শিরোনাম

South east bank ad

সংকটকালীন সময়ে সর্বোচ্চ মানবিক পুলিশিংয়ের নজির গড়েছেন নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান

 প্রকাশ: ২০ জুন ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   পুলিশ

নীলফামারী জেলার এসপি হিসেবে ১০ জানুয়ারী ২০২০ ইং তারিখে নীলফামারীতে যোগদান করেন ২৪ তম বিসিএসের চৌকষ এবং মানবিক অফিসার মোখলেছুর রহমান । যোগদানের কিছুদিনের মধ্যেতার নেতৃত্বে গ্রেফতার করা হয় নিষিদ্ধ সংগঠন আল্লাহ’র দলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারীসহ দু’জনকে। নাশকতার পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন আল্লাহ দলের এই দুই শীর্ষ নেতাসহ কয়েকজন একত্রিত হন নীলফামারী জলঢাকা পৌরসভার বগুলাগাড়ী বারঘড়িপাড়ার মিলনের বাড়িতে। এমন খবর পেয়ে এসপি মোখলেছুর রহমান এর নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় সংগঠনের সমগ্র বাংলাদেশের দায়িত্বে থাকা তত্ত্বাবধায়ক সাইফুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের ছাড়ারপাড় গ্রামের বাড়ি থেকে দলটির নীলফামারী জেলা প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা জিকরুল আহম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই স্থান থেকে সংগঠনের কাজে ব্যবহৃত চারটি মোবাইল ফোন সেট ও সাতটি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সুপারের ইন্টেলিজেন্স লেড পুলিশিংয়ের কারণে দ্রুত অপরাধের রহস্য উদঘাটন, অপরাধী গ্রেফতার, অপরাধ প্রশমণ করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ কৌশলের ফলে কমেছে অপরাধমূলক কর্মকান্ড এবং এড়ানো গেছে সংঘাত। অপরাধ সংঘটিত হবার আগে তথ্য পেয়ে সেটিকে নিস্তেজ করে দেয়ায় পরিকল্পনা করেন মোখলেছুর রহমান। জনগনের কাছে তার চাওয়া, অপরাধ ঘটার পরে নয়, আগে তথ্য দিয়ে সহযোগীতার আহবান জানান সকলের প্রতি, কারণ আগে তথ্য থাকলে সেটি নিস্তেজ করে দেয়া যায়। সংকটকালীন সময়ে সর্বোচ্চ মানবিক পুলিশিংয়ে নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার নীলফামারীতে অপরাধ প্রবণতা অনেকটাই কমিয়ে এনেছেন জেলা পুলিশ। মানবিক কার্যক্রমে মানুষের পাশে থাকার প্রত্যয়ে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন জেলার পুলিশ সদস্যরা। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সহযোগিতার জন্য নীলফামারী জেলা পুলিশের উদ্যোগে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়। জেলা পুলিশের ২০ সদস্য নিয়ে এ টিম গঠন করেন নীলফামারী পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান পিপিএম, বিপিএম। এই টিম করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং করবে। গঠিত এই কুইক রেসপন্স টিম করোনা আক্রান্তের প্রাথমিক সহযোগিতা দিতে কাজ করবে। জনগণের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সেবায় নিয়োজিত সদস্যদের নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও প্রস্তুত নীলফামারী জেলা পুলিশ। এই টিমের সদস্যদের হাতে কলমে সেবাদানের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ার ব্যাপারে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে।এই টিম প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা সামগ্রী রয়েছে। জেলা পুলিশের গাড়ি বহরে নতুন সংযোজিত হয়েছে সুসজ্জিত আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স। জেলা সদরের পাশাপাশি জেলার প্রতিটি থানায় রয়েছে কুইক রেসপন্স টিম। এছাড়া সন্দেহভাজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত পুরুষ ও নারী পুলিশ সদস্যদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে পৃথক দু’টি আইসোলেশন ওয়ার্ড। নীলফামারী পুলিশ লাইন্সে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে স্থাপিত ওয়ার্ড দু’টিতে সেবা প্রদানের জন্য সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসকসহ অন্য কর্মীরা। পরিচয়হীন উদ্ধার হওয়া এক নবজাতকের দায়িত্ব গ্রহণ, করোনাকালীন সময়ে সংকটে পড়া মানুষদের মধ্যরাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়ে আসা, জাতীয় সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে খাদ্য সহায়তা চেয়ে ফোন করা ব্যক্তিদের পরিচয় গোপন রেখে খাদ্য পৌঁছে দেয়া, হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা এবং পর্যবেক্ষণে রাখা, প্রয়োজন অনুসারে কোয়ারেন্টিনে থাকা পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো, করোনা আক্রান্ত রোগীদের খোঁজখবর রাখা ও তাদের পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ, করোনায় এবং উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিদের দাফন কার্য সম্পন্ন করা হচ্ছে পুলিশ সুপারের নির্দেশনা এবং সরাসরি তত্বাবধানে। করোনা সচেতনতায় প্রচারণামূলক লিফলেট, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানেটাইজার বিতরণ, সড়ক জীবানুনাশক, অবরুদ্ধকালীন সময়ে জেলায় প্রবেশ ও বহির্গমণ বন্ধে বিশেষ চেক পোষ্টের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা, সৈয়দপুর বিমান বন্দর ও উত্তরা ইপিজেডে স্বাস্থ্য বিধি পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ, সংকটকালীন সময়ে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত রাখতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে কৃষি শ্রমিক প্রেরণ করছে জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপারের সরাসরি নির্দেশনায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে পিকআপ বা ট্রাকে যাত্রী পরিবহণ করা হচ্ছে কিনা সেটি যাচাই করা হচ্ছে। পাশাপাশি যাত্রীবাহী বাসগুলোতে স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে কিনা কিংবা অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া হয়েছে কিনা সেটি যাচাই করা হয়। ক্লাস্টার অনুযায়ী তিনটি টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকে এখানে। অনুরূরপ ভাবে পুলিশ অভ্যন্তরীণ এবং আন্তঃজেলা রুটের ২২টি চেকপোস্টে ক্লাস্টার অনুসারে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন করোনা থেকে মানুষকে সুরক্ষায়। কুষ্টিয়া জেলার ১১জন বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ তিন মাস থেকে এখানে আটকা পড়ে ছিলেন। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি লকডাউনের কারণে বাহিরে যেতে না পারায় আয় উপার্জন বন্ধ হয়ে পড়ে তাদের। চরম এই মুহূর্তে তারা নিজ জেলায় ফিরতে আকুতি জানাচ্ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক এগিয়ে আসেন এসপি মোখলেছুর রহমান । তাদের খাদ্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজ খরচে কুষ্টিয়ায় প্রেরণ করেন তিনি। উত্তরা ইপিজেডে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করা, সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখা এবং কেউ অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্যোগ নেয়া। একই ভাবে বিমানবন্দরও পর্যবেক্ষণ করা। করোনাকালীন ২০ হাজার কৃষি শ্রমিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন জেলায় তারা আবার ফিরেও এসেছেন এবং ভালো রয়েছেন এটা আমাদের সফলতা। এত সংখ্যক শ্রমিক আর অন্য কোন জেলা থেকে প্রেরণ করা হয়নি। প্রতিটি ভালো কাজে জেলা পুলিশ রয়েছে এবং থাকবে বলে প্রত্যাশা পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমানের।
BBS cable ad

পুলিশ এর আরও খবর: