শিরোনাম

South east bank ad

সনদ নিতে আসা মানুষের ভোগান্তি, লাঘবের দাবিতে স্মারক লিপি

 প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মোঃ রাজু খান, (ঝালকাঠি):

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, পাসপোর্ট, বিবাহনিবন্ধন, মৃত্যুসনদ, জমির নিবন্ধনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে জন্মসনদ প্রয়োজন হয়। কিন্তু ঝালকাঠিতে জন্মনিবন্ধন সংশোধনী ও নতুন সনদ নিতে আসা মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। সনদ পাওয়ার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে দিনের পর দিন মানুষকে বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিতে হচ্ছে।

দীর্ঘসুত্রতা, হয়রানি ও ভোগান্তি লাঘবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বরাবরে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। জেরা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. নাজমুল আলম। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগী জনগণের পক্ষে নলছিটি উপজেলার বালি তাইফুর রহমান তুর্য, এফ এইচ রিভান, আনিসুর রহমানসহ বেশ কয়েকজনে।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। তারা বলেন, কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে জন্ম নিবন্ধন সনদে ভুল তথ্য আপলোডের কারণে তা সংশোধন করতে নাগরিকদের হয়রানি হতে হচ্ছে এবং নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে ও পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেও পুনরায় তাদের জন্ম নিবন্ধন করাতে হচ্ছে যা অত্যন্ত ঝামেলা, ভোগান্তি ও হয়রানি। তাই এই ভোগান্তি কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠি পৌর কর্তৃপক্ষ ২০০৭ সাল থেকে নাগরিকদের হাতে লেখা পদ্ধতিতে জন্মনিবন্ধন প্রদান করে। ২০১২সালে অস্থায়ী কর্মীরা জন্মনিবন্ধনের তথ্য কম্পিউটারে সংরক্ষণ করতে গিয়ে প্রায় ৯৯ শতাংশে ভুল করেন। সেখানে কারও মা-বাবার নামে ভুল, কারও লৈঙ্গিক পরিচয়ে ভুল, আবার কারও নামের কিছু অক্ষরে ভুল রয়েছে।

তাই প্রতিদিন ঝালকাঠি পৌরসভার মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগে শত শত জন্মনিবন্ধনের সংশোধনী ও নতুন সনদের আবেদন পড়ছে। প্রতি সোম ও বুধবার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালকের দপ্তরে সংশোধনী আবেদনের শুনানি হয়। প্রতি সপ্তাহে শতাধিক আবেদন নিষ্পত্তি হয়। গত একবছরে প্রায় ৬০ হাজার আবেদন পড়েছে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জন্মনিবন্ধন সংশোধন বা নতুন সনদ নিতে হলে প্রথমে কোনো কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে ১০০ থেকে দেড়শ টাকা দিয়ে আবেদন করতে হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র ও পৌর মেয়রের অনুমোদন নিয়ে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগে দাখিল করতে হয়। সেখানে কয়েক ধাপে তথ্য যাচাইবাছাই করা হয়। চুড়ান্ত অনুমোদনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালকের কাছে পাঠানো হয় শুনানির জন্য। শুনানী শেষে তাঁর স্বাক্ষর হলে যেতে হয় পৌরসভার নিবন্ধন শাখায়।

সেখান থেকে প্রিন্ট করে নির্ধারিত ফি দিয়ে মেয়র, সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর, সচিবের স্বাক্ষর নিতে হয়। এর মধ্যে ভুল ধরা পড়লে আবার সংশোধনের আবেদন করতে হয়। ২০২১সালের জানুয়ারি মাস থেকে জন্মনিবন্ধন সংশোধন বা নতুন সনদ পেতে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে। এসব শর্ত পূরণ করতে গিয়ে সেবাপ্রার্থীরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।

সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় স্থানীয় সরকার বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, নতুন নিবন্ধন ও সংশোধনীর জন্য মানুষ ভিড় করছেন। অনেকে শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। কেউ নতুন আবেদন জমা দিচ্ছেন। আবার পৌরসভার জন্মনিবন্ধন শাখায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সংশোধন হয়ে আসা নিবন্ধনগুলো প্রিন্ট করে মেয়র–-কাউন্সিলরদের স্বাক্ষরের জন্য অপেক্ষা করছেন সেবাপ্রার্থীরা।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগে নিবন্ধনের ভুল সংশোধন করতে আসা শহরের ফরিদপুরপট্টি এলাকার হেনোয়ারা বেগম বলেন, ‘ছেলের বিদেশে লেখাপড়ার জন্য ভিসা নিতে জন্মনিবন্ধন ইংরেজিতে প্রয়োজন, তাই আবেদন করেছি। কিন্তু আমার জেন্ডারের জায়গায় পুরুষ লেখা হয়েছে। তাই সংশোধনীর জন্য আবার আবেদন করেছি। ১৫দিন পরে শুনানির তারিখ পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।’

ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার বলেন, ‘জন্মনিবন্ধনের সংশোধনী ও নতুন সনদ নিতে হলে স্থানীয় সরকার বিভাগে আবেদন করতে হয়। আমাদের হাতে কিছু নেই। তবে সব কাজ সম্পন্ন হয়ে এলে আমরা যত দ্রুত সম্ভব সনদ দিয়ে দিই।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কামাল হোসেন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সব ধরনের প্রমাণপত্র দিয়ে জন্মনিবন্ধনের সনদ ও সংশোধনী করতে হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে সব ধরনের আবেদন তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তি করে দেয়া হয়।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: