শিরোনাম

South east bank ad

বিপন্ন মানুষের পাশে থাকা সিটি ব্যাংক একটি কর্মীও ছাটাই করবে না

 প্রকাশ: ১২ জুন ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ব্যাংক

কর্পোরেট গভর্নেন্স বজায় রাখার ক্ষেত্রে সুদৃঢ় ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে ‘আইসিএমএবি বেস্ট কর্পোরেট অ্যাওয়ার্ড ২০১৬’ স্বীকৃতি পাওয়া ব্যাংক হচ্ছে সিটি ব্যাংক । শীর্ষ স্থানীয় অর্থ ও বাণিজ্যবিষয়ক ম্যাগাজিন গ্লোবাল ফাইন্যান্স সিটি ব্যাংককে তিনবার বাংলাদেশের সেরা ডিজিটাল ইন্টারনেট ব্যাংক ২০১৭ পুরস্কার প্রদান করেছে। ইন্টারনেট ব্যাংকিং, প্ল্যাটফর্ম ‘সিটিটাচ’-এর মাধ্যমে ব্যাংকিংসেবা সহজতর ও আধুনিক করার স্বীকৃতি হিসেবে সিটি ব্যাংক এ সম্মাননা পেয়েছে। এর আগে সিটি ব্যাংককে ‘বাংলাদেশের সেরা ব্যাংক’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকাভিত্তিক আর্থিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্স। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুপারিশের ভিত্তিতে সিটি ব্যাংককে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক‘দেশের সেরা অনলাইন ব্যাংক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। উল্লেখ, সিটি ব্যাংক তার অপারেশনস্ ও আইটি বিভাগে বিশেষ উন্নয়নের জন্য আইএসও ৯০০১:২০০৪ সনদ প্রাপ্ত। একইসঙ্গে ব্যাংকটি তার নিরাপদ ও সুরক্ষিত আইটি পরিবেশ নিশ্চিত করার কারনে পিসিআই-ডিএসএস সার্টিফিকেশনে স্বীকৃত ব্যাংক। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে রোস্টার সিস্টেম ও ডিজিটাল ব্যাংকিং পদ্ধতিতে সেবা নিয়ে গ্রাহকের পাশে আছে সিটি ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির ১৩২টি শাখার মধ্যে মধ্যে রোস্টার সিস্টেমে শতাধিক শাখা ও ডিজিটাল মাধ্যমে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করেছে সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, করোনোর মতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বিকাশের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাও জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে সিটি ব্যাংকের ১০ লাখের অধিক এটিএম কার্ডধারী গ্রাহক আছেন। করোনা পরিস্থিতিতে তাদের জন্য কেনাকাটায় বিশেষ সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসরণ করে সাধারণ ছুটিতে কর্মকর্তাদের প্রণোদনা ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছে ব্যাংকটি। লকডাউন পরিস্থিতিতে যাতায়াতের সুবিধায় কর্মীদের জন্য বাহন সুবিধা দেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে ইএমআই পেমেন্ট নেওয়া স্থগিত রাখা হয়। তাতে গ্রাহকদের ক্রেডিট স্কোর কমছে না। যেকোনো ধরনের বিলের ক্ষেত্রে জরিমানা মওকুফ করা হয়েছে। সিটি ব্যাংক গ্রাহক সেবা দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সীমিত লোকবল নিয়ে গ্রাহকদের সেবা দিতে গিয়ে কর্মকর্তাদের অনেক সময় ভোর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিটি ব্যাংকের একজন মারা গেছেন। এছাড়া, করোনা উপসর্গ নিয়ে আরো কয়েকজন অসুস্থ রয়েছেন। তাদের চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। সরকার ঘোষিত স্টিমুলাস প্যাকেজ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে সিটি ব্যাংক। এর কারণে ব্যাংকের খরচ বেড়েছে, তবু সিটি ব্যাংক সেটি করে যাচ্ছে। ব্যাংকটির এক সূত্র জানায়, তহবিল স্থানান্তর ও অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে ইন্টারনেট ভিত্তিক কার্যক্রম আরো ত্বরান্বিত করা হয়েছে। ফলে ব্রাঞ্চে না গিয়েও ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও কল সেন্টারের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা নিতে সক্ষম হচ্ছেন ব্যাংকটির গ্রাহকরা। