আলু ছাড়া এখন আমাদের একদিনও চলে না
মির্জা ইয়াহিয়া:
আলু বাঙালির জনপ্রিয় এক খাবার। এর চাষ কিন্তু আমাদের দেশে উদ্ভব হয়নি। আলু চাষের প্রচলন ইউরোপে। সেখান থেকেই আসে ভারতীয় উপমহাদেশে। পর্যায়ক্রমে তা এই অঞ্চলে অপরিহার্য কৃষিজ ভোগ্যপণ্যে পরিণত হয়।
আলু ছাড়া এখন আমাদের একদিনও চলে না। সব তরকারিতেই আলুর ব্যবহার লক্ষণীয়। আলু মাছেও চলে, মাংসেও চলে। আবার শাক-সবজির সাথেও ভালো কেমিস্ট্রি হয়ে যায় আলুর। মুখে রুচি না থাকলে অনেকেই আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে থাকেন। আবার স্বল্পআয়ের মানুষের ক্ষেত্রে ভাতের সাথে আলু ভর্তা হলেই তাদের দিন চলে যায়। আলুর দম, আলুর ডাল অনেক মজাদার খাবার (এটা আমার স্ত্রী আর মেয়ের অত্যন্ত প্রিয়)। আলু-ভাত রান্নারও কিছু প্রচলন আছে। আলু দিয়ে সুস্বাদু বেশকিছু খাবারও তৈরি হয়। এটি ব্যবহৃত হয় পুরি-সিঙ্গারার মতো নাস্তার আইটেমে। আলুর পরোটা স্পেশাল এক খাবার। আলু দিয়ে মিষ্টি তৈরি করা যায়। আলু দিয়ে পিঠা-পায়েস কিম্বা কেক বানানোর পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেন অনেকে। উত্তরবঙ্গের (বিশেষ করে দিনাজপুরের) বিখ্যাত এক খাবার ডিম দিয়ে আলুর ডাল রান্না।
অন্যদিকে মানুষের শরীরের ক্যালরির যোগান হিসেবে বিশাল ভূমিকা রাখে। তার কারণে সেই আশির দশক থেকে বিভিন্ন সময় আমাদের রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ভাতের বদলে আলু খাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। চালের দাম যখন বেশি হয়ে যায়, তখন এই ঘোষণা বেশি আসে। এবার কিন্তু পরিস্থিতি অন্যরকম। আলুর কেজিও ৫০ টাকা পর্যন্ত হয়ে গেছে। সরকার দাম ৩০-৩৫ টাকার মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে। এর প্রতিবাদে আবার কোথাও কোথাও পাইকারি ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। আশা করি, আলু নিয়ে বাজারের এই পরিস্থিতে ঠাণ্ডা হবে। সবার জন্য সহনীয় কোনো পথ উন্মুক্ত হবে। তবে দাম বেশি হোক কিম্বা কম হোক আলু খাওয়া থেকে বিরত থাকে না আমাদের দেশের মানুষ। এ অবস্থায় আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে- এই প্রত্যাশা থাকলো।
আমার ব্যক্তিগত একটি বিষয় দিয়ে শেষ করবো। ডাক্তারের পরামর্শের আমি আলু খাই না বললেই চলে। কারণ আলু সুগার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। তাই আলু খাওয়ার ক্ষেত্রে শারিরীক অবস্থা বিবেচনা করতে হবে। যারা মুটিয়ে যাচ্ছেন, উচ্চ রক্তচাপ আছে, হৃদরোগ আছে- তাদের জন্যও বেশি আলু খাওয়া ভালো নয়। আমার নিয়মিত ডাক্তার এ কথাই বলেন। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
(মির্জা ইয়াহিয়া ,সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং জনসংযোগ ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান। সিটি ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ, এর ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া।)