শিরোনাম

South east bank ad

লম্বা ছুটিতে বগুড়ার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভিড়

 প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :

টানা তিনদিনের ছুটির শুরুতে বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়সহ জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে এখন শিশু-কিশোর ছাড়াও সব বয়সী মানুষের ভিড় দেখা গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে সেখানে আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সব বয়সীরাই ছুটির সময়গুলো একটু অন্য রকমভাবে কাটানোর চেষ্টা করছেন। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়ানো পাশাপাশি বেশির ভাগ মানুষ ছুটে যাচ্ছেন বিনোদন কেন্দ্রে। পুন্ড্রনগরের রাজধানী হিসেবে পরিচিত বগুড়ার মহাস্থানগড়। এখানে রয়েছে হজরত শাহ সুলতান বলখি (রা.)-এর মাজার, জিয়ত কুপ, শিলাদেবির ঘাট, জাদুঘর ও পিকনিক স্পটসহ আরও দর্শনীয় অনেক কিছু।

মহান বিজয় দিবসের সকাল থেকেই সেখানে ছুটে যাচ্ছে বগুড়ার শহর ও অন্য অঞ্চলের দর্শনার্থীরা। এ সময় তরুণ-তরুণী এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও দল বেধে মহাস্থানগড়ে যাচ্ছেন।

মহাস্থান যাদুঘর কতৃপক্ষ বলছে, ভিড় আরও বাড়বে। তারা নিরাপত্তার জন্য পর্যন্ত ব্যবস্থা করেছেন। বগুড়া শহরের নবাববাড়ীতে রয়েছে অবিভক্ত পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ আলীর বাড়ি। ওই বাড়িটিতে এখন প্যালেস মিউজিয়াম করা হয়েছে। নবাব পরিবারের ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং রকমারি দর্শনীয় জিনিস দিয়ে সাজানো হয়েছে মিউজিয়ামটি।

শহরের খান্দার এলাকায় রয়েছে ওয়ান্ডারল্যান্ড। এখানে রয়েছে শিশুদের নানা রাইড এবং বিভিন্ন খেলা ব্যবস্থা। এর প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। এখানে প্রতিদিন ভিড় করছে শিশু-কিশোরসহ অসংখ্য মানুষ। এদিকে দীর্ঘ ছুটি ও বিজয় দিবস উপলক্ষে ওয়ান্ডারল্যান্ডে নানা রকম অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শহরের পৌরপার্ক ও শহীদ খোকন পার্কের খোলা জায়গায় আড্ডা দিয়ে ছুটির সময় কাটান অনেক পরিবারের সদস্যরা। বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর কালিতলার হার্ডপয়েন্টের দক্ষিণে রয়েছে প্রেম যমুনার ঘাট। গত কয়েক বছরে এটি একটি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। যমুনা নদীর পাশে নির্মল পরিবেশে সময় কাটাতে এখানে প্রতিদিন আসছে শত শত মানুষ। এছাড়া বগুড়া শহরের পাশ্চাত্য খাবারের রেস্তোরাঁ আড্ডা, রেডচিলিজ, রোচাস, বার-বি-কিউ লা ভিলা, মাইডাস, শখসহ বিভিন্ন চাইনিজ রেষ্টুরেন্টগুলোতে রয়েছে ভিড়। মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত পরিবারের লোকজন এখানে ভিড় করছে। নানা রকম পার্টি আর হইহুল্লোড় করে সবাই সময় কাটাচ্ছেন। এছাড়া শহরের সাতমাথায় চটপটি ফুচকা, কাবাব, কোমলপানীয় আর মুখরোচক খাবার দোকানগুলোতে এবার রেকর্ড পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে।

বৃস্পতিবার দুপুরে বগুড়া ওয়ান্ডার ল্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারের সামনে দর্শনার্থীরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটছেন। সেখানে কথা হয় খাদিজা খাতুনের সঙ্গে। চার ও আট বছরের মেয়ে মারিয়া ও বিউটিকে নিয়ে এসেছেন তিনি। জানান, মেয়েদের বায়নার কাছে হার মেনেই শিশুপার্কে আসা। ওদের বাবা গেছেন টিকিট কাটতে। যে ভিড়, দেখা যাক ঢোকা যায় কি না।

বিনোদনকেন্দ্রগুলোর মতোই জেলার বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র্রে দর্শনার্থীদের ছিল উপচে ভিড়। মহাস্থানগড়, খেরুয়া মসজিদ, গোকুল মেধ, ভাসু বিহার, যোগীর ভবণ, ভীমের জাঙ্গাল, রানী ভবানীর বাপের বাড়ি, পরশুরামের প্রাসাদ, মানকালীর কুন্ড এর মধ্যে অন্যতম।
বগুড়া ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে বিনোদনপ্রেমী লোকজন ছুটে আসছেন এসব স্থানে।

মহাস্থানগড় দেখতে নাটোরের বড়ইগ্রাম থেকে এসেছিলেন মেডিকেল কলেজের ছাত্রী আলেয়া রহমান। তিনি বলেন, ‘এত দিন ইন্টারনেট এবং বইয়ে প্রাচীন এই স্থাপনা সম্পর্কে পড়েছি। এবার পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে এই স্থাপনা দেখতে এসেছি। এখানে এসে স্থাপনাটির নির্মাণশৈলী ও বিভিন্ন কারুকাজ দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি।

বগুড়ার শহরের খান্দারের ওয়ান্ডারল্যান্ড বিনোদন কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার এসএম পারভেজ জানান, এবার দর্শনার্থীদের সংখ্যা অনেক বেশি। ছুটির শুরু থেকে আবহাওয়া ভালো হওয়ার কারণে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। তিনি আরও জানান, দর্শকদের চাহিদা মাথায় রেখে তাদের কেন্দ্র নতুন করে সাজানো হয়েছে। শহরের বিভিন্ন চারতারকা ও পাঁচ তারকা হোটেলগুলোতে বেড়েছে অতিথি সংখ্যা। অনেক হোটেলেই বিশেষ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: