ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগে আয় ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা

পূবালী ব্যাংক পিএলসির চলতি ২০২৫ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) নিট সুদ আয় কমেছে। তবে বিনিয়োগ আয় বেশি হওয়ায় আলোচ্য সময়ে ব্যাংকটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করে ব্যাংকটির আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। ব্যাংকটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যানুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে পূবালী ব্যাংকের সুদ আয় হয়েছে ৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এ সময়ে ব্যংকটির সুদ বাবদ ব্যয় ৩৯ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আগের হিসাব বছরে ব্যয় হয়েছিল ১ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা। ফলে ব্যাংকটির নিট সুদ আয় ১৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ কমে ৬৫২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৭৯২ কোটি টাকা।
সুদ আয় কমলেও প্রথমার্ধে ব্যাংকটির বিনিয়োগ আয় ৭০ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৯২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ট্রেজারি বন্ড থেকে সুদ বাবদ আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৬২৬ কোটি টাকা। আর ট্রেজারি বিল ও বন্ড থেকে আয় হয়েছে ২৮৮ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১৩০ কোটি টাকা। ফলে আলোচ্য সময়ে পূবালী ব্যাংকের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৫৭৮ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪৩২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৯০ শতাংশ।
প্রথমার্ধে পূবালী ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৪৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩ টাকা ৩২ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩০ জুন ২০২৫ শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ১৭ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের মোট ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে ব্যাংকটি। এর মধ্যে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ ও ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। আলোচ্য হিসাব বছরে পূবালী ব্যাংকের ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ৭৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৬ টাকা ১ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ শেষে ব্যাংকটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৪৬ টাকা ৮ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের মোট ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে ব্যাংকটির। এর মধ্যে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ ও ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। আলোচ্য হিসাব বছরে পূবালী ব্যাংকের ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ৭৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫ টাকা ৪৯ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ শেষে ব্যাংকটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৪৬ টাকা ৩৩ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে পূবালী ব্যাংক। আলোচ্য হিসাব বছরে ব্যাংকটির ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ৪৯ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ টাকা ২৩ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শেষে ব্যাংকটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৪১ টাকা ৯৬ পয়সায়।
পূবালী ব্যাংকের সর্বশেষ ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ট্রিপল এ’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি ওয়ান’। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং রেটিং ঘোষণার দিন পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক অন্যান্য গুণগত ও পরিমাণগত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (ক্রিসল)।
১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পূবালী ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ২ হাজার কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৩০১ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৪ হাজার ২৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩০ কোটি ১৪ লাখ ৩৪ হাজার ৮৬৯। এর ২৮ দশমিক ২০ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৮ দশমিক ৪২, বিদেশী বিনিয়োগকারী দশমিক ১২ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৪৩ দশমিক ২৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।