বইমেলা চলবে ১৭ মার্চ পর্যন্ত: প্রধানমন্ত্রী
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
জাতির পিতার জন্মদিন ১৭ মার্চ পর্যন্ত অমর একুশে বই মেলার মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সাংস্কৃতিক চর্চা বাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে বাংলা একাডেমি, স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, অতীতে দেশের প্রত্যেক জেলা বা মহকুমায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো, সাহিত্য চর্চা ও সাহিত্য সম্মেলন হতো। এখন সেই চর্চাটা অনেকটা কমে গেছে। এটাকে আবার চালু করা দরকার।
মঙ্গলবার বিকেলে অমর একুশের বই মেলা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি জেলার পাশাপাশি এখন উপজেলা পর্যায়েও শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকেও আপনারা যদি একটু উদ্যোগ নেন তাহলে বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা অনেক মেধাবী কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী আমরা পাব।
শেখ হাসিনা বলেন, এই ধরনের মেলা ও অনুষ্ঠানগুলো হলে যুব সমাজ ভিন্ন পথে যাবে না। তারা দেশ, বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্য এবং বাংলা সংস্কৃতির প্রতিও আন্তরিক থাকবে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সংস্কৃতি চর্চা বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের উদ্যোগ নেয়ারও প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে ফেব্রুয়ারি জুড়ে একমাস ব্যাপী বই মেলার আয়োজন করা হলেও এবার করোনা পরিস্থিতির জন্য মেলা একটু দেরিতে শুরু হলো। যেহেতু আমরা একমাসের জন্য করতাম কিন্তু আমরা এবার দেরিতে শুরু করেছি। তাই, এটা মনে হয় আমরা পুরো মাসই চালাতে পারি। যেহেতু আমাদের প্রকাশকদের পক্ষ থেকেও একটা দাবি এসেছে যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ পর্যন্ত এটা চলতে পারে।
করোনার কারণে এবারের বই মেলায় আসতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী তার শিক্ষা জীবনে দিনভর বই মেলায় ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতি স্মরণ করেন।
করোনাকালীন অনেক আপনজন এবং শ্রদ্ধাভাজনকে হারানোয় দুঃখ প্রকাশ করে এ পরিস্থিতির অচিচরেই উত্তরণ হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তবে, এখন যারা বই মেলায় আসবেন তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, এটা একান্তভাবে দরকার।
সরকারের টিকা কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আর আমরা এরই মধ্যে টিকা দিচ্ছি। বুস্টার ডোজও দেওয়া হচ্ছে। যারা নেননি অবশ্যই তাদের টিকা এবং বুস্টার ডোজ নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২১ প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ১৫ জন বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কার বিজয়ী প্রত্যেক ৩ লাখ টাকার চেক এবং ক্রেস্ট লাভ করেন।
বাংলা একাডেমির সভাপতি কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। আরো বক্তব্য রাখেন- বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন।
শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতের পরই অমর একুশের গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এরপরই ভাষা শহিদদের স্মরণে সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিটি নীরবতা পালন করেন।