পালিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস’
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
‘কোভিড-১৯ পরবর্তী অন্তর্ভূক্তিমূলক বিশ্ব গড়তে প্রয়োজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। বিশ্ব জুড়ে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধিতার শিকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও সুরক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে উদযাপন হচ্ছে দিবসটি।
বিশ্বে এ বছর ৩০তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালন করা হলেও বাংলাদেশ এবছর ২৩তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উদযাপন করছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী নারী, পুরুষ ও হিজড়াসহ বাংলাদেশে মোট প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা ২৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৫৮ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১১ সালের জুন মাসে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতিবন্ধীতার হার ১৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস (বিবিএস) পরিচালিত এক হাউজ হোল্ড জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে এই প্রতিবন্ধীতার হার ৯.০৭ শতাংশ। ধরন অনুযায়ী মানুষের মধ্যে প্রায় ১২ ধরনের প্রতিবন্ধিতা শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো, অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারস, শারীরিক, মানসিক অসুস্থতাজনিত, দৃষ্টি, বাক প্রতিবন্ধীতা, বুদ্ধি, এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা, সেরিব্রাল পালসি, ডাউন সিনড্রোম, বহুমাত্রিক এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধিতা।
প্রতিবন্ধী দিবসকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ তাঁর বাণীতে বলেন, “সকল প্রকার শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা মানব বৈচিত্রেরই অংশ। তাই, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে তাদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করা খুবই জরুরি। সমাজের অবিচ্ছেদ্য এ অংশকে সকল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যথাযথ প্রশিক্ষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তবেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।”
প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে দিবসটি উপলক্ষে বিশ্বের সকল প্রতিবন্ধী মানুষকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯ (১) নম্বর অনুচ্ছেদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ এদেশের সকল নাগরিকের সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা হয়েছে। তাই, দেশের প্রতিবন্ধী জনগণের সর্বিক উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের জনগণ, সংশ্লিষ্ট সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।”
এ দিবস উপলক্ষে প্রতিবছর সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সভা, সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তবে, কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের কারণে গতবছর দিবসটি ব্যাপকভাবে উদযাপনের সুযোগ হয়নি। এবছরও বাংলাদেশ সীমিত আকারে দিবসটি উদযাপন করছে।
ডিজ্যাবিলিটি এলায়েন্স অন এসডিজিস বাংলাদেশ এবং ইউএনডিপি ‘প্রতিবন্ধী দিবস ২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে ‘কোভিড-১৯ পরবর্তী অন্তর্ভূক্তিমূলক বিশ্ব গড়তে প্রয়োজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করেছে। ৪ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
এ অনুষ্ঠানে উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ, সরকারের মন্ত্রী, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশী সংস্থার প্রতিনিধিসহ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।