বাজারে উঠেছে আমনের নতুন চাল, দাম চড়া

রাজধানীর বাজারে উঠতে শুরু করেছে আমন মৌসুমের নতুন চাল। তবে এ বছর দাম কেজিপ্রতি ৭-১০ টাকা পর্যন্ত বেশি হাঁকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।ধানের দাম চড়া হওয়ায় চালের ওপর প্রভাব পড়ছে বলে মিল মালিকরা জানিয়েছেন। যদিও সরকার এ বছর নতুন করে এখনো আমন ধান-চালেরদাম নির্ধারণ করেনি।
রাজধানীর বাবুবাজার ও বাদামতলী এলাকার চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর আমন মৌসুমের শুরুতে রাজধানীর পাইকারিবাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হয়েছিল ৩৮-৩৯ টাকা। এ বছর তা বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকায়। নাজিরশাইল মাঝারি মানের চালের দামছিল গত বছর ২৯-৩০ টাকা। এ বছর তা ৩৮-৩৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বিনা-৭ চাল (বিআর-২৮ এর মতো) গত বছর ছিল ৩২-৩৩ টাকা। এবছর তা বিক্রি হচ্ছে ৩৭-৩৮ টাকায়।
রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের অ্যাগ্রো অর্গানিকা প্রতিষ্ঠান খুশবো প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের ব্যবসায়িক অংশীদার দ্বীন মোহাম্মদ স্বপন জানান, ময়মনসিংহও শেরপুর জেলা থেকে বাজারে নতুন আমন চাল ওঠা শুরু হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার নাজিরশাইল ধানের আবাদ কম হওয়ায় চালউৎপাদন কম হবে। এ কারণে দাম এ বছর বেশি থাকবে বলে তিনি মনে করছেন।
রাজধানীর বাবুবাজারের মেসার্স রশিদ রাইস এজেন্সির ব্যবসায়ী মনির হোসেন জমাদার বলেন, বাজারে বোরো মৌসুমের পর্যাপ্ত চাল মজুদ থাকাসত্ত্বেও মিল থেকে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। মিল মালিকরা বর্তমান দাম ধরে রাখতে নতুন চালও চড়া দামে বিক্রি শুরু করেছেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোয় প্রতি কেজিসাধারণ মানের নাজিরশাইল বিক্রি হয়েছে ৪৬-৪৮ টাকা, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৪৮-৫৬ টাকা, মাঝারি মানের চাল বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকাও লতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকায়।
মিল মালিকরা জানান, বর্তমানে চালের দাম চড়া। এ অবস্থায় আমন ধান এখনো পুরোপুরি কাটা শুরু হয়নি। এছাড়া গত বছর থেকে চটের বস্তায়চাল ভরা হচ্ছে। এতে চালের দাম বেশি পড়ছে। চালের মূল্য বৃদ্ধি ও চটের বস্তা দুটি মিলে দাম এখন বেশি। প্রতিটি ৪০০ গ্রাম ওজনের চটের বস্তারমূল্য পড়ছে ৫০-৫৫ টাকা। আর প্রতিটি ৮০ গ্রাম ওজনের প্লাস্টিকের বস্তার মূল্য ছিল ১৫-১৭ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে গত বোরো মৌসুমের বিপুল পরিমাণ চাল মজুদ রয়েছে। চাল আমদানির ওপর শুল্ক বাড়ানো এবংসরকারিভাবে প্রতি কেজি মোটা চাল ৩২ টাকায় কেনায় বাজারে পণ্যটির দাম বেড়ে যায়। মিল মালিকরা বিগত কয়েক বছর চাল মজুদ করে তেমনসুবিধা করতে না পারলেও এ বছর সেটি পুষিয়ে নিয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ৫২ লাখ ৬১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রানির্ধারণ করা হয়। কিন্তু মৌসুম শেষে আমন ধানের আবাদ ছাড়িয়েছে ৫৩ লাখ ৮০ হাজার ৪০০ হেক্টরে, যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১ লাখ ১৯ হাজার ১০০হেক্টর বেশি। আমন মৌসুমে ধানের আবাদ বাড়াতে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠকর্মীদের একাগ্রতা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশিআবাদ করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান ডিএই মহাপরিচালক কৃষিবিদ হামিদুর রহমান।