পাওনা টাকা চাওয়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা অভিযোগ
এস.এম রফিক, (দুর্গাপুর) :
নেত্রকোণার দুর্গাপুরে ধার নেয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় স্ত্রী কর্তৃক যৌন হয়রানির অভিযোগ দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর অপচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিরিশিরি ইউনিয়নের দাখিনাইল গ্রামের শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্গাপুর থানায় এ মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করা হয়। ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম শনিবার(২১ আগষ্ট) স্থানীয় সাংবাদিকদের ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগের বিষয়টি অবহিত করেণ। সে দাখিনাইল গ্রামের মোঃ তোতা মিয়ার ছেলে। পাওনা টাকার ঘটনায় গ্রাম্য সালিসের ডাকে সাড়া না দেয়ায় শফিকুল ইসলাম গত ১৮ আগস্ট আঃ সাত্তারকে আসামী করে অভিযোগ দাখিল করেণ বলেও জানান তিনি।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে,ঐ ইউনিয়নের দাখিনাইল গ্রামের মৃত আঃ রশিদের পুত্র আঃ মালেক ওরফে সাত্তার (৪২) একই গ্রামের প্রতিবেশী সম্পর্কে ভাতিজা শফিকুল ইসলামের কাছ থেকে তিন ধাপে ২লা লক্ষ ৩০ হাজার টাকা নেন। প্রথম ধাপের ১লাখ টাকা ১০ কাঠা জমির বন্ধকীর উপর দেয়া হয় বিগত ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর । এক বছর পর ২০২০ সালের ১০ মার্চে আরো ১০ কাঠা জমি বন্ধকীর উপর ১লক্ষ টাকা দেয়া হয় সাত্তারকে। পরবর্তী সময়ে নিজ বাসায় কাপড়ের ব্যবসার জন্য ৩০ হাজার টাকা ধার নেন আঃ সাত্তার। সম্পর্কে চাচা আর ভাতিজা হলেও দ-ুজনের ঘনিষ্টতা ছিল অভূতপূর্ব। টাকা নেয়ার পরে বন্ধকী জমির ধান ঠিকমতো পরিশোধ না করায় দু-জনের মধ্যে দূরত্ব তৈরী হতে থাকে। এক পর্যায়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দাখিনাইল বাজারে মনোহারি দোকানী মোঃ রফিকুল ইসলামের দোকানে কতক ব্যক্তির উপস্থিতিতে টাকা চাইলে আঃ সাত্তার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রুহু’র নিকট জমি বিক্রির টাকা নিয়ে পাওনা মিটিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন। গত জুলাই মাসের ২৫ তারিখ দাখিনাইল বাজারের দোকানী সাইদুল ইসলামের দোকানে পুণরায় পাওনা টাকা চাইলে আঃ সাত্তার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
পরে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করলে তিনি অভিযুক্ত আব্দুস সাত্তারকে ডেকে নেন। বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে উভয় পরিবারের তিন জনকে দায়িত্ব প্রদান করেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে আঃ সাত্তার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাদ্দাম আকঞ্জিকে বিষয়টি অবহিত করেন। তিনি পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে সম্প্রতি নিজ বাসায় উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে গ্রাম্য সালিস বসান। সেখানে দীর্ঘ আলোচনার পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাটি অবগত থাকার কারণে পুণরায় গত বুধবার ১৮ আগস্ট ইউনিয়র পরিষদ কার্যালয়ে গ্রাম্য সালিশ বসলে,সেখানে উপস্থিত হননি আব্দুস সাত্তার। তখন উপস্থিত স্থানীয় ইউপি চেয়াম্যান ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলামকে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন।
যৌন হয়রানীর অভিযোগ দিয়ে পাওনা টাকার ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠা আঃ সাত্তারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শফিকুল ইসলামের নিকট থেকে কোন টাকা নেইনি। আমি কেন তাঁকে টাকা দিতে যাবো। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রুহু জানান, শফিকুলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত আঃ সাত্তার ইউনিয়ন পরিষদে আসেননি। কেন আসেনি জানা নেই। পরে শুনেছি ওরা থানায় অভিযোগ দাখিল করেছে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান (সাদ্দাম আকঞ্জি) জানান, পাওনা টাকার ঘটনায় আমার বাসায় দীর্ঘ ২ ঘন্টার একটি সালিস হয়েছিল। কিন্তু ঘটনাটি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে সূরাহা করার তারিখ নির্ধারণ করেছিলাম। সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম। তবে অভিযুক্ত আঃ সাত্তার সেখানে যাননি, তবে বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নুর-এ আলম জানান, দুই পক্ষেরই অভিযোগ পেয়েছি। শুনেছি বিষয়টি ফয়সালার জন্য আবারো বৈঠক বসবে,তাতে কোন সুরাহা না হলে অভিযোগ আমলে নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।