‘নদী ভাইঙ্গে নিতেছে, কই যামু আমরা’
সাঈদ আহম্মেদ সাবাব, (শেরপুর) :
“নদী সব ভাইঙ্গে নিয়ে যাইতেছে, যামু কই আমরা। নদীডা আগে জামালপুরের পাতাইল্লার পাশে ছিল। এহন মুখ ঘুইরা আমগোর চরে আইয়া পড়ছে। আমার দুই একর জমি ভাইঙ্গে নদীত গেছে গা। বউ-পুলাপাইন নিয়া কি কইরা খামু জ্বালাই আছি” কথাগুলো বলছিল শেরপুরের চরপক্ষিমারী ইউনিয়নের চুনিয়ারচরের বাসিন্দা মুখলেছুর রহমান। ভাগলগড়ের আব্দুর রহিম বলেন, আমাদের পাশ্বে নদী ভাঙ্গতাছে, কারণ জামালপুরের পাশ্বে নদীতে বাধ দিয়েছে। তাই এহন নদী ভেঙ্গে ভেঙ্গে আমাগোরে দেহি আইতাছে। আমাগোর মসজিদ, স্কুল বাড়ী সবই এহন নদীয়ে নিযে যাবোগা। এহন আমরা কি করুম। কেবল মুখলেছুর বা আব্দুর রহিমই নয় এমন বহু মানুষের ফসলি জমি পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে চলে গেছে।
এ বছরও বর্ষার শুরুতেই শেরপুর সদর উপজেলার চরাঞ্চলের বুক চিরে বয়ে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে অন্তত: ছয় গ্রামের ফসলি জমি, মসজিদ ও বাড়িঘর। এর দুই পাশ্বে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ না থাকায় প্রতি বছরই চলে আসছে নদী ভাঙ্গন। ভাঙনরোধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভাঙন আরও বড় আকার ধারণ করার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
ইতিমধ্যে শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের চুনিয়ারচর, ভাগলগড়, জঙ্গলদি, বেপারীপাড়া, ডাকপাড়া, কামারেরচর ইউনিয়নের ৬নং চরসহ ৬টি গ্রামের অনেকেই তাদের বাড়ি-ঘর সরিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। নদীভাঙন অব্যাহত থাকলে চুনিয়ারচর গ্রামের ৩টি মসজিদ ও মাদ্রাসা নদী গর্ভে চলে যাবে বলে আশংকা করছেন গ্রামবাসীরা।
চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আকবর আলী জানান, নদী ভেঙ্গে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা নদী গর্ভে চলে গেছে। এখন অসহায় এলাকাবাসীকে সরকারীভাবে ব্যবস্থা না করলে, ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো যাবে না। আমি সরকারের কাছে দাবী জানাই, এখানে ভাঙ্গন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ বলেন, আমি ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছি। দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করে এখানে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলেছি। আমি নিজেও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।