শিরোনাম

South east bank ad

ঈদ মোবারক

 প্রকাশ: ১৩ মে ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ইসলাম ও জীবন

ঈদ মোবারক

গতকাল বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যার আকাশে হেসেছে বাঁকা চাঁদ। সেই হাসির রেশ ছড়িয়েছে ঘরে ঘরে। সেই হাসি আর আনন্দ নিয়ে আজ শুক্রবার দেশে উদযাপন হবে ঈদুল ফিতর। তবে গেল বছরের মতো এবারও রোজার শেষে ঈদ এসেছে আনন্দ-আশঙ্কা-অনিশ্চয়তার অবিমিশ্রিত বার্তা নিয়ে। কারণ বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঈদ শুধু আনন্দ উদযাপনই নয়, সব ভেদাভেদ ভুলে পরম শত্রুকেও বুকে টেনে নেয়ার দিন। কিন্তু অতি সংক্রামক ব্যাধি করোনাভাইরাস তথা কোভিড-১৯ এর কারণে কোলাকুলিতেও বাধা রয়েছে। এমনকি হাতও মেলানো যাবে না।

করোনার বিস্তার রোধে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের জামাত আয়োজন করার পরামর্শ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। যদিও ঈদগাহে সবাই মিলে নামাজ পড়তে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ঈদের শুরু হয়। করোনার কারণে স্মরণকালে তৃতীয়বারের মতো ঈদের জামাত হবে না ঈদগাহে। তাই জাতীয় ঈদগাহে থাকছে না জামাতের আয়োজন।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত হবে। এই মসজিদে প্রধান জামাতের পর আরও চারটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য মসজিদেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জামাত আয়োজনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

গত ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে কঠোর লকডাউন তথা বিধিনিষেধ চলমান রয়েছে। দূরপাল্লার গণপরিহন বন্ধ। রেল ও লঞ্চও বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও ঈদের আগের কয়েকদিনে অগণিত মানুষ গ্রামে গেছেন পরিবারের সঙ্গে আনন্দ উদযাপনে।

বাংলাদেশে ঈদযাত্রা নামে পরিচিত এই বাড়িফেরা ছিল অবর্ণনীয় ভোগান্তির। তবুও মানুষ নানা কৌশল অবলম্বন আর গাঁটের অতিরিক্ত টাকা খরচা করে যার যার মতো ফিরেছেন বাড়ি। করোনাভাইরাসের মধ্যে যে যেখানে আছেন সেখানেই ঈদ করার পরামর্শ দিয়ে আসছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

এরপরও স্বাস্থ্যসুরক্ষাকে উপেক্ষা করে মানুষ কষ্ট সয়ে বাড়ি গেছেন। এভাবে বাড়িফেরা প্রিয়জনদের ঝুঁকিতে ফেলার নামান্তর বলে সতর্ক করেছিলেন খোদ সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। আর মানুষের নির্বিচার যাতায়াতে মর্মাহত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তারপরও ঈদের অনেক কিছুই চলবে চিরাচরিত ধারা মেনে। মানুষ একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাবেন। রাজনীতিবিদরাও দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাবেন। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতাসহ শীর্ষ রাজনীতিকরা বাণী দিয়েছেন।

তবে করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের মতো এবারও বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের দিন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন না।

প্রতিবছর ঈদে সরকারি ভবন, সড়ক সাজানো হয় রঙিন বাতি ও পতাকায়। তবে গত বছরের মতো এবারও কোনো সাজসজ্জা থাকছে না। প্রতি বছর ঈদে চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, বিনোদন কেন্দ্র নতুন করে সাজে। ঈদের কদিন এসব কেন্দ্রে লাখো মানুষের ভিড় হয়। গত বছরের দুই ঈদের মতো এবারও করোনা ঠেকাতে সব বন্ধ। তবে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র, হাসপাতাল, কারাগারে রেওয়াজ মেনে উন্নতমানের খাবার দেয়া হবে।

বাইরের সব অনুষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বিটিভি ও স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো কমবেশি ঈদের অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। এছাড়া নানা সংগঠন ভার্চুয়ালি নানা অনুষ্ঠানও করবে। ঈদের আয়োজন থাক বা না থাকা মন কিন্তু ঠিক গাইবে ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ। তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানি তাগিদ।’

BBS cable ad