বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তীর ১৭ বছর
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম এর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ১৭ বছরে পদার্পণ আজ। সুদীপ চক্রবর্ত্তীর জন্ম ১৯৭৫ সালের ১ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ শহরে। শান্তি-শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখায় তিনি একজন অগ্রসৈনিক। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অভিজ্ঞতায় জীবনের স্বরূপ নতুন করে অন্বেষণ করতে শিখেছেন। এআইজি সুনন্দা রাায় সুদীপ চক্রবর্ত্তীর সহধর্মীনী। তারা দুজনেই চব্বিশতম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা। আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক এই পুলিশ কর্মকর্তার পেশাজীবন ও ব্যক্তিজীবন অনেকের জন্যই হতে পারে অনুকরণীয় আদর্শ।ডিসি গুলশান সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী একজন লেখক ও কবি। তাঁর লেখালেখির হাত সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে। এবার অমর একুশে বইমেলা ২০২১ এ প্রকাশিত হলো সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর কাব্যগ্রন্থ “নিঃশব্দ নিনাদ”। অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী তার এই বইটি প্রকাশ করেছে। এর আগে একুশে বইমেলা ২০২০ এ প্রকাশিত হয় তাঁর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘নিমগ্ন নির্জন’। সেবার কবিতার বইটির মোড়ক উন্মোচন করেছিলেন ডিএমপি কমিশনার। বইটি প্রথম দিনেই প্রথম মুদ্রণ শেষ হয়ে যায়। এরপরও গোটা মেলার অন্যতম আলোচিত বই ছিল এটি।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ১৭ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম এর ফেসবুক স্টাটাসটি পাঠকের উদ্দেশ্যে হুবহু তুলে ধরা হলো;
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ১৭ বছরে পদার্পণ "হে বিধাতা,দাও দাও মোদের গৌরব দাওনি:সংকোচে মস্তক তুলিতে দাও" -০২ জুলাই ২০০৫, ২৪তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের গর্বিত সদস্য হিসেবে ক্যাডার সার্ভিসে যোগদান করেছিলাম মনের মাঝে চাপা উত্তেজনা, আনন্দ, কৌতূহল নিয়ে।ভীষণ আবেগে নিমজ্জিত ছিলাম দেশ ও সমাজের জন্য কাঙ্খিত পরিবর্তন সূচনার প্রত্যয়ে। চাকুরীর ১৬ বছর চেষ্টা করেছি নিজ স্বার্থপরতা ভুলে ক্ষুদ্র সামর্থ্যানুযায়ী সবার পাশে সর্বস্ব উজাড় করে দাঁড়াতে। মেধা, মনন, মানবিকতা, নিষ্ঠা ও নৈতিকতার সমন্বয়ে নিজ বিবেক জাগ্রত করে মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে সর্বদা ব্রতী ছিলাম। জননিরাপত্তা বিধান, জন-সম্পৃক্ত পুলিশী ব্যবস্থা প্রণয়ন, সুশাসন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার রক্ষার্থে বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালনে সদা সচেষ্ট থেকেছি। সম্মানিত সেবাপ্রত্যাশী, সহকর্মী, গণমাধ্যম কর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও স্টেকহোল্ডাররাই এর প্রকৃত মূল্যায়ন করতে পারবেন। ১৬ বছরের চাকুরী জীবনে শ্রদ্ধেয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুপ্রিয় ব্যাচমেট, সহকর্মী, পরিবারের সদস্যবৃন্দ, বন্ধুবান্ধব, শুভানুধ্যায়ীদের নিকট হতে যে ধরণের আন্তরিকতা, সহযোগিতা, অনুপ্রেরণা, সুপরামর্শ ও সহমর্মিতা পেয়েছি তাই চলার পথের একান্ত পাথেয়। কিছু প্রাপ্তি, স্বীকৃতি সবসময় এগিয়ে যাবার প্রেরণা যোগায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট হতে পুলিশ সার্ভিসে অতীব মর্যাদাসম্পন্ন বিপিএম পদক অর্জন, লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১ম স্থান অধিকার করে রেক্টরস মেডেল প্রাপ্তি, ডিএমপির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডিসি(হেডকোয়ার্টার্স) পদে দায়িত্ব পালন, এক নাগাড়ে ৩ বছর ৪ মাস মাননীয় আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম(বার) স্যার ডিএমপি কমিশনার থাকাকালীন তাঁর স্পেশাল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো:আছাদুজ্জামান মিয়া ডিএমপি কমিশনার থাকাকালীন ৩ বছর ৩ মাস তাঁর স্পেশাল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন, সর্বোপরি ডিএমপির স্পর্শকাতর ও অতীব গুরুত্বপূর্ণ ডিসি(গুলশান) হিসেবে দায়িত্ব পালন পেশাগত জীবনে অনন্য সংযোজন হয়েই থাকবে। সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ও করোনা অতিমারিতে সম্মুখযোদ্ধার দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে পেশাগত জীবনে বিরল অভিজ্ঞতা অনুভূত হয়েছে। পেশাগত পরিধির বাইরে "নিরন্তর নির্বাসন", "নীলিমায় বালিহাঁস", "নিমগ্ন নির্জন" ও "নি:শব্দ নিনাদ" এই চারটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।সম্মানিত নাগরিকদের মানবিক মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে সবসময় মাটিতে পদযুগল রেখেই চলতে শিখেছি। সকল বাধা বিপত্তি পেরিয়ে নি:সংকোচে যেন মাথা তুলতে পারি।