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গ্রাহক কিংবা কর্মী উভয়েরই স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ফেস মাস্ক পরা এবং শাখার প্রবেশদ্বারে ফুট-ট্রে ও হ্যান্ডওয়াশ স্টেশন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অফিসের ভিতরে অবস্থানকারী কর্মীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সেবা গ্রহণে সকল শাখায় গ্রাহকদের নির্ধারিত আসন এবং দাঁড়ানোর স্থানও চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকটি তার রিটেইল ও এসএমই গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধ তিন মাসের জন্য স্থগিত ও ক্রেডিট কার্ড হোল্ডারদের জন্য তিন মাসের জন্য বিলম্ব ফি মওকুফ করেছে। দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া বিপন্ন ও অসহায় পরিবারগুলির কাছে খাদ্য সাহায্য পৌঁছে দেয় সিটি ব্যাংক। সারাদেশে আটটি সেন্টারের মাধ্যমে ২০ হাজার দুঃস্থ পরিবারের প্রতিটির কাছে পৌঁছানো হচ্ছে ১০ কেজি চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী, যার মাধ্যমে আনুমানিক ১ লক্ষ মানুষের এক সপ্তাহের অন্ন সংস্থান হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, বগুড়া, নোয়াখালী, কুমিল্লা এবং টাঙ্গাইল জেলায় স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সহযোগিতায় এসব ত্রাণ সামগ্রী এখন সঠিক হাতে পৌঁছে দেয়ার কাজ চলছে। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক হাবিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ‘উত্তরণ’ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ১৩ জেলার ৩০০০ সুবিধাবঞ্চিত পরিবার সিটি ব্যাংকের এই সহযোগিতা পাচ্ছে এবং তার পাশাপাশি ডিএমপি-র ডিসি গুলশানের মাধ্যমে ২০০০ মধ্যবিত্ত পরিবার ও ডিসি রমনার মাধ্যমে হাজারীবাগ এলাকায় চামড়াশিল্পে জড়িত প্রায় ৫০০ কর্মহীন পরিবার ব্যাংকের এই ত্রাণ সামগ্রী পেতে যাচ্ছে। নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্ত্তোজার আহবানে সাড়া দিয়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় কর্মহীন পড়া শ্রমজীবি ও কর্মজীবীদের পাশে খাদ্য সহায়তা নিয়ে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের পাশে এসে দাঁড়ালো সিটি ব্যাংক লিমিটেড। নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক ১ হাজার মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে। দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানে কর্মী ছাটাই চলছে। সিটি ব্যাংক কর্মীদের সুরক্ষার কথা ভেবে করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার অংশ হিসেবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় ১৬ শতাংশ বেতন-ভাতা কমিয়েছে বেসরকারি খাতের দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড। বেতন কমানোর এই সিদ্ধান্ত চলতি বছরের ১ জুন থেকেই কার্যকর হবে। বহাল থাকবে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, মুনাফা করার জন্য নয়, চলমান পরিস্থিতিতে লোকসান ঠেকাতে কোনো কর্মীকে ছাঁটাই না করে ১৫ শতাংশের একটু বেশি বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে গত তিনমাস ধরে আমাদের সবধরণের ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রয়েছে। ঋণের সুদ ৯ শতাংশ করা এবং করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতি হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা বিল পরিশোধ করছেন না। আমরা মুনাফা করার জন্য নয়, লোকসান না করে টিকে থাকার জন্য প্রায় ১৬ শতাংশ বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই পরিস্থিতিতে আমরা কোনো কর্মীকে ছাঁটাই করতে চাই না। ১লাখ টাকা বেতনধারী কর্মকর্তার ১৫ হাজার টাকা বেতন কমলেও তিনি চলতে পারবেন। কিন্তু যদি চাকরি চলে যায় তাহলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমাদের কর্মীরা ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আগের সুযোগ-সুবিধা ফিরে পাবে। ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার এ প্রসঙ্গে বলেন যে, সিটি ব্যাংক সবসময় দেশের যে কোনো প্রাকৃতিক কিংবা মানবিক বিপর্যয়কালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, ভবিষ্যতেও দাঁড়াবে।
BBS cable ad

ব্যাংক এর আরও খবর: