শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচিতে হামলা
আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :
দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষার্থীদের ওই কর্মসূচি প- হয়ে যায়। হামলার ঘটনায় আন্দোলনকারী ৪ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এছাড়া রাজশাহীর স্থানীয় দৈনিক সোনার দেশের একজন রিপোর্টার লাঞ্ছিতের শিকার হয়েছেন। বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- নর্থবেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জান্নাতুল সাবিরা, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাব্বত হোসেন মিলন, রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী. জিন্নাত আরা সুমু, নিউ গভ. ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থী নাদিম সিনা। এছাড়া সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ঘটনাস্থলে স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিক তারেক মাহমুদকে লাঞ্ছিত করে হামলাকারীরা। আহতরা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে- পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে রাস্তার অবস্থান নেয় নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে প্রতীকী অনশন শুরু করে। সেখানে তারা সরকারি-বিরোধী বিভিন্ন বক্তব্য দিতে থাকেন। এ সময় পুলিশের সামনেই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় একদল যুবক। হামলাকারীরা এসময় শিক্ষার্থীদেরকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি আর লাথি মারতে থাকে। এতে তাদের কর্মসূচি প- হয়ে যায়। তবে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে না দিলে আমরণ অনশন করবেন বলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী পরে জানিয়েছেন।
এসময় চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ছাত্রলীগ এই হামলার সঙ্গে জড়িত বলে তারা জানিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের একজন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল মজিদ অন্তর। তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম। হঠাৎ ১২-১৫ জন আমাদের ওপর হামলা চালায়। আন্দোলন চলাকালে পুলিশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে চারপাশে ঘিরে রেখেছিল। এরমধ্যে কীভাবে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়? তিনি দাবি করেন- ছাত্রলীগই এই হামলার সঙ্গে জড়িত। কেননা- পুলিশের উপস্থিতিতে অন্য কোনো সন্ত্রাসী এই হামলা চালানোর সাহস রাখে না। হামলাকারী যেই হোক না কেন আমরা তাদের শাস্তি চাই। কেননা- শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-কর্মসূচি পালনের নৈতিক অধিকার আমাদের রয়েছে।’
লাঞ্ছিতের শিকার সাংবাদিক তারেক মাহমুদ বলেন, ‘আমিসহ কয়েকজন সাংবাদিক শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচির তথ্য সংগ্রহ করছিলাম। এ সময় একদল যুবক এসে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। ভিড়ের মধ্যে আন্দোলনকারীরা আমাকেও লাঞ্ছিত করে। পরে পুলিশ এসে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হামলার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। নগর ছাত্রলীগের নেতারা ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে এসেছে। একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছে, যা স্বর্বৈব মিথ্যা।’
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই একদল যুবক এসে হামলা চালায়। তবে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। কারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’