দৌলতদিয়ায় ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি, ভোগান্তি চরমে
খন্দকার রবিউল ইসলাম (রাজবাড়ী):
লকডাউন শিথিল হওয়ায় চলছে গণপরিবহন, কোরবানির পশু বাহী ট্রাকের কারণে বেড়েছে যানবাহনের চাপ, তার ওপর আবার পদ্মায় তীব্র স্রোতে বিঘ্নিত হচ্ছে ফেরি চলাচল।
এমন সমীকরণেই রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া প্রান্তে সৃষ্টি হয়ছে পণ্যবাহী,পশুবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহনে দীর্ঘ সারি।
প্রচন্ড রোদ আর গরমে আটকে থাকা যাত্রীদের দূর্ভোগের পাশাপাশি ট্রাকে থাকা গরু গুলোকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে গরু ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে আজ শুক্রবার(১৬ জুলাই) সকালে থেকে ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় , দীর্ঘদিনের খরা কাটিয়ে স্বরুপে ফিরেছে দৌলতদিয়া ঘাট। এতদিন ঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় মহাসড়কে যানবাহন দেখা না গেলেও গতকাল লকডাউন শিথিলের প্রথম দিন থেকেই দৌলতদিয়া ঘাট তার পূর্ব চিরচেনা রূপে ফিরে এসেছে।
প্রতিটি যানবাহনকে ফেরি পারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। সকাল ১০ টা নাগাদ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন বোর্ড পর্যন্ত প্রায় ৩
কিঃমি এলাকায় প্রায় ৩শ পশুবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা। এছাড়াও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানজট এড়াতে রাজবাড়ী কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে কল্যানপুর পর্যন্ত ৩ কিঃমি এলাকায় ২শ অপচনশীল পন্যবাহী ট্রাক আটকে রাখা হয়েছে। যা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাতে সিরিয়াল অনুযায়ী পার করা হবে।
আটকে থাকা যানবাহনের যাত্রীদের দূর্ভোগের পাশাপাশি প্রচন্ড গরমে কোরবানী উপলক্ষে ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় ট্রাকে করে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া গরুগুলো নিয়ে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন গরু ব্যবসায়ীরা। রোদ ও গরমে বেশীর ভাগ গরুগুলো অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলা তাদের ভরসা হাতপাখা। প্রতিটি ট্রাকে ৮/১০জন করে রাখাল অবিরাম গরুগুলোকে বাতাস করে চলেছেন।
বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের চালক আলিম সরদার জানান, ভোররাতে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌঁছায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফেরির নাগাল পাই নি। সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে আছি। প্রচন্ড গরমে যাত্রীরা অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। ফেরির নাগাল পেতে আরও ঘন্টা দুয়েক সময় লাগবে।ঘাটে পশুবাহী ট্রাক থাকায় বাড়তি চাপ রয়েছে। ফেরির সংখ্যা বাড়লে এই চাপ আর থাকবে না।
সুলতানাপুর থেকে ট্রাকে গরু নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে মোহাম্মদ আলী শেখ, তিনি জানান ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। এখন দৌলতদিয়া ঘাটে এসে আটকে পড়েছি।এই তীব্র গরমে গরুর স্ট্রোক করার সম্ভাবনা থাকে।তাই একটু চিন্তাই আছি।ঠিক মতো গরু নিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে পারবো কিনা। তবে কখন ফেরির নাগাল পাবো তা বলতে পারছি না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কতৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন জানিয়েছেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ছোট-বড় ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদ-উল আযহা উপলেক্ষ দু’একদিনের মধ্যে আরো দু’টি রোরো ফেরি এ নৌরুটের বহরে যুক্ত হবে। এছাড়া ৩নং ফেরি ঘাটটি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রেখে মেরাতম করা হচ্ছে।