ওসি সালাউদ্দিন ছিলেন পরিবারের ভরসা

হলি আর্টিজানে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় নিহত বনানী থানার সাবেক ওসি সালাউদ্দিনের বড় ভাই রাজিউদ্দীন বলেছেন, সালাউদ্দিন ছিল আমাদের পরিবারের খুঁটি। খুঁটি ভেঙে পড়া ঘর কেমন থাকে, সেটা তো কাউকে বলে বোঝাতে হবে না। সালাউদ্দিনের মৃত্যু যেমন পরিবারের জন্য বড় ধাক্কা, তেমনি সেটা পরিবারের সবচেয়ে বড় গৌরবেরও অংশ। দেশে একটি ভয়াবহ জঙ্গিবাদের শিকার ছিল সে। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জনগণ জানতে পেরেছে যে দেশে এ ধরনের জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। তার মৃত্যুর পরই জোরেশোরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শুরু করে পুলিশ।
রাজিউদ্দিন বলেন, সালাউদ্দিনকে হারিয়ে আমাদের পুরো পরিবার ভেঙে পড়েছে। ২০০৯ সাল থেকে পরিবারের সবই সে দেখতো, ভাই-বোনদের যাবতীয় বিষয় সে দেখতো। সংসারটাকে যে দেখতো সে হঠাত্ করেই চলে গেলে যে অবস্থা হয় সেই অবস্থায় আমরা আছি।
তিনি আরো বলেন, ঈদে সবার জন্য জামা-কাপড় দিতো সে। এলাকার লোকজনকেও দিতো। এবারো অনেকে এসে ফিরে গেছে, আমরা কিছুই দিতে পারিনি।
প্রসঙ্গত সালাউদ্দিন খানের বাড়ি গোপালগঞ্জ শহরে। এলাকার মানুষের কাছে ‘লুই’ নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। সালাউদ্দিনের বাবা আবদুল মান্নান খান ছিলেন গোপালগঞ্জ এসএম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সাত ভাই আর চার বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। বাবার মৃত্যুর পর তিনিই পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। সালাউদ্দিন ১৯৮৪ সালে স্টার মার্কস নিয়ে শহরের এসএম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানেজমেন্টে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ১৯৯০ সালে তিনি পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। চাকরি জীবনে তিনি সুদান ও কসোভোতে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে যান। তিনি জাতিসংঘ শান্তি পুরস্কারও পান। ব্যক্তিজীবনে তিনি এক মেয়ে ও এক পুত্র সন্তানের জনক। স্ত্রী রেমকিম গৃহিণী।