শিরোনাম

South east bank ad

তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা: জাল রপ্তানি আদেশে ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ

 প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   দুদক

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

জাল রপ্তানি আদেশ দেখিয়ে দুই ব্যাংক থেকে ২০ কোটি টাকা তুলেও নিয়েছে তিন প্রতিষ্ঠান। এ অভিযোগে তিন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলার আসামিরা হলেন মেসার্স আইঅ্যান্ডএম জেনারেল বিজনেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মতিউর রহমান, কজওয়ে ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক কাজী ইমরানুর রহমান ও জেড অ্যান্ড জেড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুয়াম্মার আহমদ।

২০০৮ সালের ১০ মার্চ ঢাকার মতিঝিল থানায় দণ্ডবিধি ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭-ক/১০৯ ধারায় মামলাটি (৫৩) দায়ের করা হয়। তফসিলভুক্ত হওয়ায় ওই মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করেছে দুদক। সহকারী পরিচালক মেফতাহুল জান্নাতকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

তদন্তের স্বার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে দুদক। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেসব তথ্য দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের (ডেডো) কাছে এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য চেয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি চিঠি দেয় দুদক। ওই চিঠি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জাল আদেশসহ কাগজপত্রের ভিত্তিতে রপ্তানি করা পণ্যের (সিগারেট) বিপরীতে মূসক ও শুল্ক প্রত্যর্পণের মাধ্যমে এসব টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, এ অভিযোগটি বহু পুরোনো। সিআইডিও এটা নিয়ে কাজ করেছিল। এখন দুদক কাজ শুরু করেছে। তদন্তে ডেডোর তখনকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তারাও ফেঁসে যেতে পারেন।

ডেডোর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, অগ্রণী ব্যাংক থেকে ২০০৬ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এবং ২০০৭ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেড অ্যান্ড জেড লিমিটেড মোট ১০ কোটি ৪২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা প্রত্যর্পণ হিসেবে পেয়েছে। ডেডোর মহাপরিচালকের কাছে ওইসংক্রান্ত ব্যাংকের মাসিক বিবরণীও পাঠানো হয়। সেই বিবরণী গ্রহণকারী ডেডোর সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, পদবি, বর্তমান কর্মস্থল, মোবাইল নম্বরসহ যোগাযোগের ঠিকানা চাওয়া হয়েছে। ব্যাংকের মাসিক বিবরণীগুলো পর্যালোচনা ও সংরক্ষণের দায়িত্ব কে/কারা পালন করেছেন এবং মাসিক বিবরণীগুলো পাওয়ার পর ডেডোর পক্ষ থেকে কী কার্যক্রম নেয়ার কথা ও কী কার্যক্রম নেয়া হয়েছে সেসব তথ্য-রেকর্ডপত্র চেয়েছে দুদক।

জনতা ব্যাংক থেকে ২০০৬ সালের মার্চ, মে, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাসে এবং ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল ও আগস্ট মাস সময়ে মেসার্স কজওয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ৭ কোটি ৮৪ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ ও মেসার্স আই অ্যান্ড এম জেনারেল বিজনেস লিমিটেড ২ কোটি ১৮ লাখ ৬৬ হাজার ৮৮০ টাকা প্রত্যর্পণ নিয়েছে।

ডেডোর মহাপরিচালকের কাছে ওই-সংক্রান্ত ব্যাংকের মাসিক বিবরণী পাঠানো হয়। সেই মাসিক বিবরণী গ্রহণকারী ডেডোর সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, পদবি, বর্তমান কর্মস্থল, মোবাইল নম্বরসহ যোগাযোগের ঠিকানা চাওয়া হয়েছে। ব্যাংকের মাসিক বিবরণীগুলো পর্যালোচনা ও সংরক্ষণের দায়িত্ব কারা পালন করেছেন এবং মাসিক বিবরণীগুলো পাওয়ার পর ডেডোর পক্ষ থেকে কী কার্যক্রম নেয়ার কথা ও কী কার্যক্রম নেয়া হয়েছে সেসব তথ্য/রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে।

তিন রপ্তানিকারকের নামে ডেডোতে কোনো ফাইল থাকলে, সেই বিষয়ে ও তাদের তিনজনের স্থায়ী ঠিকানা, যোগাযোগের নম্বরও চেয়েছে দুদক।

২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০০৭ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান তিনটির প্রত্যর্পণের বিষয়ে ডেডো ঢাকা অফিসের যারা অফিসিয়াল দায়িত্ব পালন করেছেনÑসেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, পদবি, বর্তমান কর্মস্থল, মোবাইল নম্বরসহ যোগাযোগের ঠিকানা চাওয়া হয়েছে।

দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, সেই সময়ে ডেডোর অফিস ছিল রাজধানীর মহাখালীতে। পরে নতুন ঠিকানা তোপখানা রোডের চট্টগ্রাম সমিতি ভবনে যায় ডেডো। ঠিাকানা পরিবর্তনের বিষয়ে অগ্রণী ও জনতা ব্যাংককে কবে অবহিত করা হয় সেই-সংক্রান্ত তথ্যও সরবরাহ করতে বলা হয় ডেডোকে।

২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০০৭ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে প্রত্যর্পণ-সংক্রান্ত ডেডো বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কী নির্দেশনা বলবৎ ছিল। সেই নির্দেশনার কপিযুক্ত পত্র অগ্রণী ও জনতা ব্যাংককে ডেডো বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট বোর্ড থেকে অবহিত বা পাঠানো হয়েছে কি না, সে-সংক্রান্ত তথ্যও চেয়েছে দুদক।

এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মূসক প্রত্যর্পণ শাখার হারিয়ে যাওয়া একটি নথির বিষয়ে জানতে চেয়েছে দুদক। হারিয়ে যাওয়ার নথির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের কপিসহ দায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিস্তারিত তথ্যও চেয়েছে দুদক।

BBS cable ad

দুদক এর আরও খবর: