শিরোনাম

South east bank ad

ঈদে মহাসড়কে চাঁদাবাজি-ছিনতাই ঠেকাতে থাকবে র‌্যাবের নজরদারি

 প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   র‍্যাব

ঈদে মহাসড়কে চাঁদাবাজি-ছিনতাই ঠেকাতে থাকবে র‌্যাবের নজরদারি

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

আসন্ন কোরবানির ঈদকে ঘিরে কোরবানির পশুবাহী যানবাহনসহ অন্যান্য পরিবহনে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঠেকাতে মহাসড়কে কঠোর নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

শনিবার (৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক খন্দকার আল মঈন।

প্রতি কোরবানির ঈদেই মহাসড়কে পশুবাহী গাড়ী ছিনতাই, ডাকাতি ও গরু চুরির ঘটনা ঘটে। এবার মহাসড়ক ঘিরে র‌্যাবের কোনো নজরদারি থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহাসড়কে চাঁদাবাজি ডাকাতির ঘটনা আলোচিত বিষয়। কোরবানির ঈদকে ঘিরে এক শ্রেণির চাঁদাবাজ-ডাকাত চক্রের সদস্য সক্রিয় হয়। তারা অস্ত্রের মুখে গরুবাহী ট্রাক ছিনতাই করে, ট্রাক থেকে গরু নামিয়ে নিয়ে যায়। এবারের কোরবানির ঈদকে ঘিরে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা সক্রিয় রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন সক্রিয় রয়েছে। মহাসড়কে এবার নজরদারি থাকবে।

তিনি বলেন, মহাসড়কে চাঁদাবাজি ও ডাকাতির ঘটনায় র‌্যাব বিভিন্ন অভিযানে ডাকাত-চাঁদাবাজ চক্রের পাঁচ শতাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ মধ্যরাতে ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন বালিয়ারপুর মহাসড়কে ডাকাতি প্রস্তুতিকালীন সময়ে আন্তঃজেলা ডাকাতচক্র ‘ঠান্ডা-শামীম বাহিনী’র ডাকাত সর্দারসহ ১১ জনকে দেশি ও বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৩ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাভার থানার বলিয়ারপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতি প্রস্তুতিকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন, ডাকাত দল ‘ঠান্ডা-শামীম বাহিনী’র মূল হোতা মো. শামিম ওরফে সব্দুল (৩০) ও আনিসুর রহমান ওরফে ঠান্ডা (৪৫), মো. সালাউদ্দিন (২৩), ইখতিয়ার উদ্দিন (৩১), সাইফুল ইসলাম (৩৫), জাহাঙ্গীর সরকার (৪০), সজিব ইসলাম (২৫), জীবন সরকার (৩৪), স্বপন চন্দ্র রায় (২১), মিনহাজুর ইসলাম (২০) ও মাধব চন্দ্র সরকার।

এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল একটি, পাইপগান একটি, ওয়ান শুটারগান ২টি, ৬ রাউন্ড গুলি, ম্যাগাজিন একটি, শাবল একটি, রশি ৩টি, লোহার রড একটি, চাপাতি, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, করাত, হাউজ কাটার, ছুরি, টর্চ লাইট, হ্যাক্সো ব্লেড, দা, লেজার লাইট ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ঠান্ডা-শামীম বাহিনীর মূলহোতা শামীম ও তাদের সেকেন্ড ইন কমান্ড আনিসুর ওরফে ঠান্ডা। তাদের নাম অনুসারে বাহিনীর নাম হয় ঠান্ডা-শামীম বাহিনী। তারা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাড়িতে ডাকাতি, সড়ক ডাকাতি, গাছ কেটে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যাত্রীবাহী বাস, গরুবাহী ট্রাক, মালবাহী ট্রাক ও বিভিন্ন মালামালের গুদামে ডাকাতি করতেন।

ঠান্ডা-শামীম বাহিনীর সদস্যরা অন্ধকার রাস্তায় ওৎ পেতে থাকতেন। ডাকাতির জন্য পূর্ব পরিকল্পিত নির্ধারিত স্থানের নিকটবর্তী স্টেশনে ডাকাত দলের সদস্য টার্গেট বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস সম্পর্কে সংকেত দিতেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধির ওপর নজরদারি করে মূল ডাকাত দলের নিকট তথ্য সরবরাহ করতেন। অনুকূল সংকেত পাওয়া মাত্রই ডাকাত দলের মধ্যে গাছ কাটার দায়িত্বপ্রাপ্তরা দ্রুত গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে দিতেন।

অন্যদিকে ডাকাত দলের অপর সদস্যরা বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাসের চালক ও যাত্রীদের অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নিয়ে পালিয়ে যেতেন। যেখানে গাছ কাটার সুযোগ থাকত না সেখানে তারা চালকের চোখে আলো ফেলে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডাকাতি করতেন।

ডাকাতির ঘটনায় শামীম ও আনিসুর ওরফে ঠান্ডা একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়েছেন। জেলহাজতে থাকার সময় তাদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন অপরাধীদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে। পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে ডাকাত বাহিনী গড়ে তোলেন। তাদের বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ২৫ জন। ডাকাতিই হচ্ছে তাদের মূল পেশা।

গ্রেপ্তাররা জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানায়, গ্রেপ্তার সালাউদ্দিন ডাকাতির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আনিসুর ওরফে ঠান্ডা, শামীম ও সালাউদ্দিন একত্রে বসে ডাকাতির মূল পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডাকাতির জন্য নির্ধারিত স্থানে সালাউদ্দিন আগে গোপনে অবস্থান করে তথ্য সংগ্রহ করতেন। ডাকাতি শেষে নির্বিঘ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার বিষয়ে ঠান্ডা-শামীমকে পরিকল্পনা প্রদান এবং ঠান্ডা-শামীমের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হতো।

গ্রেপ্তার ইখতিয়ার উদ্দিন বাহিনীর অন্যতম সদস্য। পেশায় ড্রাইভার ইখতিয়ার বিভিন্ন সময় ডাকাতির ধরন অনুযায়ী মিনি ট্রাক ও মাইক্রোবাসসহ চাহিদা অনুযায়ী যানবাহন সরবরাহ করে নিজে চালকের ভূমিকা পালন করতেন। ডাকাতির আগে ঘটনাস্থল রেকি, ডাকাতির সময় ও ডাকাতি শেষে ঘটনাস্থল থেকে পালানো এবং ডাকাতির মালামাল পরিবহনের দায়িত্ব পালন করতেন।

গ্রেপ্তার সাইফুল পেশায় রাজমিস্ত্রি। ডাকাতি করার সময় তিনি তালা, দেওয়াল, গাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করাসহ ডাকাতির মালামাল বিক্রির দায়িত্ব পালন করতেন।

গ্রেপ্তার মিনহাজুল ও মাধব চন্দ্র ‘ঠান্ডা-শামীম বাহিনী’র তথ্যদাতার কাজ করতেন। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করে স্থানীয় অপরাধীদের সঙ্গে ঠান্ডা-শামীম বাহিনীর যোগাযোগ করিয়ে দিতেন। ডাকাতির আগে রেকি এবং ডাকাতির সময় স্থানীয় অপরাধীদের সঙ্গে অবস্থান করে ডাকাতিতে অংশ নিতেন।

গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর পেশায় ইট ভাটার শ্রমিক, সজীব ও জীবন পেশায় গার্মেন্টস শ্রমিক, স্বপন চন্দ্র পরিবহন শ্রমিক। তারা এসব পেশার আড়ালে ডাকাত দলের সঙ্গে ডাকাতিতে অংশগ্রহণ করতেন।

গ্রেপ্তার আনিসুর ওরফে ঠান্ডা ২০০৪ সাল থেকে ডাকাতিতে জড়িত। ২০১৬ সালে শামীমের সঙ্গে তার পরিচয়ের সূত্রে তারা একত্রে বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করেন। এ বাহিনী গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, বগুড়া, মানিকগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, টাঙ্গাইল এলাকায় অর্ধশধতাধিক ডাকাতি করেছে। ডাকাতি থেকে প্রাপ্ত মালামালের অর্ধেক আনিসুর ওরফে ঠান্ডা ও শামীম ভাগ করে নিত। বাকী অর্ধেক মালামাল অন্যদের কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী ভাগ করে দেওয়া হতো।

সম্প্রতি বগুড়ার শেরপুর এলাকার মহাসড়কে ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। এছাড়াও তারা সাভারের হেমায়েতপুরে একটি ব্যাটারির কারখানায় ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল।

গ্রেপ্তার ‘ঠান্ডা-শামীম বাহিনী’র মূলহোতা শামীমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৭টি ডাকাতি মামলা ও আনিসুর ও

BBS cable ad

র‍্যাব এর আরও খবর: