ডিআইজি হাবীবের চেষ্টায় ঘর পেল বেদে সম্প্রদায়

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
সমাজে অবহেলিত বেদে জনগোষ্ঠীর জন্য সাভারের উত্তরণপল্লীতে দুর্যোগসহনীয় নতুন ৪টি ঘর হস্তান্তর করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে উত্তরণ ফাউন্ডেশনের সার্বিক সহায়তায় ও পাকিজা গ্রুপের অর্থায়নে সাভার সদর ইউনিয়নের বংশী নদীর পাড়ে উত্তরণপল্লীতে এই ৪টি নবনির্মিত ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এর আগে এই পল্লিতে ৫০টি ঘর দেওয়া হয়েছে। আজ পাকিজা গ্রুপের অর্থায়নে আরও ৪টি ঘর প্রদান করা হলো।
এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেদে সম্প্রদায়ের জন্য নতুন করে আরও ৩৫টি ঘরের বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ সময় তিনি ডিআইজি ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বেদে সম্প্রদায়ের ঠিকানার জন্য যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
অনুষ্ঠানে ডিআইজি হাবীবুর রহমান উপস্থিত থেকে বলেন, এখানের এই জায়গাটি অনেক নিচু ছিল। এখানে প্রায় দুই কোটি টাকার মাটি ফেলেছি। এর মধ্যে আপনাদের অনেকের সহযোগিতা রয়েছে, যেমন আমাদের মন্ত্রী মহোদয়ও ৩০ লাখ টাকা দিয়েছেন। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। যদিও আমি এই কাজটি শুরু করেছি কিন্তু এর কৃতিত্ত সবার, বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং আমাদের এখানকার সংসদ সদস্য ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের।
এগুলোর বাইরেও মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এবং সিরাজদীখানে ২৫টি ঘর আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে করে দিয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ১৬৩টি বেদে পরিবার বসবাস করেন। তাদের কবরস্থান নেই, সেখানেও আমাদের ব্যক্তিগত অর্থায়নে আমি জায়গা কিনে কবরস্থান করে দিয়েছি। একই সঙ্গে মসজিদের জন্য জায়গা কিনে দিয়েছি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী যে ২৬ হাজার ঘর উদ্ভোধন করেছেন তার মধ্যে আমার সুপারিশে বেদে সম্প্রদায়ের গৃহহীনদের মাঝে বরিশাল বাবুগঞ্জ জেলা ও ঝিনাইদহ কালিগঞ্জ জেলায় ৭১টি ঘর প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ ও শেরপুরসহ আরও কয়েকটি জেলার জন্য আমি সুপারিশ করব মন্ত্রণালয়ে।
ডিআইজি বলেন, আপনারা প্রশ্ন করবেন দেশের সব জায়গায় তো প্রশাসন রয়েছে। তাহলে তারা কেন পায় না? নাকি তাদেরকে দিচ্ছে না? আসলে তা নয়, এই সম্প্রদায়ের লোকেরা তারা নিজেদেরকে ছোটজাত মনে করেন। তারা যে এই সরকার এবং এই দেশেরই মানুষ সেটি তারা নিজেরা বুঝেন না। এ জন্য ঘরের বা নাগরিক সুবিধার জন্য যে ইউপি চেয়ারম্যান পর্যন্ত যেতে হবে সেটিই তারা সাহস পায় না। সেই সচেতনতা টুকুও তাদের মাঝে নেই।
তিনি বলেন, আমরা সাভার থেকেই সেই আন্দোলন শুরু করেছি। এখানে তাদের জন্য কারিগরি ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। তারা সেখানে কম্পিউটার প্রশিক্ষণসহ নানা ট্রেনিং নেয়। আমাদের এখানে একটা ছোটখাটো ইন্ডাস্ট্রিও রয়েছে। যেখানে তারা প্রশিক্ষণ এবং কাজ করছেন। এখানে উপস্থিত পাকিজা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের অংশগ্রহণ আমাদের জন্য অলংকৃত করেছে। তিনি আমাদেরকে সামগ্রিক সহযোগীতা করার কথা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আপনারা নিজেদের অবস্থান বুঝতে শিখবেন। নিজেদের অধিকার আদায় করার জন্য যেখানে যা করা দরকার সেটুকু করবেন। সেটি যেন হয় সুষ্ঠু ও বৈধভাবে। আমরা আপনার পক্ষে আছি, মন্ত্রী মহোদয়ও আছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার, সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম, সাভার পৌর মেয়র আব্দুল গণি, পাকিজা গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।