প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ বৃদ্ধি ও নতুন সহায়তা বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে বিজিএমইএ
পোশাক শিল্পের আকাশে মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে। উদ্যোক্তার একার পক্ষে যা মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না। প্রয়োজন আছে প্রস্তুতির। এ পরিস্থিতিতে শিল্পের জন্য প্রদত্ত প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ বৃদ্ধি ও নতুন সহায়তার প্রয়োজন সরকারকে বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ অনুরোধসহ খাতের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করে সংগঠনটি।
গতকাল ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ‘কভিড-পূর্ববর্তী এবং চলমান কভিড পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পের বাস্তবতা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পোশাক শিল্প মালিক সংগঠন বিজিএমইএ। সভাপতি ড. রুবানা হকসহ পর্ষদ সদস্য ও বিজিএমইএ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, বিশ্ববাজারে আমরা পোশাক রফতানিতে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও বিশ্ববাজারে আমাদের শেয়ার মাত্র ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এ বাজারে আরো অংশ করায়ত্ত করার সুযোগ রয়েছে। যদিও ভিয়েতনামকে আমাদের মূল প্রতিযোগী হিসেবে দেখা হয়। বাস্তবতা হলো, রাতারাতি তাদের পক্ষে সামর্থ্য বৃদ্ধি সম্ভব নয়। তাছাড়া পোশাক পণ্য ভিয়েতনামের প্রধান রফতানি পণ্যও নয়। আবার কম্বোডিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নে জিএসপি সুবিধা হারিয়েছে। অন্যদিকে ইথিওপিয়ায় সংঘটিত অস্থিতিশীলতা তাদের শিল্প ও অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এগুলোর বিপরীতে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেভাবে বিভিন্ন সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে বলা যায় সবাই মিলে এ দুর্যোগপূর্ণ সময়টি মোকাবেলা করতে পারলেই আগামীতে আমাদের পোশাক শিল্পের রয়েছে অপার সম্ভাবনা।
কভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আগামী জুনের পর আর দীর্ঘায়িত হবে না এমন আশা প্রকাশ করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এ সময়ে আমাদের অর্জনগুলো ধরে রাখতে সবাই মিলে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। আজকের এ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ, অনুগ্রহ করে শিল্পের জন্য যে প্রণোদনা প্যাকেজটি দিয়েছেন, তার মেয়াদ বৃদ্ধি করে দিন।
ড. রুবানা হক প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ দুই বছরের জায়গায় পাঁচ বছর করা এবং মোরাটারিয়াম ছয় মাসের জায়গায় এক বছর করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তারপর যদি কভিডের ইম্প্যাক্ট খারাপ হয়, যেটা এরই মধ্যে বোঝা যাচ্ছে, তাহলে আমাদের কয়েক মাসের সাপোর্ট লাগবে। জুন থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব। আমরা এখনো অন্ততপক্ষে পর্যবেক্ষণের চেষ্টা করছি যে, কতটুকু ধাক্কা আমরা সামলাতে পারব।
নতুন সহায়তার প্রয়োজনের বিষয়েও গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর পক্ষ হতে উল্লেখ করা হয়। রুবানা হক প্রয়োজনে নতুন সহায়তা দেয়া যায় কিনা তা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার অনুরোধ করেন। এছাড়া লাখ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানকারী এ খাত যেন কোনোভাবে বিপর্যয়কবলিত না হয়, সেজন্য সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে শিল্পটিকে এগিয়ে নেয়ারও আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি।