মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের গতি সন্তোষজনক
ঢাকার মেট্রো রেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এ প্রকল্পের কাজে এখন পর্যন্ত ৮৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। মেট্রো রেলে প্রতিটি সেটে থাকবে চারটি যাত্রীবাহী কোচ, দুই দিকে দুটো ইঞ্জিন। ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতি স্কয়ার মিটারে ৮ জনের হিসাবে ব্যস্ততম সময়ে প্রায় ১৭০০ যাত্রী চলাচল করতে পারবে।
জাপানে তৈরি স্টেইনলেস স্টিলের কোচগুলোর ভেতরে লম্বালম্বি দুই পাশে রয়েছে বসার আসন। প্রতিটি কোচে দুটি হুইল চেয়ার রাখারও জায়গা আছে।
মহামারীর কারণে কাজের অগ্রগতি যতটা এগোনোর কথা ছিল তা না হওয়ায় ঢাকার উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে চালু করা নিয়ে সংশয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পের এই অংশের প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরত্বে ডিসেম্বরের মধ্যে রেল চালু করতে তোড়জোড় থাকলেও এখন বাধা করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ।
ঢাকার যানজট নিরসনে হাতে নেওয়া আলোচিত এই প্রকল্পের এপ্রিল পর্যন্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন বলছে, প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি-৬ এর কাজের সার্বিক অগ্রগতি প্রায় ৬৪ শতাংশ। এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের কাজ হয়েছে ৮৫ শতাংশ।
মেট্রোরেল প্রকল্প-৬ এর বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, “এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার মেট্রোরেল উদ্বোধন করার কথা ছিল, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে প্রথমে যে সময়সীমা (২০২৪ সালের জুন) নেওয়া হয়েছিল, তার আগেই এমআরটি-৬ এর নির্মাণ কাজ শেষ করার বিষয়ে আশাবাদী তিনি।
মেট্রোরেলে কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি জনবলের মধ্যে এ পর্যন্ত ৬৬১ জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। তবে কেউ মারা যাননি। গাবতলী ও উত্তরায় কনস্ট্রাশন ইয়ার্ডে ফিল্ড হাসপাতাল চালুর পাশাপাশি কর্মীদের টিকাও দেওয়া হচ্ছে।
প্রকল্পের ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার ‘ভায়াডাক্টের’ মধ্যে ১৪ দশমিক ৪৯ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের ইরেকশন সম্পন্ন হয়েছে। ডিপোর অভ্যন্তরে রেললাইন নির্মাণের কাজ যেমন হয়েছে, তেমনি উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের সাড়ে ১০ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের ওপর বসানো হয়েছে রেললাইন।
এদিকে উত্তরা থেকে ৩ ও ৪ নম্বর প্যাকেজের মাধ্যমে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উভয় প্যাকেজের কাজ ২০১৭ সালের অগাস্টে শুরু হয়ে গত এপ্রিল পর্যন্ত সব পাইলক্যাপ, আই গার্ডার, প্রি-কাস্ট সেগমেন্ট কাস্টিং পিয়ার হেড, ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, পাঁচটি ব্যালান্স কেন্টিলিভার নির্মাণ এবং ১৪ হাজার ৭৪৮টি প্যারাপ্যাট ওয়াল ভায়াডাক্টের ওপর স্থাপন করা হয়েছে। উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ ও পল্লবী স্টেশনের কনকোর্স ছাদ এবং প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের কাজ শেষ। বাকি পাঁচ স্টেশন মিরপুর ১১, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়া পাড়া ও আগারগাঁও স্টেশনের কনকোর্স ছাদ ও প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে।
ডিপোতে এখন প্রথম সেটের ‘ফাংশনাল’ কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে। এরপর ভায়াডাক্টের ওপরে মেইন লাইনে পরীক্ষা করা হবে। পর্যায়ক্রমে সমন্বিত টেস্টের পর ট্রেনের ট্রায়াল রান শুরু হবে। জাপান থেকে মোট ২৪ সেট কোচ আসবে।