শিরোনাম

South east bank ad

২০২৬ সালে স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ডলার ছাড়ানোর পূর্বাভাস

 প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ক্রয়-বিক্রয়

২০২৬ সালে স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ডলার ছাড়ানোর পূর্বাভাস

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য অংশীদারদের টানাপড়েন, শুল্ক বৃদ্ধি ও সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কায় বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বাড়ছে অনিশ্চয়তা। এ প্রেক্ষাপটে চলতি বছরের শুরু থেকে বিনিয়োগকারীদের আপৎকালীন প্রধান আশ্রয় হয়ে উঠছে স্বর্ণ। দফায় দফায় বাড়ছে মূল্যবান ধাতুটির দাম। সামনের দিনগুলোয় আরো ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এমনকি ২০২৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) মধ্যেই স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করবে বলে সম্প্রতি পূর্বাভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান। খবর রয়টার্স।

এক বিবৃতিতে জেপি মরগান জানিয়েছে, প্রত্যাশার তুলনায় চাহিদা বেড়ে গেলে চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকেই (অক্টোবর-ডিসেম্বর) স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৬৭৫ ডলারে পৌঁছে যেতে পারে। আর বাজার পরিস্থিতি এ মূল্যবান ধাতুর অনুকূলে থাকলে পূর্বাভাসের আগেই ৪ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

প্রতিষ্ঠানটির তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রতি প্রান্তিকে স্বর্ণের গড় চাহিদা থাকতে পারে ৭১০ টন। যার কারণে আগামী বছরেও দামের ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।

স্পট মার্কেটে ২০২৫ সালের শুরু থেকে স্বর্ণের দাম ২৯ শতাংশ বেড়ে ইতিহাসে ২৮ বার রেকর্ড শীর্ষে উঠেছে। সবশেষ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৫০০ ডলারের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছে। এ পরিস্থিতিতে স্বর্ণের দামের পূর্বাভাস সংশোধন করেছে আরেক মার্কিন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস। বছরের শেষ নাগাদ মূল্যবান ধাতুটির দাম ৩ হাজার ৭০০ ডলারে পৌঁছতে পারে বলে সতর্ক করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি যদি বাজার অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে, তবে এ সময়ের মধ্যেই স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৫০০ ডলারে গিয়ে পৌঁছান অসম্ভব নয় বলেও জানিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাকস।

সাধারণত অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল সময়ে স্বর্ণের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। বর্তমানে মূল্যবান ধাতুটির মূল্যবৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ কাজ করছে। অর্থবাজার ধসে পড়লে আপৎকালীন বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণকে নির্ভরযোগ্য সম্পদ হিসেবে মনে করা হয়। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আর্থিক নীতিতে এটি আরো প্রমাণ হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এক শতাব্দীর মধ্যে বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতিতে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ঘটিয়েছে এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে পুঁজিবাজার ও ডলারের দামে দফায় দফায় পতন খুচরা ও বড় বিনিয়োগকারীদের বিকল্প ভাবতে বাধ্য করেছে। এর প্রভাব পড়েছে স্বর্ণের দামে।

সাম্প্রতিক স্বর্ণের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত ক্রয়কে অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নগদ প্রবাহের অনিশ্চয়তায় রিজার্ভ শক্তিশালী করতে শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে সরে এসে প্রচুর পরিমাণে স্বর্ণ কিনছে চীন ও উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। মূল্যবান ধাতু বিশেষজ্ঞ ও গোল্ড আইআরএ ডিলার বার্চ গোল্ড গ্রুপের ফিলিপ প্যাট্রিক জানিয়েছেন, ২০২২ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এক হাজার টনেরও বেশি স্বর্ণ কিনেছে।

তবে বিশ্লেষকরা এও বলছেন, স্বল্পমেয়াদে স্বর্ণে বিনিয়োগ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ ক্রয়ের গতি যদি হঠাৎ কমে যায়, তবে তা বাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যদি রেসিপ্রোকাল ট্যারিফের চাপ সামলেও শক্ত অবস্থানে থাকে এবং ফেড সুদহার বাড়ায়, তবে তা স্বর্ণের চাহিদায় ধাক্কা দিতে পারে।

BBS cable ad

ক্রয়-বিক্রয় এর আরও খবর: