বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রতিবছরই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান আয়োজন করেন এডিশনাল ডিআইজি শাহ মিজান শাফিউর রহমান
বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার বাঙ্গালী জাতির জন্য যে সব অবদান রেখেছেন তার প্রকৃত ইতিহাস মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে প্রত্যেক বছর আগস্টের শেষ শুক্রবার এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন রংপুর রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি শাহ মিজান শাফিউর রহমান। নাটোর জেলার লালপুর থানার মরদহ গ্রামে এ বছর ২৮ আগস্ট শুক্রবারে এমনই এক আয়োজন করেছিলেন শাহ মিজান শাফিউর রহমান। ৫০০০ এর অধিক লোক এ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়।
এর আগে মুক্তিযুদ্ধের অজানা ঘটনাচিত্র,দূর্লভ ইতিহাস সমৃদ্ধ ৩৪০ পৃষ্ঠার স্মারকগ্রন্থ ‘ গৌরবময় স্বাধীনতা’। মু্ক্তিযু্দ্ধের অবিনাশী চেতনাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দিতে দেশ বরেণ্য লেখকের লেখনীসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের দুর্লভ ৪৮৪ টি আলোকচিত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অজানা ইতিহাস বিকশিত করার প্রয়াস চালিয়েছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি ঢাকা জেলার এসপি শাহ মিজান শাফিউর রহমান।
সৎ, পেশাদার, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির এই পুলিশ কর্মকর্তা বিসিএস (পুলিশ) এর ২০তম ব্যাচের মাধ্যমে ২০০১ সালে বাংলাদেশ পুলিশের এএসপি হিসেবে যোগদান করেন। দিনাজপুর জেলা, সিএমপি, র্যা ব, এসবি ও যশোর জেলায় দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা এই কর্মকর্তার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে রয়েছে বহু প্রশংসা আর পদক। কর্মদক্ষতা ও সেবায় বাংলাদেশ পুলিশের বিপিএম, পিপিএম পদক লাভ করেন তিনি।
এছাড়া পরপর দুইবার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে বিশেষ অবদান রাখেন তিনি। সেখানে ইনসাইড কমান্ডার ও ডেপুটি সেক্টর পুলিশ কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন ‘জাতিসংঘ শান্তি পদক’।
ঢাকার রমনা জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) থেকে শাহ মিজান শাফিউর রহমান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন । সেখান থেকে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার । বর্তমানে কর্মরত রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে। এর আগে কেবল সততা আর সাহসকে আশ্রয় করেই সন্ত্রাসের জনপদ বলে পরিচিত ফেনী ও লক্ষ্মীপুরের গড ফাদারদের রাজত্ব ভেঙে দিয়ে সেখানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে পথে এনে আলোচনায় আসেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃশ্য ম্যুরাল স্থাপনের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী মিল ব্যারাক পুলিশ লাইন্সে নির্মান শুরু করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। এ ছাড়াও জাতির গৌরবের স্মারক জাতীয় স্মৃতিসৌধে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের মহান জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবস এবং বিজয় দিবসে বর্নাঢ্য মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেও প্রশংসা কুড়ান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান।স্মৃতিসৌধে আসা নারী ও শিশুদের মাঝে সুপেয় পানি সরবরাহ,নারী ও শিশুদের জন্যে ভ্রাম্যমান টয়লেটের ব্যবস্থাপনা,রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন করে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হন শাহ মিজান শাফিউর রহমান।
পাশাপাশি ঢাকা –আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত বিশাল এলইডি স্ক্রীনে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষন ও দুর্লভ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে সাধারণ জনতার মাঝে সাড়া ফেলে দেন সেসময়ের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান।
শাহ মিজান শাফিউর রহমান নাটোর জেলার লালপুর থানার মরদহ গ্রামের শিক্ষক মরহুম হাফিজুর রহমানের ছেলে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগ থেকে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম বর্তমানে ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভূগোল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। ব্যাক্তি জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।



