বেনজীর আহমেদ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি, সহ-সভাপতি হিসেবে নতুন মুখ আবু সাঈদ চৌধুরী
মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদকে সভাপতি এবং সৈয়দ শাহাবউদ্দিন শামীমকে সাধারণ সম্পাদক করে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের ২৬ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির সহসভাপতি হয়েছেন তরফদার মো. রুহুল আমিন, কে এম শহিদউল্যা, চৌধুরী নাফিজ শারাফাত ও আবুল খায়ের গ্রুপের ডিএমডি আবু সাঈদ চৌধুরী। দাবার অ্যাডহক কমিটিতে নতুন এবং আলোচিত মুখ দেশের অন্যতম শিল্পপ্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের গ্রুপের ডিএমডি আবু সাঈদ চৌধুরী।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই কমিটি গঠন করে। অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ ৯০ দিন। এই সময়ের মধ্যে এই কমিটিকে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ পুলিশের নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক ও দাবা ফেডারেশনের সভাপতি ড. বেনজীর আহমেদকে বাংলাদেশ দাবার সভাপতি হিসেবে পুনরায় পেতে চিঠি দেয় আন্তর্জাতিক দাবা সংস্থা (ফিদে) সভাপতি আরকাদি দভোরকোভিচ। চিঠিতে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন একটি সক্রিয় ফেডারেশন। নবগঠিত গুরুত্বপূর্ণ দাবা সংগঠন দক্ষিণ এশিয়া দাবা কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে ড. বেনজীর আহমেদ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার দাবা উন্নয়নে বেনজীরের ভুমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ড. বেনজীর আহমেদকে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি পদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ব্যপারে অনুরোধ করা হচ্ছে।’
বেনজীর আহমেদ ডিএমপির কমিশনার থাকাকালীন দাবা ফেডারেশনের সভাপতি হন। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) থাকাকালেও তিনি দাবা ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব চালিয়ে যান। তখন তিনি নবগঠিত সাউথ এশিয়ান চেজ ফেডারেশন বা দক্ষিণ এশিয়া দাবা ফেডারেশনের প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন। দক্ষিণ এশিয়ান দাবা ফেডারেশন মূলত দাবার সর্বোচ্চ বিশ্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল চেজ ফেডারেশনের (এফআইডিই) একটি প্রয়াস। এই ফেডারেশন উল্লেখিত অঞ্চলের দাবা খেলাকে উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে একটি স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ভারত এই ফেডারেশনের সহ সভাপতি ও শ্রীলংকা সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত হয়।
বাংলাদেশ দাবায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন বেনজীর আহমেদ। এশিয়ান সিটিজ দলগত দাবা চ্যাম্পিয়নশিপখ্যাত দুবাই কাপ, সার্ক দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ ও এশিয়ান জোনাল দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের মতো মর্যাদাপূর্ণ আসরের আয়োজন করে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি ড. বেনজীর আহমেদ আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ফিদে ট্রেইনার্স সেমিনার ও ফিদে আরবিটার্স ট্রেনিংয়ের আয়োজন করেও সাংগঠনিক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বাধীন কমিটি। করোনাভাইরাস দুর্যোগেও সভাপতির নির্দেশক্রমে ফেডারেশন কর্তারা দুস্থ, অস্বচ্ছল দাবাড়ু, সংগঠক, কোচ ও আরবিটারদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
দাবার উন্নয়নে একেবারে তৃণমূলে যেতে চান বেনজীর আহমেদ। দেশব্যাপী চালু করতে চান স্কুল দাবা। যেকোনো খেলায় উন্নতি করতে হলে তৃণমূলে যাওয়ার বিকল্প নেই। এ জন্য স্কুল দাবাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন বেনজীর আহমেদ, ‘স্কুল দাবা আয়োজনের চেষ্টা করছি। তাতে সারা দেশ থেকে মেধা উঠে আসবে। স্কুল থেকেই ছেলেমেয়েরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে শেখে। ফলে সেখান থেকেই শুরু করতে হবে। এ ছাড়া দাবা খেলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ছোটবেলা থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে শিখবে। পারিবারিকভাবেও দাবা শিশুদের মনমানসিকতার উন্নতিতে অনেক সহায়ক হবে।’
দাবার অ্যাডহক কমিটিতে নতুন ও আলোচিত মুখ, দেশের অন্যতম শিল্পপ্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের গ্রুপের ডিএমডি আবু সাঈদ চৌধুরী চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র থাকাকালীন থেকেই ক্রীড়া অনুরাগী হিসেবে পরিচিত। আবু সাঈদ চৌধুরী শিল্প-বাণিজ্যের জগতে দক্ষতার পাশাপাশি দেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখে আসছেন। দেশের খেলাধুলার সব অঙ্গনে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করেন তিনি। ক্রিকেট, ফুটবল, গলফসহ প্রতিটি অঙ্গনে অবদান রেখে চলেছেন। দাবার উন্নয়নেও ব্যাপক অবদান রয়েছে আবু সাঈদ চৌধুরীর। আবু সাঈদ চৌধুরী এর উদ্যোগে করোনাকালীন লকডাউনের দুঃসময়ে আবুল খায়ের গ্রুপ দু্স্থ দাবাড়ুদের ১০ লাখ টাকা দিয়েছে।
প্রতিটি জেলার প্রতিটি স্কুলে দাবা ছড়িয়ে দিতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। দাবা ফেডারেশন এর সভাপতির পরামর্শক্রমে স্কুল দাবার জন্য পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবু সাঈদ চৌধুরীর এর উদ্যোগে আবুল খায়ের গ্রুপ পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘যেকোনো খেলার উন্নতির জন্য অর্থের প্রয়োজন। আর যদি একেবারেই তৃণমূলে যেতে চান, তাহলে খরচ আরও অনেক বেশি। আমরা স্কুল দাবা আয়োজনের জন্য অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি।’
দাবা ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি নিম্নরুপ:
সভাপতি : ড. বেনজীর আহমেদ।
সহ-সভাপতি : তরফদার মো. রুহুল আমিন, কে এম শহিদউল্যা, চৌধুরী নাফিজ শারাফাত ও মো. আবু সাঈদ চৌধুরী।
সাধারণ সম্পাদক : আলহাজ সৈয়দ শাহাব উদ্দিন শামীম।
যুগ্ম সম্পাদক : ড. শোয়েব রিয়াজ আলম ও মাসুদুর রহমান মল্লিক দিপু।
কোষাধ্যক্ষ : মাহির আলী খান।
কার্যনির্বাহী সদস্য : মনিরুজ্জামান পলাশ, কামরুজ্জামান ভুঁইয়া, লিয়াকত আলী খান, জাকির আহমেদ, আলাউদ্দিন সাজু, কাজী জাকেরুল মওলা, শেখ মনিরুল ইসলাম আলমগীর, আঞ্জুমান আরা আকসির, মাহমুদা হক চৌধুরী মলি, মো. বেলাল হোসেন, নিজামুল ইসলাম, মো. রাশেদ হোসেন ফারুক, বাহার উদ্দিন বাহার, নাজাম নাকভি, দেবাশিষ দে, সজল মাহমুদ ও রফিকুল ইসলাম।