চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন মাশুল কার্যকর, খরচ বাড়ল গড়ে ৪১%

চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন মাশুল কার্যকরের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এতে গড়ে ৪১ শতাংশ মাশুল বেড়েছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন চাপ হয়ে আসছে বলে মনে করেন তারা। এর মধ্যে কনটেইনার পরিবহনে মাশুল বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। বর্ধিত এ মাশুল রফতানিমুখী তৈরি পোশাক খাতের জন্য ‘অশনিসংকেত’ বলছেন এ শিল্পের উদ্যোক্তারা। গত রোববার গভীর রাতে জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গতকাল থেকে তা কার্যকর হয়েছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, কনটেইনার পরিবহনের মাশুলের ক্ষেত্রে আগে ২০ ফুট কনটেইনারপ্রতি গড়ে ১১ হাজার ৮৪৯ টাকা দিতে হতো, এখন গড়ে ১৬ হাজার ২৪৩ টাকা দিতে হবে। অর্থাৎ কনটেইনারপ্রতি খরচ বাড়ল গড়ে ৪ হাজার ৩৯৫ টাকা বা প্রায় ৩৭ শতাংশ। এর মধ্যে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর মাশুলই এক লাফে ৪৩ দশমিক ৪০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৮ ডলার।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, একসঙ্গে এতটা বাড়ানোয় দ্বিগুণ চাপ পড়বে আমদানি-রফতানিতে। কারণ কাঁচামাল আমদানির সময় এক দফা এবং প্রস্তুত পণ্য রফতানির সময় আরেক দফা মাশুল গুনতে হবে। বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সেলিম রহমান বলেন, ‘এতে তৈরি পোশাক খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমবে।’
অন্যদিকে সরকার বলছে, ১৯৮৬ সালের পর এবারই প্রথম বন্দরের মাশুল বাড়ানো হলো। তবু আশপাশের দেশগুলোর তুলনায় এখনো এ হার অনেক কম। শিপিং অ্যাসোসিয়েশনসহ ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ১০ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ানোর যৌক্তিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি আমলে না নিয়ে সরাসরি গড়ে ৪১ শতাংশ মাশুল বাড়ানোয় ক্ষোভ বাড়ছে।
সীকম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক বলেন, ‘একসঙ্গে এভাবে বাড়ানো হতবাক করার মতো। ধাপে ধাপে করা যেত।’
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের সমুদ্রপথে ৯৯ শতাংশ কনটেইনার পরিবহন হয়। ফলে নতুন মাশুল কার্যকরের প্রভাব পড়বে সরাসরি ভোক্তা ও রফতানিতে। ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, এতে একদিকে আমদানি পণ্যের দাম বাড়বে, অন্যদিকে রফতানিতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ।