুটির সাথে মিশছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক পথে এগোতে পরিবার কি প্রথম ভূমিকা নিতে হবে।
অন্যদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদান করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে। অথচ বাংলাদেশের সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরসমূহ সহ সকল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, পার্ক খুলে দেয়া হলেও আজও খোলা হয়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এমনসব সিদ্ধান্তহীনতার কারণে গরীব ও মেধাবী হাজার হাজার শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে ঝরে পড়েছে। গ্রামের স্কুল মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রীর বাল্যবিয়ের শিকার হতে হয়েছে।অস্বচ্ছল পরিবারের অনেক ছাত্র লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে নানান কাজে যোগ দিয়ে বাবা-মাকে আর্থিক সহায়তা করছেন। অন্যদিকে লাখ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী ঘরে বসে থেকে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গায়ে আজ শ্যাওলা ধরেছে, মাঠে আগাছা ঘাস গজিয়েছে। সরকারের দায়িত্বশীলরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য নানাবিধ ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রতিটি শিক্ষার্থীর একটিই চাওয়া; এখন আর বন্ধ নয় বরং খুলে দেয়া হোক দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিকশিত হোক মেধার মূল চালিকাশক্তি। অটো পাস কিংবা অটোপ্রমোশন নয় বরং পরীক্ষা দিয়েই করতে চান মেধার সর্বোচ্চ যাচাই। তবেই সঠিক শিক্ষার ধারা অব্যাহত থাকবে। সঠিক মেধার উপহার পাবে বাংলাদেশ তথা বিশ্ব।