বেতাগীতে জোরপূর্বক দোকান ও বসতঘর দখলের চেষ্টা
এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা) :
বরগুনার বেতাগী উপজেলার বুড়া মজুমদার ইউনিয়নের কাউনিয়া বাজারের মোঃ কিসলু আকনের দোকান ও বসতঘরে জোরপূর্বক দখলের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (১৬ আগস্ট) সকাল দশটার দিকে কাউনিয়া বাজারে অবস্থিত কিসলুর নিজস্ব বসতঘর ও সামনে থাকা তিনটি দোকান ঘরে ৩০ থেকে ৩৫ জন পুরুষ ও মহিলা বন্ধ দোকানের তালা ভেঙে ও খোলা দোকানের শাটার আটকে তালাবদ্ধ করে জায়গা দখল করার চেষ্টা চালান। এ সময় ওই একই স্থানে দোকান ঘরের পেছনে থাকা কিসলুর বসত ঘর দখলের চেষ্টা চালানো হয়।
দোতলা বিশিষ্ট ওই ভবনটির দ্বিতীয় তলাতে বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা চালু রয়েছে। এমন ঘটনার পর থেকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার ম্যানেজার মোঃ আবু হাসান জানিয়েছেন এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আগামীকাল সশরীরে হাজির হয়ে বেতাগী থানায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করব।
কাউনিয়া বাজারের গাজী বাড়ির মেয়ে মনি ও তার অন্যান্য বোনদের সহযোগিতায় ঘর দখল করেছে। দখলদার মনি এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন কিসলুর সাথে আমাদের একটি বায়না রেজিস্ট্রি হয়েছে। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসের ১৯ তারিখে এ বায়না রেজিস্ট্রি হয়। ওই সময় ২ লক্ষ টাকা দিলেও বায়না রেজিস্ট্রিতে চার লক্ষ টাকা লিখিয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে কোনো দলিল হয়নি বলে জানিয়েছে দখলদার মনি। তিনি আরো বলেন এ বিষয়ে একটি বরগুনা আদালতে মামলা হয়েছিল। যেখানে আমরা রায় পেয়েছি। পরবর্তীতে কিসলু হাইকোর্টে একটি আপিল করেন। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিশী বৈঠক হয়েছে। এ বিষয়ে আদালত কিংবা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে মনি বলেন এ পর্যন্ত আমরা কখনোই কারো দ্বারস্থ হয়নি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, প্রকাশ্য দিবালোকে ভাড়াটিয়া চারটি দোকান ঘরের মালামাল লুট করে মনি বেগম ও তার অন্যান্য সহযোগিরা নিয়ে গেছেন। এতে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান জমির মালিক কিসলু আকন। এ ঘটনায় বেতাগী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং দখলকৃত দোকানঘর পুলিশ তালাবদ্ধ করে উভয় পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে থানায় হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। সেইসাথে তালাবদ্ধ ঘরগুলোর চাবি পুলিশ হেফাজতে নিয়ে নেন।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী কিসলু ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেন,
হঠাৎ করে সকালবেলা বাসা থেকে বের হয়ে দেখি ৩০ থেকে ৩৫ জন পুরুষ ও মহিলা মিলে আমার ভাড়াকৃত দোকান ঘর দখল নিচ্ছে। সেই সাথে আমার বসত ঘরে এসে ভাঙচুর চালায়। তবে উপরে থাকা ব্যাংকে হামলা না চালানোর অনুরোধ করি। পরে ব্যাংকটিতে তারা হামলা চালায়নি। আমার বসত ঘরে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ভাড়াকৃত দোকানঘরে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিজের দোকান এর সকল মালামাল মনি ও তার বোনেরা লুট করে নিয়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি, তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।