অপহরণকারী চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার ও ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ

এক গৃহপরিচারিকার সাথে মিথ্যা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে অপহরণ করে ধর্ষণের পর মুক্তিপণ আদায় চেষ্টার অভিযোগে চক্রের ০৪ জনকে গ্রেপ্তার ও ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
গতকাল রবিবার (১১ এপ্রিল) কোতোয়ালী থানা সূত্রে জানা যায়, ওসির মোবাইলে আসা একটি কলের সূত্র ধরে একজন নারীকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত করে আকবরশাহ থানাধীন মীর আউলিয়া মাজারের পাহাড় ও শাপলা আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপহরণকারী চক্রের সদস্য কালু মিয়া প্রকাশ রাজু (১৯), মোঃ সোহেল মিয়া (১৯), মোঃ দুলাল বাবুর্চি (৩৭), মোঃ তারেক আকবর (১৯) দেরকে আটক করে ও ভিকটিমকে উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে, এসি (কোতোয়ালী) নোবেল চাকমা বলেন, ধৃত আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা ভিকটিমকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির কথা স্বীকার করে।
তিনি আরও বলেন, আসামীরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তাদের মধ্যে আসামী কালু সরল প্রকৃতির মেয়েদেরকে টার্গেট করে তাদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। পরবর্তীতে প্রেমের সম্পর্কের টানে ভিকটিমদেরকে পাহাড়ে নিয়ে যায় এবং একই চক্রের একজন দুষ্কৃতিকারী ভিডিও ধারনণ করে।
তারপর ৫-৬ জন অতর্কিত দলবদ্ধভাবে গিয়ে ভিকটিম ও কথিত প্রেমিক কালুকে একটি রুমে আটক করে রাখে। এইভাবে আসামি কালু ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে ও মৃত্যুর হুমকি প্রদান করে মুক্তিপণ দাবী করে মুক্তিপণ আদায় করে। মুক্তিপণ আদায় শেষে ভিকটিম তথা কথিত প্রেমিকাকে ছেড়ে দেয়।
কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন জানান, ভিকটিম কোতোয়ালী থানাধীন রহমতগঞ্জ জিতু নামক ব্যক্তির বাসায় গৃহ পরিচারিকা হিসাবে কাজ করেন, গত ০৯ এপ্রিল দুপুরে কাজ শেষ করে রহমতগঞ্জ রোডে আসলে কথিত প্রেমিক কালু মিয়া ও কালু মিয়ার চাচাত ভাই মোঃ সোহেল মিয়া (১৯) কৌশলে ভিকটিমকে একটি সিএনজি’তে তুলে মীর আউলিয়া মাজারের পাহাড়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
সেখানে মোবাইলে ভিডিও ধারণকারী দুলাল বাবুর্চি তার মোবাইল ফোনে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের ডেকে তারেক আকবর (১৯), মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ (২২), আসামী মোঃ শাহদাত হোসেন(২৮), আসামি নয়ন (২৮) উক্ত স্থানে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সকলে মিলে শাপলা আবাসিক মডেল পল্লী নবাব মিয়ার বাড়ীতে একটি রুমে আটক করে ভিকটিমের নিকট হতে ৫,০০,০০০/-(পাঁচলক্ষ ) টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
আসামি তারেক তার সহযোগী শাহাদাত এর মোবাইল থেকে ভিকটিমের বোন সুলতানা আক্তার ও ভাই তাজ ইসলাম এর মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণের টাকা দাবি করে।
ওসি নেজাম উদ্দিন আরও জানান, ভিকটিমের ভাষ্যমতে শনিবার রাতে আটকে রাখা রুম হতে বের করে অন্যত্র নিয়ে যায এবং সেখানে আসামী কালু মিয়া ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে।
ভিকটিমকে উদ্ধারের পর এই ব্যাপারে বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করলে আসামীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৭/৮/৯(১)/৩০ ধারায় একটি মামলা রুজু হয়।