বাংলাদেশে সামাজিক উন্নয়নে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর ইতিবাচক প্রভাব

টেকসই উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ। এ লক্ষ্য অর্জনে নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের কার্যক্রমের লক্ষ্য মূলত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করা, কৃষি খাতকে শক্তিশালী করা, শিক্ষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়ানো, তরুণ উদ্যোক্তা গড়ে তোলা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ব্যাংকটি দীর্ঘমেয়াদী কমিউনিটি উন্নয়ন কার্যক্রমে অব্যাহত রয়েছে। গত পাঁচ বছরে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় এসব উদ্যোগের মাধ্যমে ১ কোটি ৮০ লক্ষাধিক মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে প্রতিষ্ঠানটি।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ
বিজয় বলেন, “আমাদের লক্ষ্য
শুধুমাত্র ব্যাংকিংয়ে সীমাবদ্ধ নয়। ২০২৪ সালে আমাদের সমাজসেবা কার্যক্রমগুলো
দেশের নানা অঞ্চলে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষের জীবন স্পর্শ করেছে —
কৃষক, যুবক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং
সমাজের দুর্বল শ্রেণির মানুষের সহায়তায় কাজ করেছে।
ম্যানগ্রোভ রোপণ থেকে শুরু করে কৃষি উদ্ভাবনে অর্থায়ন, প্রত্যন্ত
অঞ্চলে চোখের যত্ন নিশ্চিতকরণ, এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে
কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের
উদ্দেশ্য ছিল সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।”
২০২৪ সালের সম্প্রদায়ে ইতিবাচক প্রভাবের মূল অর্জনসমূহ
প্রকল্পের নাম |
অংশীদার |
আয় ও উৎপাদন উন্নয়ন |
অর্জিত দক্ষতা ও গৃহীত চর্চা |
স্থাপিত সংযোগ সমূহ |
অর্জিত সফলতা |
যশোরে সংগঠিত ফুলচাষ কেন্দ্র |
কেএমএসএস |
প্রতি
কৃষকের গড় মাসিক আয় ২,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা
বৃদ্ধি পেয়েছে। |
জারবেরা
চাষ, পলিহাউস ব্যবস্থাপনা, ছাঁটাই পদ্ধতি ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ |
বাজার ও
পাইকারি ক্রেতাদের মধ্যে সরাসরি ব্যবসায়িক যোগাযোগের মাধ্যমে
পণ্য সরবরাহের সুবিধা |
ফসল
পরবর্তী ব্যবস্থাপনা উন্নতহয়েছে এবং ফসল নষ্ট
হওয়ার হার কমেছে
|
হাওর অঞ্চলের কৃষকদের খাদ্য নিরাপত্তা |
ব্র্যাক |
১৫০০
কৃষকের ৮০% জানান খাদ্যের প্রাপ্যতা বেড়েছে এবং বছরের সব সময় আয় হচ্ছে। |
বন্যা
সহনশীল ফসল পরিকল্পনা ও জলবায়ু-সহনশীল কৃষি কৌশল |
স্থানীয়
বাজার চ্যানেল ও কৃষি উপকরণ সহায়তা |
বন্যার
সময় ফসলের ক্ষতি হ্রাস পেয়েছে। |
মৌমাছি পালন ও তার অর্থনৈতিক চেইন |
বাসা |
প্রতি
মৌচাষির বার্ষিক আয় ২৫,০০০ টাকার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। |
নিরাপদভাবে
মধু সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, আর্থিক
পরিকল্পনা
|
স্থানীয়
মধু বাজার ও সমবায় সমিতি
|
পণ্যের মান
উন্নত হয়েছে এবং দূষণজনিত ক্ষতি হ্রাস পেয়েছে।
|
স্মার্ট কৃষি গ্রাম উদ্যোগ |
এসএএফ |
১৪৫০ জন
কৃষকের মধ্যে ৬০ শতাংশ এর বেশি কৃষক উৎপাদন বৃদ্ধি ও খরচ
কমানোর কথা জানিয়েছেন। |
যান্ত্রিকীকরণ, সমন্বিত পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা, ফসল
পরবর্তী পরিচর্যা
|
উপকরণ
সরবরাহকারী ও পরামর্শদাতা নেটওয়ার্ক |
শ্রম ও
সময়ের সাশ্রয় সাধিত হয়েছে এবং ফসলের লাভজনকতা বৃদ্ধি
পেয়েছে। |
চরাঞ্চলে জলবায়ু প্রভাবিত জীবিকা |
ফ্রেন্ডশিপ |
৩,০০০-এর বেশি পরিবার হাঁস-মুরগি ও ছাগল পালন করে আয়ের উন্নতি
সাধন করেছে। |
গবাদিপশুর
যত্ন, আঙিনা বাগান পরিচালনা, দুর্যোগের জন্য প্রস্তুতি |
পশু
চিকিৎসা সেবা ও স্থানীয় ব্যবসায়ী
|
আয়ের বৈচিত্র্যতা
সমৃদ্ধ হয়েছে ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা লাভ হয়েছে। |
গাজীপুরে যুব দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান
|
ইউসেপ বাংলাদেশ |
দক্ষ
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্র্যাজুয়েটদের গড় মাসিক আয় ১০,০০০ টাকার বেশি। |
মেশিন
চালনা, সেলাই কাজ, মোবাইল
সার্ভিসিং |
স্থানীয়
শিল্প ও ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় কর্মসংস্থান |
যুবকদের
দ্রুত কর্মসংস্থানে সহায়তা এবং তাদের ওপর নির্ভরতা কমেছে। |
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড, কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স ও ব্র্যান্ড ও
মার্কেটিং, বিটপি দাস চৌধুরী বলেন, “আমাদের অংশীদার ও
কমিউনিটিগুলো সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের চালক। এই যাত্রায় তাদের পাশে থেকে কাজ করতে পেরে আমরা অত্যন্ত
আনন্দিত। এ বছরের প্রতিটি সাফল্য কেবল সংখ্যায় সীমাবদ্ধ নয় — প্রতিটি
মাঠ, ঘর, পলিহাউস আর
মৌচাকে গড়ে উঠেছে আশার গল্প,
আত্মমর্যাদা আর
টিকে থাকার অনুপ্রেরণা।“
বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে এই কার্যক্রমগুলো হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর বিস্তৃত
কৌশলের অংশ। ‘হেয়ার ফর গুড’ প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে ব্যাংকটি বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি
অংশীদার হিসেবে, ১২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের
উন্নয়নের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত আছে। এই দীর্ঘমেয়াদী
অঙ্গীকার দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক উন্নয়ন এবং
পরিবেশ রক্ষায় অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে, যা বাংলাদেশের
স্থায়ী উন্নয়নের জন্য মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে আসছে।