শিরোনাম

South east bank ad

কাজে ফিরলেও শ্রমিক ছাটাই চলছে আশুলিয়ায়

 প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

কাজে ফিরলেও শ্রমিক ছাটাই চলছে আশুলিয়ায়
সাভারের আশুলিয়ায় গত দুই সপ্তাহ ধরে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চলমান আন্দোলনে ছয় দিন বন্ধ থাকার পর কর্মচঞ্চলতা ফিরেছে শিল্পাঞ্চল এলাকায়। তবে শ্রমিক আন্দোলনের উস্কানির অভিযোগে এখনও বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি শ্রমিককে ছাটাই করার নোটিশ টানানো হয়েছে এসব কারখানার প্রধান ফটকে।
বিজিএমইএ-এর ঘোষণার পর গতকাল সেমাবার থেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে কারখানায় ফিরছেন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকালেও শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের দল বেধে কারখানায় এসে কাজে যোগ দিতে দেখা গেছে। তবে এসময় আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার সেড ফ্যাশন নামে একটি পোশাক কারখানায় শিল্পাঞ্চলে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে ২২৬ জন শ্রমিক ছাটায়ের নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়। ছাটাই করা শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে এসে এসময় কারখানার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ নিয়ে একই অভিযোগে শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন কারখানার ১৫৪৫ জন শ্রমিককে এ পর্যন্ত ছাটাই করা হয়েছে। বেরন এলাকার উইন্ডি গ্রুপের ১২১জন আশুলিয়া থানা সংলগ্ন ফাউন্টেইন কারখানার ১৩৫, নরসিংহপুর এলাকার হা-মীম গ্রুপের ৯৬জন, জামগড়া এলাকার দ্যা রোজ  গার্মেন্টের ২৩২ জন ও সর্বশেষ নরসিংহপুর এলাকার শারমিন গ্রুপের ১৪৩জন শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। সেড ফ্যাশন কারখানায় দুই বছর যাবৎ কাজ করছেন আমেনা নামে এক শ্রমিক। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন, ‘আন্দোলনে উস্কানির মিথ্যা অভিযোগে তাকে ছাটাই করা হয়েছে। গতকালও কারখানায় কাজে এসে সারাদিন গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। এখন কাজ না পেলে পরিবারকে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে তাকে।’ একই কারখানার স্যুইং অপারেটর জরিনা ও অপারেটর লাকী নামে সন্তান সম্ভবা দুই শ্রমিক জানান, ‘আর দুই মাস পরেই তাদের মাতৃত্বকালীন ছুটি পাওয়ার কথা ছিলো। এখন কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের বিনাদোষে ছাটাই করে সেই ছুটি ও পাওনা টাকা থেকে বঞ্চিত করছে। তারা আরও বলেন, ‘যদি মালিক আমাদের নাই রাখে, তাহলে আমাদের পাওনা বুঝিয়ে দিক। তাহলে আর অসুস্থ শরীর নিয়ে অর আমাদের কারখানার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। তবে শ্রমিক ছাটাইয়ের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কারখানার কোনো কর্মকর্তা। অপরদিকে দ্যা রোজ এন্ড ড্রেসেস গার্মেন্টের জেনারেল ম্যানেজার বলেন, গত পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার বিজিএমইএ-এর ঘোষণা অনুযায়ী বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া হলে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়। তবে আজ শ্রমিকদের উপস্থিতি একশ ভাগ পূরণ করেছে। বর্তমানে টার্গেট অনুযায়ী তাদের উৎপাদন কাজ পুরো দমে চলছে। এছাড়াও কারখানায় বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে শ্রমিকদের দেহতল্লাশি মাধ্যমে ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এদিকে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে কর্মচঞ্চলতা ফেরায় আপাতত নিরাপত্তা ব্যবস্থা শিথিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ-১ এর সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। তবে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান তিনি। শ্রমিক অসন্তোষের জেরে এ পর্যন্ত বাদী হয়ে পুলিশ দুইটি ও কারখানা মালিকরা পৃথক আটটি মামলা করেছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে নামে-বেনামে প্রায় দুই হাজার জনকে। আর এ ঘটনায় সাভার উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, শ্রমিক নেতা, রাজনৈতিক নেতা, ও সাংবাদিকসহ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: