কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে চলছে মাছ নিধন
মো.আবু জুবায়ের উজ্জল (টাঙ্গাইল):
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে কারেন্ট জাল দিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে ছোট ছোট মাছ নিধন। উপজেলা বিভিন্ন নদ-নদী বা ডুবাতে প্রতিনিয়তই ব্যবহার করা হচ্ছে কারেন্ট জাল নামের বিশেষ এক ধরনের ফাঁদ। যে ফাঁদে নির্বিচারে মারা পড়ছে পোনাসহ সব ধরনের মাছ। যার ফলে মাছের সংকটে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়নের হাসড়া গ্রামের মাছ শিকারী আশরাফুল এবং আব্দুল কাদের জানান, তাঁরা এ বর্ষায়ই প্রথম কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন। একেকটি জাল দাম পড়ে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। সহজে মাছ ধরা পড়ে বলে এতে আয় বেশি, অন্য দিকে পরিশ্রমও কম। গত এক বছর আগেও এই 'কারেন্ট জালে' প্রথম বছরে অনেক মাছ পাইছি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কোকডহরা ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামে লাঙ্গুলিয়া নদীতে কারেন্ট জাল থেকে মাছ ধরছেন বাদশা মিঞা। জালের এক মাথায় (প্রান্তে) পাঁড় ঘেঁষে বাশের খুটিতে পুরাতন কাপড় বেধে লম্বা-লম্বি বাঁধ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে মাছ যেনো জালে না ঢুকে পার হয়ে যেতে না পারে। কি কি মাছ ধরেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এহন নদীতে পানি নাই বৃষ্টির পানি, ছোট পুটি, সিলভারের পোনা, ছোট টেংরা, শিং মাছ এগুলা ধরা পড়তাছে, কাঁকড়া, পানি আওয়া শুরু হইলে ছোট-বড় সকল মাছই এই জালে আটকে।
চায়না সুতায় দেশীয় ভাবে তৈরী এ জাল দেড় থেকে আড়াই ফুট এক প্রান্তে ৭ ফুট গোলাকার, বাকিটা চার কোণা, জাল ভাঁজ করে গুটিয়ে রাখা ও সহজে বহন করা যায়। চিকন এক ধরণের লোহার শলাকা গোল করে তিন-চার ফুট পরপর বসিয়ে বাহিরের দিক থেকে জাল লাগিয়ে ভিতরেও একটি জাল বিশেষ কায়দায় লাগানে যা ধীরে ধীরে শেষ প্রান্তে সংকুচিত, পুরো ফাঁকা করে দুই মুখ খোলা করে তৈরী। জাল পাঁতার সময় যে দিকে মাছের চলাফেরা বেশি সেদিকটা খোলা রেখে অপর মুখ (প্রান্ত) রশ্মি দিয়ে বেধে আটকে দেয়া হয়। জালের ভিতরে মাছ চলাচল করতে পারার কারণে তাজা থাকে। আকার ভেদে ত্রিশ ফুট মাপের জাল আড়াই হাজার টাকা, পঞ্চাশ ফুট মাপের জাল সাড়ে তিন হাজার টাকা ও আশি ফুট মাপের জাল দশ হাজার টাকায় খুচরা কিনতে পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমান তানজিন অন্তরা এ বিষয়ে বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছের বংশ বিস্তার ও সংরক্ষণে হুমকি চায়না ও কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে আমরা খুব তাড়াতাড়ি সকল আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
কালিহাতী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (টঋঙ) মো. আইয়ুব আলী বলেন, এই 'চায়না জাল' ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ। এটা মাটির সাথে আটকে থাকে যার ফলে ছোট বড় সব মাছ আটকে যায়। এই জালের ব্যবহার থেকে সকলকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হলো। যদি কেউ না মানে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।