আ.লীগের বেশির ভাগ নেতা এলাকায় ঈদ করবেন

র্বাচনী এলাকার জনগণের সঙ্গে বেশির ভাগ আওয়ামী লীগ নেতা কোরবানির ঈদ উদযাপন করবেন। আবার যেসব নেতা ঈদে এলাকায় থাকতে পারবেন না, তারা এরই মধ্যেই নির্বাচনী এলাকা সফর করে এসেছেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, ঈদের আগে দেশের প্রায় অর্ধেক জেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বন্যায় সাধারণ জনগণ এখনো তাদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেনি। তাই দুর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড।
নেতারা জানান, ঈদে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দল থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাই বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় নেতা নিজ জেলায় ঈদ উদযাপন করবেন। সেখানে তারা দলীয় বিভিন্ন ঈদ-পুনর্মিলনীতে অংশ নেবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। ঈদের দিন সকালে তিনি দলীয় নেতাকর্মী, সাধারণ জনগণ, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকায় ঈদের নামাজ পড়ে নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে যাবেন। ঈদের আগে তিনি নির্বাচনী এলাকা সফর করে এসেছেন।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাহারা খাতুন ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। ঈদের দিন সকালে তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গণভবন যাবেন।
সভাপতিণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ঈদের নামাজ পড়বেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্বাচনী এলাকা সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে ঈদের নামাজ পড়ার কথা রয়েছে।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ঈদের নামাজ পড়বেন। আরেক সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান ঢাকায় থাকবেন। তিনি জানান, ঈদের আগে গোপালগঞ্জ ঘুরে এসেছেন। এ সময় দলের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগ দিয়েছেন তিনি। ঈদের পর আবার যাবেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ কুষ্টিয়ায় ঈদের নামাজ পড়বেন। এক সপ্তাহ তিনি নির্বাচনী এলাকায় থাকবেন। সেখানে তিনি দলীয় বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশ নিবেন।
আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনিও ঈদে নির্বাচনী এলাকা চাঁদপুরে থাকবেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ঢাকায় থাকবেন। তার নির্বাচনী এলাকা ঢাকার মোহাম্মদপুর-আদাবর।
সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন নেত্রকোনায়, বি এম মোজাম্মেল হক শরীয়তপুরে, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম মাদারীপুরে, এ কে এম এনামুল হক শামীম শরিয়তপুরে ঈদের নামাজ পড়বেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জয়পুরহাটে থাকবেন।
এবার বন্যায় দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দিনাজপুরের বিরল উপজেলা। এ এলাকার সংসদ সদস্য সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বন্যাকালীন টানা কয়েক দিন দুর্গত মানুষের পাশে ছিলেন তিনি। তিনি বরাবরই দিনাজপুরের নির্বাচনী এলাকার মানুষের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন। এবারও ঈদের আগে-পরে প্রায় এক সপ্তাহ এলাকায় থাকবেন তিনি।
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এখন তাদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেনি। তাদের পাশে দাঁড়াতেই আমরা এলাকায় থাকব। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সব সময়ই তাদের পাশে আছেন।’
আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল চট্টগ্রামে থাকবেন।
আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ ঢাকায় থাকবেন। তিনি বলেন, ঈদে যেহেতু ঢাকায় থাকবো সেদিন প্রধানমন্ত্রীর সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গণভবন যাবো।
কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী ঈদে ঢাকায় থাকবেন। ঈদের পরে তিনি নির্বাচনী এলাকায় যাবেন। তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন পটুয়াখালীতে থাকবেন। এরই মধ্যে তিনি নির্বাচনী এলাকায় চলে গেছেন। সেখানে নিয়মিতই তিনি দলীয় বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ করছেন। দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ঢাকায় থাকবেন। ঈদের পরে তিনি মাদারীপুরের যাবেন।
বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। ঈদের দিন সকালে তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যাবেন।
আইনবিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম পিরোজপুরে থাকবেন।
যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ ঢাকায় থাকবেন। ঈদের আগে তিনি নির্বাচনী এলাকা লক্ষীপুর ঘুরে এসেছেন। সেখানে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন বলে জানান হারুনুর রশীদ।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল নেত্রকোনায় থাকবেন। সেখানে তিনি নেতাকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ঈদের নামাজ পড়বেন। উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ঢাকায় থাকবেন।
আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখের কথা শুনব। দলের সব নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলের জন্য কাজ করার কেন্দ্রের নির্দেশনা আমরা নিয়ে যাচ্ছি। কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো শক্তির বিরুদ্ধে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘সেখানে যদি সমাধান করা যায় করব। আর না হলে দলের হাইকমান্ডের কাছে জানাব। তারাই সমাধান করবে।’
দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, আমাদের নেত্রীর নির্দেশে গরীব-দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা স্ব স্ব এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন।