বটি, ছুরি ধারিয়ে চলে জীবনের চাঁকা
খন্দকার রবিউল ইসলাম (রাজবাড়ী):
ছুরি, দা, কাঁচি, বটি, শিল-পাটা ধার দিয়ে চলে জীবনের চাঁকা। কাঁধে শান মেশিন নিয়ে শহরের অলিতে গলিতে হাঁক দিয়ে ঘুরছে (৪৯) বছর বয়সী মোতাহার হোসেন। সোমবার (১৪জুন) সকালে পৌর শহরের বিনোদপুর পুলিশ ফাঁিড় এলাকায় গলা ফাটিয়ে দা,বটি ধারিয়ে নিন বলে ডাকছিলেন শানী শ্রমিক।
তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তার বাড়ি সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচর। তিনি একেক সময় একেক জেলায় যান। গ্রাম মহললায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গিয়ে দা,বটি ধারিয়ে থাকেন তিনি। বিশেষ করে কোরবানির ঈদের সময় এই কাজের চাহিদা থাকে। প্রায় ৪বছর ধরে রাজবাড়ী শহরের বাড়িতে বাড়িতে ছুরি, দা, কাঁচি, বটি ও শিল-পাটা ধার দেওয়ার কাজ করেন।
পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার এক বাড়িতে দেখা যায় শান দেওয়া মেশিনের প্যাডেল ঘুরিয়ে ছুরিতে ধার দিচ্ছেন মোতাহার। ওই বাড়ির পাশের আরও কয়েকজন প্রতিবেশী এসে দা-ছুরি ধার দেওয়ার জন্য দাড়িয়ে আছেন।
এরপর মোতাহার বলেন, ‘ঈদে অনেক পশু জবাই হয়। এ সময় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই ছুরি-বটি, শিল-পাটা ধার দেওয়ার হিড়িক পড়ে। ফলে বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদের আগের কয়েকদিন আয়ও ভালো হয়। অন্যান্য সময় ৩০/৪০ টাকা নেওয়া হলেও এখন প্রতিটি অস্ত্র ধার করতে ৫০/৬০ টাকা নিচ্ছি।
বিনোদপুর ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্বপনা বেগম বলেন, আমাদের একটি বিস্কুট এর কারখানা আছে। যে কারনে আমাদের মাঝে মধ্যেই ছুড়ি বা বাসার বটি ধারিয়ে নিতে হয়। এই মোতাহার ভাই অনেক দিন ধরেই আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো ধারিয়ে দেন।
শানী মোঃ মোতাহের জানান, তিনি দীর্ঘ ১৫বছর যাবৎ এই পেশার সাথে জড়িত। যদিও এখন আধুনিক যুগে এই পেশার তেমন কোন কদর নেই। তবুও জীবনের দাগিদে ঘারে করে শান দেওয়া মেশিন নিয়ে ঘুরে বেরান গ্রামে গ্রামে। তিনি বলেন জীবনে অন্য কিছু শিখিনি। তাই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এপেশায় থাকতে হবে বা থাকতে চাই। বিবাহিত জীবনে ২সন্তানে জনক তিনি।