শিরোনাম

South east bank ad

৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়নের অনুমোদন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

 প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ব্যাংক

৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়নের অনুমোদন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের


 


বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স ২০২৫ অনুযায়ী ৯টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ (লিকুইডেশন) করার অনুমোদন দিয়েছে। বোর্ডের অনুমোদন পাওয়ায় এখন এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা, লিকুইডেটর নিয়োগ, সম্পদ বিক্রি এবং পাওনাদারদের মধ্যে অর্থবণ্টন প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা যাবে। 


রবিবার গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ডসভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে সেগুলো হলো এফএএস ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কম্পানি, প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, আভিভা ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। বছরের পর বছর অনিয়ম, দুর্বল পরিচালনব্যবস্থা ও কেলেঙ্কারির কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৫২ শতাংশই এই ৯টি প্রতিষ্ঠানের, যার পরিমাণ ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে আটটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ঋণাত্মক ৯৫ টাকা, যা থেকে স্পষ্ট, সম্পদ বিক্রি করলেও সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের হাতে প্রায় কিছুই পৌঁছবে না।


এই প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ ছিল। মোট ১৫ হাজার ৩৭০ কোটি টাকার আমানত আটকে আছে। এর মধ্যে একক গ্রাহকের তিন হাজার ৫২৫ কোটি টাকা এবং ব্যাংক ও করপোরেট আমানত ১১ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি টাকা আটকে আছে পিপলস লিজিংয়ে, যেখানে একক আমানতকারীর আটকে আছে এক হাজার ৪০৫ কোটি টাকা।


এ ছাড়া আভিভা ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স ও এফএএস ফাইন্যান্সেও বিপুলসংখ্যক আমানত ফেরত পাওয়া যায়নি।

অনেক গ্রাহক মাসের পর মাস, কেউ কেউ বছরের পর বছর টাকা ফেরত পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। আভিভা ফাইন্যান্সের গ্রাহক খলিল আহমেদ খানের ২৩ লাখ টাকার আমানতের মেয়াদ পূর্ণ হলেও তিনি এখন পর্যন্ত মাত্র আট লাখ ৯৮ হাজার টাকা পেয়েছেন। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছেন তিনি; বাকি টাকা না পাওয়ায় তাঁর চিকিৎসা খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, লিকুইডেশন প্রক্রিয়া শুরুর আগেই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।


সরকার এ উদ্দেশ্যে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা ফেরতের মৌখিক অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘গ্রাহকদের আমানত রক্ষা করতেই প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করার পথে এগোচ্ছি। আমানত ফেরত দেওয়াই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতের দীর্ঘদিনের অস্বচ্ছতা, কম নজরদারি, সম্পদের ভুয়া হিসাব এবং অনিয়মের কারণে পুরো খাত আজ সংকটে পড়েছে। বছরের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০টি দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ‘লাল’ ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করেছিল। সেখান থেকে প্রথম ধাপে এই ৯টি প্রতিষ্ঠান লিকুইডেশনের আওতায় আনা হলো।

BBS cable ad

ব্যাংক এর আরও খবর: