শিরোনাম

South east bank ad

রফতানি আয়ে মন্দাভাব চলছে

 প্রকাশ: ০৩ অগাস্ট ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   আমদানী/রপ্তানী

রফতানি আয়ে মন্দাভাব চলছে

দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করার আরেক বড় মাধ্যম হচ্ছে রফতানি আয়। অথচ এই খাতটিতেও ধারাবাহিকভাবে মন্দাভাব চলছে। সদ্য বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ পণ্য রফতানি করে ৫ হাজার ৫২৮ কোটি ৮১ লাখ ডলার আয় করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ০.৪৯ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রফতানি আয় হয়েছিল ৫ হাজার ৫৫৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.৬৭ শতাংশ। অথচ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সরকারের বেঁধে দেওয়া ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৬১ কোটি ডলার কম। বৈশ্বিক রাজনৈতিক অস্থিরতা, রফতানি গন্তব্যে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকট এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে চলতি অর্থবছরের রফতানি আয়ে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর বাইরে গত প্রায় তিন বছর ধরে দেশে পণ্যমূল্য অস্বাভাববিক হারে বেড়েছে। এ জন্য মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে বাড়তে এখন দুই অঙ্কের কোটায় ঠেকেছে। যার কারণ দেশের সাধারণ মানুষকে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। এ অস্থিরতার কারণে পণ্যমূল্য দফায় দফায় বেড়েই চলেছে। ফলে মূল্যস্ফীতির হার যে আরও বাড়বে-সেটি নিশ্চিত করেই বলা যায়।

এ ছাড়া দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ কমে গেছে। বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কারণে দেশে নতুন কর্মসংস্থানও একরকম থমকে গেছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বিনিয়োগ কম হওয়া ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়ার কারণে বেকারত্বের হার বাড়বে, একই সঙ্গে দারিদ্র্যের হারও বাড়বে।

শোধ দিতে হবে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ ও সুদ : বর্তমানে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে নেওয়া ঋণের স্থিতি ছিল ১০০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন (১০ হাজার ৬৪ কোটি) ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে) এ ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭ হাজার ৪০ কোটি টাকা। দেশের মোট বিদেশি ঋণের ৭৯ শতাংশই নিয়েছে সরকার। বাকি ২১ শতাংশ ঋণ নিয়েছে বেসরকারি খাত। চলতি বছর থেকে ওই বিদেশি ঋণের বেশিরভাগই শোধ দিতে হবে। তাই এটিও অর্থনীতির জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, আগ থেকেই দেশের অর্থনীতিতে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ রয়েছে মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিম্নমুখিতা, রেমিট্যান্স কমে যাওয়া, রফতানি আয় কমে যাওয়া। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এসব চ্যালেঞ্জ আরও জটিল হলো।

এমনিতেই দেশে এখন ১০ শতাংশের মতো মূল্যস্ফীতি রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে। তবে অর্থনীতির এই সংকট এক দিনে হুট করে সৃষ্টি হয়নি। এখন অর্থনৈতিক সংকট গভীর থেকে গভীর হলেও নীতিনির্ধারকরা আমলে নিচ্ছে না। অর্থনীতি নিয়ে সরকারের কোনো মাথা ব্যথা আছে বলে মনে হয় না। কারণ সরকার এখন দেশের সংকট কীভাবে মেটাবে সেদিকেই সব নজর দিয়ে রেখেছে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে অর্থনীতির সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে-এ দিকে কোনো নজর নেই।


BBS cable ad

আমদানী/রপ্তানী এর আরও খবর: