উড়োজাহাজের টিকিট কারসাজিতে জেল-জরিমানা
উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রিতে যেকোনো ধরনের কারসাজি, দুর্বৃত্তায়ন ও প্রতারণা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। এখন থেকে টিকিটসংক্রান্ত প্রতারণা বা হয়রানির অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রেখে দুটি অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া আরো ১১টি অপরাধ করলে অভিযুক্ত ট্রাভেল এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল কিংবা স্থগিত হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ‘বেসামরিক বিমান চলাচল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এবং ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশে ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল বা স্থগিতের ১১টি নতুন কারণ যুক্ত করা হয়েছে। অবৈধ টিকিট বিক্রয়, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, অননুমোদিত লেনদেন, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, তৃতীয় দেশ থেকে টিকিট ক্রয়-বিক্রয় এবং গ্রুপ বুকিংয়ে টিকিট কনফার্মের পর যাত্রীর তথ্য পরিবর্তনকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এখন থেকে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে এয়ারলাইনসের টিকিটের গায়ে মূল্য লেখার নির্দেশ দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, ‘এখন থেকে সব ট্রাভেল এজেন্সিকে এয়ারলাইনসের টিকিটের গায়ে মূল্য উল্লেখ করতে হবে। যেসব এজেন্সি টিকিটের মূল্য উল্লেখ করবে না, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমান পরিবহন খাতের ৮০ শতাংশের বেশি যাত্রীই অভিবাসী কর্মী। এই অধ্যাদেশ দুটির মাধ্যমে তাদের ন্যায্য অধিকার সংরক্ষিত হবে এবং যাত্রীসেবা আরো আধুনিক, নিরাপদ ও জনবান্ধব হবে।
’
নতুন বিধানে সরকারকে কোনো ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতারণা বা আর্থিক আত্মসাতের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ওপর সাময়িক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও বিধান রাখা হয়েছে।
অধ্যাদেশে প্রথমবারের মতো ‘যাত্রী সেবা নিশ্চিতকরণ’ শব্দগুচ্ছকে আইনের প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। টিকিট বিতরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (জিডিএস) এবং এপিআই-ভিত্তিক ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য আরো কিছু সংশোধনীর মধ্যে রয়েছে—প্রথমবারের মতো এয়ার অপারেটরদের জন্য ট্যারিফ দাখিল ও মনিটরিং বিধান, পরিবেশবান্ধব বিমান চলাচলের জন্য কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাস ও টেকসই জ্বালানি ব্যবহারের বিধান, ‘বেসামরিক বিমান চলাচল অর্থনৈতিক কমিশন’ গঠনের ক্ষমতা, সাইবার সুরক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ব্লকচেইন প্রযুক্তির ব্যবহার।


