নতুন ডিজাইনের পাটপণ্য নজর কাড়ছে

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার প্রবেশমুখ থেকে হাতের ডানদিকে গেলেই চোখে পড়বে জুট ডাইভার্সিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) একটি প্যাভিলিয়ন। সেখানে পাটপণ্য প্রস্তুত ও বাজারজাতকারী ২৫টি প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে। তারা সবাই মাঝারি উদ্যোক্তা। তাদের অনেকেই ঢাকার বাইরে থেকেও অংশ নিয়েছেন। সেখানে ব্যাগ, পাটর্স, জুতাসহ বৈচিত্র্যময় পাটপণ্যের পসরা। এর প্রায় সব স্টলেই ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড় দেখা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্য মেলা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
এ ছাড়া জনসচেতনতা ও পাটপণ্যের ব্যবহার উদ্বুদ্ধকরণে প্রতিটি পণ্যে রয়েছে আলাদা আলাদা স্লোগান। পাটের সোনালি অতীত ফিরিয়ে আনতেই কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে বৈচিত্র্যপূর্ণ এসব পাটপণ্যের পরিচিতি বাড়াতে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের মেলায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করে আসছে জেডিপিসি।
বিক্রেতারা বলছেন, নান্দনিক এসব পাটপণ্য এরই মধ্যে দেশ ও দেশের বাইরে ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে সমর্থ হয়েছে। এ কারণে পুরনো ডিজাইনের পণ্যের পাশাপাশি নতুন ডিজাইন ও আকারের পণ্যের সমাবেশ ঘটিয়েছেন তারা। তারা জানান, প্রথম দিকে বেচাকেনার গতি একটু কম থাকে। তবে ১০ তারিখের পর থেকে গতি বাড়বে। স্টলগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, পাটের তৈরি বিভিন্ন ব্যাগ ছাড়াও রয়েছে হরেক রঙ ও ডিজাইনের মানিব্যাগ, খেলনা, কার্পেট, বেডকভার, জুতা, ঝুড়ি, আসবাব ও দরজা-জানালার পর্দা। এসব পণ্যের দাম ৫০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।
প্যাভিলিয়নের প্রবেশমুখেই ফরিদপুরের হোলি ক্রাফট অ্যান্ড ফ্যাশনের স্টল। এতে বাজারের ব্যাগের মধ্যে লেখা রয়েছে 'আমি পাট ব্যবহার করি, পরিবেশ রক্ষা করি।' রয়েছে জনসচেতনতামূলক অনেক স্লোগান সংবলিত হ্যান্ডব্যাগ। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কামাল হোসেন সমকালকে জানান, তারা অর্ডারের কাজই বেশি করেন। এ ছাড়া জেডিপিসির সহায়তায় দেশ এবং দেশের বাইরের বিভিন্ন মেলায় অংশ নেন। মেলায় অংশ নেন মূলত বড় অর্ডার ধরার জন্য। বর্তমানে শ্রীলংকায় প্রতি মাসে ৫ হাজার জোড়া স্লিপার রফতানি করছে তার প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া সুইডেন ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে তার প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ক্রেতা রয়েছে।
নরসিংদীর
সোনালি বয়ন শিল্পের স্বত্বাধিকারী আবদুল মান্নান জানান, এ ব্যবসায় জড়িত ৩৫ বছর ধরে। তবে পাটের দুর্দিনে তিনিও ভুক্তভোগী ছিলেন। এখন জেডিপিসির সহায়তায় আবার দিন ফিরতে শুরু করেছে তার ব্যবসার। একটু ভেতরের দোকান ক্রিয়েটিভ কালেকশনের হাজেরা খাতুন জানালেন, পাটপণ্যের অনেক লেডিস ও জেন্টস আইটেম মেলায় এনেছেন তারা। এগুলো একদিকে দামে কম, অন্যদিকে মজবুত। এর মধ্যে রয়েছে আধুনিক ডিজাইনের লেডিস ব্যাগ, ল্যাপটপ ব্যাগ, জুতা, হাতের কাজ করা বালিশ কভার, বেড কভার, দেয়ালের পর্দা ইত্যাদি। পাশের দোকান জোটেক্সকো নিয়ে এসেছে মানিব্যাগ, ঘরের শোভা বর্ধনকারী অনেক পণ্য। হস্তশিল্পসহ বৈচিত্র্যময় পাটপণ্যের জন্য বিখ্যাত 'প্রকৃতিতে' পাওয়া যাবে প্রায় ৫ হাজার রকমের পণ্য।