শিরোনাম

South east bank ad

মুন্সিগঞ্জে করোনায় কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন বেদে পরিবারের

 প্রকাশ: ০৮ মে ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

মুন্সিগঞ্জে করোনায় কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন বেদে পরিবারের

কায়সার সামির (মুন্সিগঞ্জ):

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ভাসমান বেদে পরিবারগুলো কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। নৌকায় বসবাসকারী পরিবারগুলো করোনার সার্বিক পরিস্থিতিতে অনাহারে দিন কাটছে। প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে ছোট নৌকায় পরিবার পরিজন নিয়ে কোন রকমে জীবন যুদ্ধে টিকে আছে তারা। এমন দৃশ্য দেখা গেছে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান তালতলা, লৌহজং, শ্রীনগর ও সদর উপজেলায় মিরকাদিম খালে ভাসমান নৌকায় করে থাকা পরিবারগুলোকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে নদীর পাড়ে ১০ থেকে ১৫টি নৌকা ও ৭১টি ছোট ছোট খুপরি ঘরে প্রায় ৫০ বছর ধরে ১o৭টি পরিবার বসবাস করছে। এদিকে শ্রীনগর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন আলমপর খাল ও শ্রীনগর বাজার সংলগ্ন শ্রীনগর-গোয়ালীমান্দ্রা খালে বেদে সম্প্রদায়ের ৪০ থেকে ৫০টি পরিবার ছোট ছোট কোষা নৌকায় করে বসবাস করছেন। এছাড়া সিরাজদিখানসহ লৌহজংয়ে ভাসমান এবং স্থলে কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করছেন কয়েক শতাধিক বেদে পরিবার।

ফেরি করে চুরি, ফিতা, কসমেটিকসহ নানা ধরনে মেলামাইন সামগ্রী বিক্রি করা তাদের প্রধান ব্যবসা। কিন্তু সম্প্রতিক লকডাউন ও নানা প্রতিকলতায় এ বছর কোথাও নেই বৈশাখী উৎসব। সে সাথে মিলিনি গোলিয়া ও বৈশাখের মেলা। তাই কোন ধরনের বিক্রি ও আয় না থাকায় বেদে পরিবারগুলো বিপাকে পড়েছে। বিশেষ করে দ্বিতীয় ধাপের লকডাউনে পরিবারগুলো সম্পূর্ণ কর্মহীন হয়ে পড়ে। এ পরিবারগুলোকে কখনো দু’বেলা খেয়ে না খেয়ে অনাহারে জীবন যাপন করছে।

শ্রীনগর বেদে পল্লীর রোকেয়া বেগম (৬০) বলেন, করোনায় তারা বেকার হয়ে পড়েছেন। কোন উৎসব অনুষ্ঠান না থাকায় তাদের বাণিজ্যও নেই। কখনো কখনো তাদের না খেয়েও থাকতে হচ্ছে। কেউ কোনো সাহায্য সহযোগিতা করতে আসেনি। সীমা (১০), রিমন (১৫) বলেন, তাদের কোনও বাড়িঘর নেই। প্রচন্ড গরম ও ঝড়-তুফান উপেক্ষা করে দিন-রাত ছোট একটি নৌকাতেই তাদের বসবাস। করোনার কারণে তাদের স্কুল বন্ধ। তারা স্থানীয় বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন।

মিরকাদিম বেদে পল্লীর সর্দার গোলাম মোস্তফা জানান, করোনাকালীন সময়ে তারা কর্মহীন হয়ে পরেছেন। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের। করোনায় ব্যবসা বাণিজ্য না থাকায় বিভিন্ন খালে বড়শি ও চাই দিয়ে মাছ ধরেছি। যদি কিছু মাছ পাই তাহলে বিক্রি করে চাল ডাল কিনতে পারি। তিনি আরো জানান, এই পরিস্থিতিতে আমাদের কাছে সরকারি বা স্থানীয়ভাবে কোনও খাদ্য সহায়তাও আসেনি।

এদিকে বৈশ্বিক মহামারীতে জেলার কয়েক শতাধিক বেদে পরিবার ছাড়াও দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ মানবতার মধ্যে জীবন-যাপন করছেন। এই পরিস্থিতিতে সমাজের বিত্তশালী ও সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

BBS cable ad

সারাদেশ এর আরও খবর: