মহাদেবপুরে ১৮০ কোটি টাকার ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা
আব্দুল্লাহ হেল বাকী, (নওগাঁ) :
নওগাঁর মহাদেবপুরে আউশ ধানে ভরে গেছে মাঠ। উপজেলায় ১০ টি ইউনিয়নে দিগন্তজোড়া মাঠ আউশ ধানের সোনালি রঙে ভরে উঠেছে। চলতি মৌসুমে ধানের ভালো ফলনের আশা করছেন চাষিরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোনো বিপর্যয় না ঘটলে কৃষকের বাড়ির আঙিনা ভরে উঠবে সোনালি ধানের হাসিতে। আগামী পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হবে। নতুন ধান উঠবে কৃষকের গোলায়। এ জন্য গৃহস্থ আর কৃষাণ-কৃষাণিরা গোলা, খলা ও আঙিনা পরিষ্কার করায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মহাদেবপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার সদর, এনায়েতপুর, রাইগাঁ, হাতুর, চাঁন্দাশ, খাজুর, উত্তরগ্রাম, ভীমপুর, চেরাগপুর ও সফাপুর এই ১০ টি ইউনিয়নের ১৩ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৭০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। এদিকে বর্তমানে ধানের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় যার আনুমানিক বাজারমূল্য হবে প্রায় ১৮০ কোটি টাকা। তাই শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর গ্রামের কৃষক ফজলুর হক বলেন, আউশ চাষ প্রকৃতিনির্ভর এবং এ সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এ কারণে সেচ খরচ কম লাগে। গত বছর চার বিঘা ধান লাগিয়েছিলাম। প্রতি বিঘায় ১৭ মণ করে ধান উৎপাদন হয়। তবে গত ইরি-বোরো ধানের কাটা মাড়াইয়ের শুরু থেকে প্রকারভেদে ৯০০ থেকে ১ হাজার ৮০ টাকা দরে প্রতি মণ ধান কেনাবেচা হয়েছে। বোরো ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় এ বছর ছয় বিঘা আউশ লাগিয়েছি। সার-কীটনাশকের প্রয়োজন খুবই কম হয়। ফলে তুলনামূলক খরচের চেয়ে অধিক লাভজনক এই ফসল।
উপজেলার চাঁন্দাশ এলাকার কৃষক সুশান্ত দাস, কবির ইসলাম ও সরাফত হোসেন বলেন, ক্ষেতে চলতি মৌসুমে রোগ-বালাই ও পোকামাকড় আক্রমণ করতে পারেনি। তারা অধিক ফলনের সম্ভাবনা দ্বারপ্রান্তে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে। এবারও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ফলন বেশি হবে বলে আশা করছেন তারা।
এ বিষয়ে মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুন চন্দ্র রায় বলেন, আউশ চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে ১ হাজার ৬০০ জন কৃষকের প্রত্যেককে পাঁচ কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার সরবরাহ করেছে।