প্রথম ধাপেই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যরা করোনার ভ্যাকিসিন পাবেন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি করোনা মোকাবেলায় সাংবাদিকদের সম্মুখসারির যোদ্ধা আখ্যা দিয়ে বলেছেন, চলতি মাসের ২৫ বা ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে করোনার ভ্যাকসিন আসবে। প্রথম চালানেই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্যরা এই ভ্যাকিসিন পাবেন। পর্যায়ক্রমে সকল সাংবাদিক করোনার এই ভ্যাকসিন দেয়া হবে।
১৮ জানুয়ারি সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির আয়োজনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিআরইউর সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ডিআরইউর সহ-সভাপতি ওসমান গনি বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক আরাফাত দাড়িয়া, অর্থ সম্পাদক শাহ আলম নূর, সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, দপ্তর সম্পাদক মো: জাফর ইকবাল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইদুর রহমান রুবেল, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক হালিম মোহাম্মদ, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন, কল্যাণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ, কার্যনির্বাহী সদস্য এম এম জসিম, রহমান আজিজ, রুমানা জামান ও রফিক রাফিসহ সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
করোনায় ডিআরইউর কার্যক্রমের প্রশংসা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার শুরু থেকেই ডিআরইউ যেভাবে সদস্য ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে তা সবার জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। মন্ত্রী ভবিষ্যতেও ডিআরইউর সার্বিক কার্যক্রমের সাথে থাকবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সিরামের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আগামী ২৫ বা ২৬ জানুয়ারির মধ্যে প্রথম ধাপের টিকার লট বাংলাদেশের প্রবেশ করবে। পরবর্তী এক সপ্তাহ পরেই ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু করা হবে। এ জন্য ৪২ হাজার টিকা প্রদান কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তত করা হচ্ছে। ঢাকা জেলায় ৩০০টি চিকিৎসা কেন্দ্রে টিকাদান কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেসরকারিভাবেও টিকা আমদানি ও প্রয়োগ করার অনুমোদন দেয়া হবে। এ জন্য নীতিমালা করা হয়েছে। তার মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এরপাশাপাশি ভারত সরকার কিছু করোনার টিকা উপহার স্বরূপ বাংলাদেশকে দিবে। এটি প্রথম চালানের আগেও আসতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জাহিদ মালেক বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যু কমে যাওয়ার পরিসংখ্যানে এমন আভাস দিচ্ছে। দেশে সফলভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে চিঠি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের মতো ভ্যাকসিন দেয়ার কর্মসূচীতেও ভাল করার আশাবাদ জানিয়ে এ কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগীতা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের মাত্র একটি করোনা পরীক্ষার ল্যাব ছিলো, বর্তমানে ২০০টি ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী লকডাউন থাকায় পিপিই সংকট ছিলো। বর্তমানে আমরা পিপিই রপ্তানী করছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যারা বিদেশ যাচ্ছেন আমরা তাদের করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে প্রচুর মানুষ সুবিধা নিয়েছে। এটি আমাদের একটি সফল কার্যক্রম। করোনার মধ্যেও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন থেমে নেই। দেশের অন্য সব পাবলিক পরীক্ষা স্থগিত থাকলেও মেডিকেল কলেজের সকল পরীক্ষা চলমান রয়েছে।
‘কাদের প্রথম টিকা দেয়া হবে’- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথম ধাপে সাংবাদিক, ডাক্তার, নার্স, টেকলোজিস্ট, পুলিশ, সেনাবাহিনী, প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাধারণের মধ্যে ৫৫ বছর বা তার উর্দ্ধে মানুষদের প্রধান ধাপে করোনার টিকা প্রয়োগ করা হবে।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বেসরকারিভাবেও টিকা আমদানি ও প্রয়োগের অনুমোদন দেয়া হবে। এ জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হবে। তার বাইরে কেউ অতিরিক্ত মূল্য আদায় করতে পারবে না।