তথ্য আপার সেবা পেয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অসহায় নারীরা
মোঃ জামাল হোসেন, (যশোর):
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প সুবিধার আওতায় সমাজের অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত নারীদের নিয়ে তথ্য আপার উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ (২২ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা তথ্য সেবা কেন্দ্রের আয়োজনে যশোরের বেনাপোল সীমান্তের পুটখালীর বালুন্ডা গ্রামে এ উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তথ্য সেবা নিতে গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক নারীরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা তথ্য সেবা কেন্দ্রের সহকারী (অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত) সেলিনা খাতুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর আলীফ রেজা। বিশেষ অতিথি উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আবুল হাসান, সমাজ সেবা কর্মকতা মোঃ তৈৗহিদুল ইসলাম, ইউনিয়ন সমাজকর্মী রবিউল ইসলাম, তথ্য সেবা সহকারী অতিরিক্ত তনুজা শারমিনসহ বিভিন্ন সরকারী সেবা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
বৈঠকে নারীদের অধিকার, চিকিৎসা সেবা, উদ্যোক্ততা তৈরী, তথ্য প্রযুক্তি, পরিবারের প্রতি কর্তব্য ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে নানান তথ্য সেবা পরামর্শ দেওয়া হয়। তথ্য সেবা পেয়ে বিভিন্ন ভাবে উপকৃত হচ্ছেন অসহায় নারীরা।
উপজেলা তথ্য কেন্দ্রের সহকারী তনুজা শারমিন জানান, তথ্য আপার মাধ্যমে উঠান বৈঠক করে অবহেলিত নারীদের সমস্যা শুনে তা সমাধান ও পাশে দাঁড়ানোর জন্য উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অবহিত করা হয়ে থাকে। এতে সেবা পেতে সুবিধা বঞ্চিতদের সহজ হচ্ছে। উঠান বৈঠকে আসা নারীদের বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা ও আসা, যাওয়ার খরচ ও আপ্যায়ন ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। তথ্য আপার সেবা বিষয়ে সকল দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন উপজেলা প্রশাসন।
সেবা নিতে আসা বালুন্ডা গ্রামের নারী বৃষ্টি বেগম বলেন, উঠান বৈঠকে এসে কিভাবে বসতবাড়ির পরিত্যক্ত জমিতে সবজি, পুকুরে মাছ ও বাড়িতে গবাদী পশু, হাঁস মুরগী পালন করে স্বাবলম্বী হওয়া যায় তা পরমর্শ দিয়েছেন তথ্য আপা কর্মীরা।
সেবা নিতে আসা আর এক নারী আছমা বেগম বলেন, পরিবারের বয়জ্যোষ্ঠদের প্রতি ভালবাসা, সন্তানদের সু-সন্তান করে গড়ে তোলা, সমাজের প্রতি একজন দায়িত্বশীল নাগরিকদের কর্তব্য ও আইনী অধিকারের প্রতিও নানান দিক বুঝিয়েছেন সেবা কর্মীরা। এতে তারা বিভিন্ন ভাবে উপকৃত হয়েছেন।
তথ্য সেবা নিতে আসা নারী মুসলিমা বেগম জানান, পরিবারের সহযোগিতা করতে তিনি বাড়িতে একটি গরুর খামার তৈরীর কথা ভাবেন। এসময় তথ্য সেবা কর্মীরা তাকে উদ্যোক্ততা তৈরী হতে নানা ভাবে সহযোগিতা করেছেন। এখন খাবার ভাল চলায় পরিবার অনেকটা স্বচ্ছল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা জানান, সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোর মানুষ যেমন অবহেলিত হয় তেমনি অনেকে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া সরকারের যে সেবা আছে তা না জানায় অনেকে সেবা বঞ্চিতও হয়। সরকারের শিক্ষা, চিকিৎসা ও প্রযুক্তিগত সেবা সম্পর্কে অবগত করতে কাজ করছে তথ্য আপা। এতে মানুষ যেমন উপকারিতা পাচ্ছে তেমনি সেবা পেতে তৃণমূল পর্যায়ে সরকাররে চেষ্টা দিন দিন সফলের দিকে যাচ্ছে।
উপজেলা তথ্য কেন্দ্রের সূত্র মতে, ২০২১ সালে শার্শা উপজেলাতে মোট ১০ হাজার ৩৮৫ জন সেবা গ্রহনের আবেদন করে সেবা নিয়েছেন ১১ হাজার ২২৫ জন। এর মধ্যে ডোর টু ডোর সেবার সংখ্যা ৮ হাজার ১২৮ জন ও তথ্য কেন্দ্রে এসে সেবা নিয়েছেন ২ হাজার ২৯০ জন। এছাড়া ২০টি উঠান বৈঠকে ৮০৭ জনকে তথ্য সেবা দেওয়া হয়েছে।