ছাত্রলীগ নেতা ইমনকে হত্যা তিন মিনিটেই

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
কক্সবাজার শহরের পেশকারপাড়ায় ছাত্রলীগ নেতা ইমন হাসান মওলা (২০) হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন পাঁচজন। হত্যার মিশন শেষ করতে খুনিরা সময় নেয় মাত্র তিন মিনিট। পূর্বশত্রুতার জেরে ইমনকে হত্যা করা হয়। গত রবিবার বিকালে টেকনাফ উপজেলার কচুবনিয়া এলাকা থেকে ইমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবদুল্লাহ খানকে (২৭) গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র্যাব এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানায়।
র্যাব ১৫-এর কক্সবাজার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে র্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার নিত্যানন্দ দাশ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল্লাহ ছাত্রলীগ নেতা ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। কয়েক মাস আগে আবদুল্লাহর সঙ্গে ইমনের মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার জেরে ইমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। খুনের পর ইমনের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি নিয়ে নেন হামলাকারীরা। সেই মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করেছে র্যাব। আবদুল্লাহ শহরের পেশকারপাড়ার খাইরুল আহমদের ছেলে।
গত রবিবার রাতেই আবদুল্লাহকে কক্সবাজার সদর মডেল থানাপুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পেশকারপাড়ার ছিকু বরফকলসংলগ্ন সড়কে কক্সবাজার সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ইমনের ওপর হামলা করা হয়। এ সময় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে তাকে হত্যা করা হয়। ইমনের বাড়ি শহরের উত্তর টেকপাড়ায়। তিনি কক্সবাজার পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এ ঘটনায় শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিহত ইমনের বাবা মো. হাসান বাদী হয়ে আবদুল্লাহ খানকে প্রধান আসামি করে মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন পেশকারপাড়ার আবদুল্লাহ খান, রমজান আলী, আবদুল্লাহ আহাদ ওরফে ছোটন, ছৈয়দ আকবর, মুন্না প্রকাশ ওরফে কালা মুন্না, মো. সানি, মো. জুয়েল ওরফে ফরহাদ ও মো. তৌহিদ। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আটজনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে গতকাল দুপুর পর্যন্ত আবদুল্লাহ ছাড়া কেউ ধরা পড়েননি।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পূর্বশত্রুতার জেরে আবদুল্লাহর নেতৃত্বে ইমনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন আসামিরা। কয়েক মাস আগে আবদুল্লাহর সঙ্গে ইমনের ঝগড়া হয় এবং তা সামাজিকভাবে মীমাংসাও করা হয়। কিন্তু আক্রোশ নিয়ে ইমনের পেছনে লেগেছিলেন আবদুল্লাহ। বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন। সবশেষ ২১ জুলাই রাতে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে পেশকারপাড়া স্লুইসগেট এলাকায় আবদুল্লাহর বাড়ির সামনে ছিকু বরফকলসংলগ্ন সড়কে তার ওপর হামলা করা হয়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিমউদ্দিন বলেন, গতকাল সকাল থেকে আবদুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বিকালে তাকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করবে পুলিশ। সেলিমউদ্দিন আরও জানান, মামলার অন্য আসামিদের ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু এজাহারনামীয় আসামিরা আত্মগোপনে থাকায় ধরা যাচ্ছে না। শনিবার হত্যাকা-ে জড়িত সন্দেহে পেশকারপাড়া এলাকার ওয়াসিম ও মিজানকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।